উপকূলীয় জেলা বরগুনায় বেড়েছে চিনা বাদামের চাষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশায় চিনা বাদাম আবাদ করছেন চাষিরা। বর্তমানে কৃষকের উৎপাদিত চিনা বাদাম স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে এবং পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় এখানকার চিনা বাদাম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এই মৌসুমে বরগুনা সদর উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৬ নম্বর বুড়ির চর, ১ নম্বর বদরখালী, এম বালিয়াতলী, ৩ নম্বর ফুলঝুড়ি, ৪ নম্বর কেওড়া বুনিয়া, ৮ নম্বর সদর ইউনিয়ন চাষ হয়েছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া ২০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ বেড়েছে। বাদাম চাষি ফোরকান বলেন, ৫ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। ১ মাস আগে ফসল ঘরে তুলেছি।
এখন বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে এসে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। খরচ বাদ দিয়ে ৩১ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। বাদামের পাইকারি বিক্রেতা রফিকুল ফকির বলেন, আমরা কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে বাদাম কিনে বরগুনাসহ আরও ১৬টি পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে থাকি। এ জেলার বাদামের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তার মধ্য উল্লেখযোগ্য হলো- আকারে ছোট, সুস্বাদু মিষ্টি প্রকৃতির এবং উপরের আবরণ পাতল এবং গুণগত মান অনেক ভালো হওয়ায় এর চাহিদা তুলনামূলক অনেক বেশি। ফুলঝুড়ি ইউনিয়নে গিলাতলি গ্রামের চাষি ইয়াকুব বলেন, ১ মাস আগে চিনা বাদাম ঘরে তুলেছি। এখন দাম বেশি থাকায় বাজারে বিক্রি করছি।
বাদামের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে কারণ বিভিন্ন জেলায় এই অঞ্চলের সুস্বাদু বাদাম চড়া দামে বিক্রি হয়। বেশি দামে বিক্রি হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দেখতে সুন্দর, আকারের ছোট, সহজেই হাতে নিয়ে খাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এটির ছোলা পাতল এবং গুণগত মান অনেক ভালো বিদায়ের চাহিদা অনেক বেশি। বাদাম চাষি হানিফ বলেন, বৃষ্টির পানিতে বাদাম পরিপক্ক হওয়ার আগেই জমি থেকে তুলতে হয়েছে। তবে এ বছর বাদামের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় বিগত কয়েক বছরের চেয়ে লাভ বেশি হয়েছে।
আশা করি আগামী বছর একটু বেশি জমিতে বাদাম চাষ করবো। কৃষি অফিসের পরামর্শ পেয়ে আমরা ভালো ফসল ফলাতে সক্ষম হয়েছে। বেশি জমিতে বাদাম চাষ করলে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই জেলার বাদামের উল্লেখযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে দেশ ও বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমার কৃষকের কারিগরি পরামর্শ ও সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। চিনা বাদামের দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে।