সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়ে তা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে দাবি জানিয়েছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। এ প্রাকবাজেট আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট অব বালাদেশের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারসের (পিডব্লিউসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মামুনুর রশীদ।
এছাড়া এনবিআরের চার সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে হলে মনিটরিং পলিসি’র সাপোর্ট দরকার। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান আরো ৫ শতাংশ করা। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়ে তা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ‘ট্রান্সফার প্রাইজিং’-এর মাধ্যমে অর্থপাচার করছে, তা দ্রুতই রোধ করতে হবে।
শেয়ার বাজারকে শক্তিশালী করতে বাজেট ইয়ারি সহায়তা করতে হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য বাজেটে করপোরেট কর কমাতে হবে। আলোচনা সভায় ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থবছরে করপোরেট করহার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগামীতেও এটি ২ শতাংশ কমিয়ে আনা উচিত। এভাবে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ৫ বছরের মধ্যে করপোরেট কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এছাড়াও বিভিন্নখাতে কর আদায়ে বৈষম্য রয়েছে। মোবাইল কোম্পানির ক্ষেত্রে করের হার ৪৫ শতাংশ। এতে এখাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, দেশে করপোরেট কর বেশি। তাই এই কর কমানোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনিও এ বিষয়ে কিছু চিন্তাভাবনা করছেন। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর আরও কীভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে পুঁজিবাজারে প্রণোদনা দিতে কর কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন কোম্পানির শেয়ার অফলোড এবং কর অব্যাহতি সুবিধা কিভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পেতে পারেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
পিডব্লিউসির কান্ট্রি ডিরেক্টর মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এ মুহূর্তে বিনিয়োগের মহাযজ্ঞ দরকার। এতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বিনিয়োগে সমন্বয় ঘটবে। কর্মসংস্থান বাড়বে, অর্থনীতিতে ভারসাম্য তৈরি হবে। ব্যবসায়ীরা যেন অর্থের পুনঃবিনিয়োগ করতে পারে, সে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।’

























