০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধের দাবীতে কারাগারের সামনে বিক্ষোভ

ইরান ইতোমধ্যে চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। আরও দুই প্রতিবাদকারীকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এমন খবরের পর একদল বেসামরিক নাগরিক দেশটির একটি কারাগারের সামনে রাতভর বিক্ষোভ করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বরে নিতি পুলিশ হেফাজতে কুর্দি কিশোরী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরান জুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা অনেকাংশে প্রশমিত হয়েছে। সে সময় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো ছাড়াও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা বা গুরুতর জখম করা এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মতো অভিযোগের সম্মুখীন ব্যক্তিদের আদালতে বিচার করা হচ্ছে। তাদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা তাড়াহুড়ো করে এই রায়কে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে। অনেকে এটা বন্ধ করার জন্য ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন। কিন্তু তা পাত্তা না দিয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বর থেকে সাজা কার্যকর করা শুরু করে।

ইতোমধ্যেই চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কারাজ শহরের রাজাই শাহ কারাগারে আরও দুই প্রতিবাদকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে লোকেরা কারাগারের সামনে জড়ো হয়েছিল এবং তাদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেয়।

ইরানের কিছু সরকারবিরোধী কর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্ষোভের বেশ কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে তাদের একজন মোহাম্মদ গুবদলু। তার মা কারাগারের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। পূর্বে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে দুই প্রতিবাদকারী, মোহসেন শেখারি ও মজিদ রেজা রেহনাভার্ডকে ডিসেম্বরের শুরুতে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। তাদের দুজনেরই বয়স ছিল ২৩ বছর।

মোহসেনের বিরুদ্ধে গত সেপ্টেম্বরে তেহরানের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করার সময় একটি বড় ছুরি দিয়ে আধাসামরিক বাহিনীর একজন সদস্যকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ ছিল। আর মজিদ রেজাকে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

আর গত শনিবার (৭ জানুয়ারি) ফাঁসি হওয়া দুইজন হলেন মোহাম্মদ মাহদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনী। বিক্ষোভ চলাকালে ইরানের আধাসামরিক বাহিনীর একজন সদস্যকে হত্যার দায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

২২ বছর বয়সী মাহশা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশ হেফাজতে মারা যান যখন তিনি নারীদের জন্য ইরানের কঠোর পোশাক কোড অনুসরণ না করার জন্য গ্রেপ্তার হন, তার দাফনের পর থেকে তার শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যা কয়েকদিনের মধ্যে ইরানজুড়ে ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের রূপ নয়।

হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি এইচআরএএনএ দাবি করেছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৫১৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭০ জন শিশু। সংগঠনটির দাবি, আরও ১৯ হাজার ২৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৮ সদস্য নিহত হয়েছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধের দাবীতে কারাগারের সামনে বিক্ষোভ

প্রকাশিত : ১১:৫২:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

ইরান ইতোমধ্যে চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। আরও দুই প্রতিবাদকারীকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এমন খবরের পর একদল বেসামরিক নাগরিক দেশটির একটি কারাগারের সামনে রাতভর বিক্ষোভ করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বরে নিতি পুলিশ হেফাজতে কুর্দি কিশোরী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরান জুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা অনেকাংশে প্রশমিত হয়েছে। সে সময় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো ছাড়াও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা বা গুরুতর জখম করা এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মতো অভিযোগের সম্মুখীন ব্যক্তিদের আদালতে বিচার করা হচ্ছে। তাদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা তাড়াহুড়ো করে এই রায়কে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে। অনেকে এটা বন্ধ করার জন্য ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন। কিন্তু তা পাত্তা না দিয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বর থেকে সাজা কার্যকর করা শুরু করে।

ইতোমধ্যেই চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কারাজ শহরের রাজাই শাহ কারাগারে আরও দুই প্রতিবাদকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে লোকেরা কারাগারের সামনে জড়ো হয়েছিল এবং তাদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেয়।

ইরানের কিছু সরকারবিরোধী কর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্ষোভের বেশ কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে তাদের একজন মোহাম্মদ গুবদলু। তার মা কারাগারের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। পূর্বে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে দুই প্রতিবাদকারী, মোহসেন শেখারি ও মজিদ রেজা রেহনাভার্ডকে ডিসেম্বরের শুরুতে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। তাদের দুজনেরই বয়স ছিল ২৩ বছর।

মোহসেনের বিরুদ্ধে গত সেপ্টেম্বরে তেহরানের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করার সময় একটি বড় ছুরি দিয়ে আধাসামরিক বাহিনীর একজন সদস্যকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ ছিল। আর মজিদ রেজাকে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

আর গত শনিবার (৭ জানুয়ারি) ফাঁসি হওয়া দুইজন হলেন মোহাম্মদ মাহদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনী। বিক্ষোভ চলাকালে ইরানের আধাসামরিক বাহিনীর একজন সদস্যকে হত্যার দায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

২২ বছর বয়সী মাহশা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশ হেফাজতে মারা যান যখন তিনি নারীদের জন্য ইরানের কঠোর পোশাক কোড অনুসরণ না করার জন্য গ্রেপ্তার হন, তার দাফনের পর থেকে তার শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যা কয়েকদিনের মধ্যে ইরানজুড়ে ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের রূপ নয়।

হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি এইচআরএএনএ দাবি করেছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৫১৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭০ জন শিশু। সংগঠনটির দাবি, আরও ১৯ হাজার ২৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৮ সদস্য নিহত হয়েছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব