০৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রতারনায় গ্রেফতার ৪

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ব্যবসায় বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতকারী প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গত ২৮ অক্টোবর ২২ ইং মোহাম্মদপুর থানাধীন পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি ও কলাবাগান থানাধীন বশিরউদ্দিন রোড এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,মোঃ হায়দার আলী (৬৪) মোঃ রেজাউল করিম (৩৭) মোঃ নাসির উদ্দিন (৪৯) ও মোঃ আব্দুল কাদের (৫৬)গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে নগদ ২০,০৩,০০০/- (বিশ লক্ষ তিন হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়।

গত ০৯ অক্টোবর ২০২২ ইং ভিকটিম অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবকে প্রতারক চক্রের ১ জন ফোন করে নিজেকে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ড রিসাইক্লিং পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবকে তাদের প্রজেক্টে কনসালটেন্ট পদে চাকুরির প্রস্তাব দেয়। এ সংক্রান্তে আলোচনার জন্য তিনি গত ১৬ অক্টোবর ২২ ইং প্রতারকদের দেওয়া ঠিকানা মোতাবেক মিরপুর মডেল থানাধীন মধ্য পীরেরবাগে অবস্থিত একটি অফিসে যান। সেখানে ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত মোঃ হায়দার আলীর পরিচয় হয় এবং কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে গত ১৭ অক্টোবর ২০২২ ইং তিনি বায়োডাটা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উক্ত অফিসে উপস্থিত হলে প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দেখা হয়। এ সময়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা শুরু করে। চক্রের ১ সদস্য নিজেকে ইমপোর্টারের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেয়।

সে অন্যান্য সদস্যদের জানায়,তার একজন ভারতীয় বস ১৬,০০,০০,০০০/- (ষোল কোটি) টাকার চশমা, হাতঘড়ি, ক্যামেরা ক্রয় করবে। উক্ত চশমা, হাতঘড়ি, ক্যামেরা ইমপোর্ট করে ভারতীয় বসকে সরবরাহ করলে ৩০% লাভ হবে। উক্ত মালের নমুনা সংগ্রহ করে ভারতীয় বসকে দেখাতে হবে যার জন্য ৭৫,০০,০০০/- (পঁচাত্তর লক্ষ) টাকা লাগবে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে উক্ত ব্যবসায় শেয়ারে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম প্রথমে রাজী না হলেও প্রতারকদের প্রলোভনের কারণে তিনি উক্ত ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রহী হন। গত ১৯ অক্টোবর ২২ ইং প্রতারকদের কথা মতো ৫,০০০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানায় নমুনা সংগ্রহ করে ভারতীয় বসকে দেখানো হয়েছে এবং নমুনা পছন্দ করেছে। গত ২০ অক্টোবর ২০২২ খ্রিঃ তারিখে ভিকটিম প্রতারকদের অফিসে যান এবং দেখতে পান ভারতীয় বস তাদেরকে ৩০% অগ্রীম বাবদ ৪,৮০,০০,০০০/- (চার কোটি আশি লক্ষ) টাকার চেক প্রদান করেন । প্রতারকরা ভিকটিমকে জানায় তারা ইমপোর্টারকে ৩০% অর্থাৎ ৪,৮০,০০,০০০/- (চার কোটি আশি লক্ষ) টাকা দিতে চাইলে ইমপোর্টার পুরো টাকা অর্থাৎ ১৬,০০,০০,০০০/- (ষোল কোটি) টাকা পরিশোধ না করলে মালামাল দিবেন না। উল্লেখিত মালামাল ক্রয় করার জন্য প্রতারকরা ভিকটিমকে আরো ৫০,০০,০০০/- (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা দিতে বলেন ।একপর্যায়ে ভিকটিম তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা একইভাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে প্রতারিত করে ২৭,৫০,০০০/- (সাতাশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অফিস সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের টাকা আত্মসাৎ করে থাকে । প্রতারকরা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং বয়োবৃদ্ধ লোকদের টার্গেট করে প্রতারণা করে আসছে।

এ সংক্রান্তে মোহাম্মদপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে আছে এবং প্রতারক চক্রের অন্যান্য পলাতক সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।ডিএমপি’র গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মানস কুমার পোদ্দার, পিপিএম বার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিরপুর জোনাল টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রতারনায় গ্রেফতার ৪

প্রকাশিত : ০৩:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ব্যবসায় বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতকারী প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গত ২৮ অক্টোবর ২২ ইং মোহাম্মদপুর থানাধীন পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি ও কলাবাগান থানাধীন বশিরউদ্দিন রোড এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,মোঃ হায়দার আলী (৬৪) মোঃ রেজাউল করিম (৩৭) মোঃ নাসির উদ্দিন (৪৯) ও মোঃ আব্দুল কাদের (৫৬)গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে নগদ ২০,০৩,০০০/- (বিশ লক্ষ তিন হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়।

গত ০৯ অক্টোবর ২০২২ ইং ভিকটিম অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবকে প্রতারক চক্রের ১ জন ফোন করে নিজেকে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ড রিসাইক্লিং পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবকে তাদের প্রজেক্টে কনসালটেন্ট পদে চাকুরির প্রস্তাব দেয়। এ সংক্রান্তে আলোচনার জন্য তিনি গত ১৬ অক্টোবর ২২ ইং প্রতারকদের দেওয়া ঠিকানা মোতাবেক মিরপুর মডেল থানাধীন মধ্য পীরেরবাগে অবস্থিত একটি অফিসে যান। সেখানে ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত মোঃ হায়দার আলীর পরিচয় হয় এবং কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে গত ১৭ অক্টোবর ২০২২ ইং তিনি বায়োডাটা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উক্ত অফিসে উপস্থিত হলে প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দেখা হয়। এ সময়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা শুরু করে। চক্রের ১ সদস্য নিজেকে ইমপোর্টারের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেয়।

সে অন্যান্য সদস্যদের জানায়,তার একজন ভারতীয় বস ১৬,০০,০০,০০০/- (ষোল কোটি) টাকার চশমা, হাতঘড়ি, ক্যামেরা ক্রয় করবে। উক্ত চশমা, হাতঘড়ি, ক্যামেরা ইমপোর্ট করে ভারতীয় বসকে সরবরাহ করলে ৩০% লাভ হবে। উক্ত মালের নমুনা সংগ্রহ করে ভারতীয় বসকে দেখাতে হবে যার জন্য ৭৫,০০,০০০/- (পঁচাত্তর লক্ষ) টাকা লাগবে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে উক্ত ব্যবসায় শেয়ারে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম প্রথমে রাজী না হলেও প্রতারকদের প্রলোভনের কারণে তিনি উক্ত ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রহী হন। গত ১৯ অক্টোবর ২২ ইং প্রতারকদের কথা মতো ৫,০০০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানায় নমুনা সংগ্রহ করে ভারতীয় বসকে দেখানো হয়েছে এবং নমুনা পছন্দ করেছে। গত ২০ অক্টোবর ২০২২ খ্রিঃ তারিখে ভিকটিম প্রতারকদের অফিসে যান এবং দেখতে পান ভারতীয় বস তাদেরকে ৩০% অগ্রীম বাবদ ৪,৮০,০০,০০০/- (চার কোটি আশি লক্ষ) টাকার চেক প্রদান করেন । প্রতারকরা ভিকটিমকে জানায় তারা ইমপোর্টারকে ৩০% অর্থাৎ ৪,৮০,০০,০০০/- (চার কোটি আশি লক্ষ) টাকা দিতে চাইলে ইমপোর্টার পুরো টাকা অর্থাৎ ১৬,০০,০০,০০০/- (ষোল কোটি) টাকা পরিশোধ না করলে মালামাল দিবেন না। উল্লেখিত মালামাল ক্রয় করার জন্য প্রতারকরা ভিকটিমকে আরো ৫০,০০,০০০/- (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা দিতে বলেন ।একপর্যায়ে ভিকটিম তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা একইভাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে প্রতারিত করে ২৭,৫০,০০০/- (সাতাশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অফিস সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের টাকা আত্মসাৎ করে থাকে । প্রতারকরা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং বয়োবৃদ্ধ লোকদের টার্গেট করে প্রতারণা করে আসছে।

এ সংক্রান্তে মোহাম্মদপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে আছে এবং প্রতারক চক্রের অন্যান্য পলাতক সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।ডিএমপি’র গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মানস কুমার পোদ্দার, পিপিএম বার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিরপুর জোনাল টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব