০৬:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নার্সিং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ০৬ সদস্য গ্রেফতার

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব-১০ এর আওতাধীন সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিনিয়ত।সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত বেশ কয়েকটি প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রকে আইনের আওতায় এনে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‍্যাব-১০।দেশে যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস এর মত ঘৃনিত সংস্কৃতির প্রচলন শুরু হয় র‍্যাবই সর্বপ্রথম প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত প্রতারকদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। ইতোপূর্বে প্রতারক চক্রগুলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতারণা করেছে।

পরবর্তীতে র‍্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় এই চক্রগুলো কোনঠাসা হয়ে পড়ে। গত ১৯ মে ২০২২ তারিখে হিডেন স্পাই ওয়্যারলেস কিট ব্যবহার করে সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণের নিশ্চয়তা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া সিন্ডিকেটের মূলহোতা ইকবাল ও তার অন্যতম ০৩ সহযোগীকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১০।

এসকল অসাধু, চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারি করে আসছে। গত ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ১ম বর্ষ ফাইনাল বিএসসি ইন নার্সিং (পোস্ট বেসিক) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বেই আদান প্রদান করার প্রমান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখ পরীক্ষা শুরুর পূর্বে একটি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি ও সাদা কাগজে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের ছবি উদ্ধার করে। ফলশ্রুতিতে র‍্যাব প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১০ এর অভিযানে রাজধানীর মহাখালী, ধানমন্ডি ও আজিমপুর এলাকা হতে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূলহোতা (১) ফরিদা খাতুন (৫১)মোছাঃ মনোয়ারা খাতুন (৫২)মোসাঃ নার্গিস পারভীন (৪৭)মোছাঃ কোহিনুর বেগম (৬৫)মোঃ ইসমাইল হোসেন(৩৮)মোঃ আরিফুল ইসলাম (৩৭)দেরকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের কপি এবং ০৯টি মোবাইল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বমোট ৯৮টি নার্সিং কলেজ এর মধ্যে বর্তমানে ৩৮টি কলেজে পরীক্ষা চলমান। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ০২ জন প্রশ্ন প্রণয়নকারী নিয়োগ দেওয়া হয় যারা দুই সেট আলাদা প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে থাকেন। পরবর্তীতে এই প্রশ্নপত্রগুলোকে যাচাই-বাচাই করার জন্য একটি মডারেটর টিম নিয়োগ করা হয়।

যাদের কাজ হচ্ছে প্রশ্নপত্রগুলো থেকে পরীক্ষার জন্য এক সেট পরিপূর্ণ প্রশ্নপত্র তৈরি করে সেগুলো সিলগালার মাধ্যমে চিকিৎসা অনুষদের ডিনের কাছে জমা দেয়া। পরবর্তীতে চিকিৎসা অনুষদের ডিন বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রশ্নপত্র সরবরাহের জন্য ০৪ সদস্যদের একটি গোপনীয় টিম নিয়োগ করে থাকেন যারা নির্বাচিত প্রশ্নপত্রটি প্রিন্টিং এবং প্যাকিংয়ে নিযুক্ত থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী প্রশ্নপত্রগুলো প্রিন্ট করে আলাদা আলাদা প্যাকিং করে তার উপরে কেন্দ্রের নাম লিখে সিলগালা করে দেন।পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই প্রশ্নপত্রগুলো বিভিন্ন কেন্দ্রে বিতরণ করে থাকেন।জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত ফরিদা খাতুন। তিনি রাজধানী গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

জনপ্রিয়

বিসিবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা

নার্সিং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ০৬ সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত : ০২:৫৮:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০২২

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব-১০ এর আওতাধীন সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিনিয়ত।সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত বেশ কয়েকটি প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রকে আইনের আওতায় এনে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‍্যাব-১০।দেশে যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস এর মত ঘৃনিত সংস্কৃতির প্রচলন শুরু হয় র‍্যাবই সর্বপ্রথম প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত প্রতারকদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। ইতোপূর্বে প্রতারক চক্রগুলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতারণা করেছে।

পরবর্তীতে র‍্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় এই চক্রগুলো কোনঠাসা হয়ে পড়ে। গত ১৯ মে ২০২২ তারিখে হিডেন স্পাই ওয়্যারলেস কিট ব্যবহার করে সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণের নিশ্চয়তা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া সিন্ডিকেটের মূলহোতা ইকবাল ও তার অন্যতম ০৩ সহযোগীকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১০।

এসকল অসাধু, চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারি করে আসছে। গত ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ১ম বর্ষ ফাইনাল বিএসসি ইন নার্সিং (পোস্ট বেসিক) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বেই আদান প্রদান করার প্রমান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখ পরীক্ষা শুরুর পূর্বে একটি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি ও সাদা কাগজে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের ছবি উদ্ধার করে। ফলশ্রুতিতে র‍্যাব প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১০ এর অভিযানে রাজধানীর মহাখালী, ধানমন্ডি ও আজিমপুর এলাকা হতে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূলহোতা (১) ফরিদা খাতুন (৫১)মোছাঃ মনোয়ারা খাতুন (৫২)মোসাঃ নার্গিস পারভীন (৪৭)মোছাঃ কোহিনুর বেগম (৬৫)মোঃ ইসমাইল হোসেন(৩৮)মোঃ আরিফুল ইসলাম (৩৭)দেরকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের কপি এবং ০৯টি মোবাইল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বমোট ৯৮টি নার্সিং কলেজ এর মধ্যে বর্তমানে ৩৮টি কলেজে পরীক্ষা চলমান। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ০২ জন প্রশ্ন প্রণয়নকারী নিয়োগ দেওয়া হয় যারা দুই সেট আলাদা প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে থাকেন। পরবর্তীতে এই প্রশ্নপত্রগুলোকে যাচাই-বাচাই করার জন্য একটি মডারেটর টিম নিয়োগ করা হয়।

যাদের কাজ হচ্ছে প্রশ্নপত্রগুলো থেকে পরীক্ষার জন্য এক সেট পরিপূর্ণ প্রশ্নপত্র তৈরি করে সেগুলো সিলগালার মাধ্যমে চিকিৎসা অনুষদের ডিনের কাছে জমা দেয়া। পরবর্তীতে চিকিৎসা অনুষদের ডিন বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রশ্নপত্র সরবরাহের জন্য ০৪ সদস্যদের একটি গোপনীয় টিম নিয়োগ করে থাকেন যারা নির্বাচিত প্রশ্নপত্রটি প্রিন্টিং এবং প্যাকিংয়ে নিযুক্ত থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী প্রশ্নপত্রগুলো প্রিন্ট করে আলাদা আলাদা প্যাকিং করে তার উপরে কেন্দ্রের নাম লিখে সিলগালা করে দেন।পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই প্রশ্নপত্রগুলো বিভিন্ন কেন্দ্রে বিতরণ করে থাকেন।জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত ফরিদা খাতুন। তিনি রাজধানী গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব