১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

পুঁজিবাজারে চীনা বিনিয়োগ ও ভুল ধারণা

টানা নাটকীয়তা চীনের সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে (জোট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হওয়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চীনা জোটের এ বিনিয়োগ নিয়ে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারী অনেকের মধ্যেই রয়েছে ভুল ধারণা। অনেকে তো এর মানেই বোঝেন নাই যে, চীন কি কিনলো? আবার অনেকের ধারনা শেয়ার বাজারের ইন্ডেক্স ২০ হাজার হয়ে যাবে। আবার অনেকের ধারনা সব শেয়ার তিন চার গুন হয়ে যাবে। অনেকে এটা ও ভাবছেন যে, চীন সব শেয়ার কিনে নেবে, এই দেশের বাজারে আর কোন শেয়ারই পাওয়া যাবে না ! আসলে, সেরকম কিছুই না। সাধারন ভাবে বিষয়টা বোঝানোর চেস্টা করছি- ধরুন, একজন বিদেশী আপনার এলাকার একটা বাজারের ২৫% মালিকানা কিনেছে।

তবে সে কিন্তু বাজারের ২৫% মাল কিনে নাই। কিনবে, এরকম কোন কমিটমেন্ট ও করে নাই। সে বাজারের মালিক। এই বাজারের হাজারো লোকজন আসবে। কেনাবেচা করবে। মাছ, সবজি, মুরগী, বিক্রি করবে। সেই বিদেশীসহ বাজারের বাকি মালিকরা সেখান থেকে ভাড়া ও কমিশন পাবে। তবে মাছ বা সবজি কিন্তু বিদেশি কিনবে না। তবে, এখানে একটা ব্যাপার আছে ! যখন একজন বিদেশী, একটা মাছ বাজারের মালিক। তখন আশেপাশে যে কয়জন বিদেশী ক্রেতা বা বিক্রেতা আছে, তারা চাইবে এখানেই বাজার সদাই করতে। কারন, কোন ঝামেলা বা পচা মাল গছায়া দিলে তার স্বদেশী লোকের কাছে এর জবাব চাইতে পারে। অথবা কোন মাছ বা মুরগী কেনার আগে যেন স্বদেশি লোকের কাছ থেকে পরামর্শ পায়। আর সেই বিদেশী মালিক ও চাইবে, বাজারে আরো দোকান পাট বসাতে বা নতুন নতুন মাল পত্র আনতে। যেন কেনাবেচা বেশি হয়। চীন সব শেয়ার কিনে নেবে, ইন্ডেক্স ২০ হাজার যাবে, এরকম স্বপ্ন কেউ দেইখেন না। তারা বাজার কিনেছে। শেয়ার না। এই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।

তবে তাদের দেশি কিছু বিনিয়োগকারী ভবিষ্যৎ এ আসবে ইনশাআল্লাহ। তারা শেয়ার কিনবে, বেচবে। শুধু যে কিনেই যাবে, তা কিন্তু না। ঠিক আমাদের মতই। লাভ হলে বেচবে। কিন্তু বাজারটা স্টেবল (স্থিতিশীল) হবে ও লেনদেন অনেকটাই বাড়বে, এই ব্যাপারে আমি (বিনিয়োগকারীরা) ৯৯% নিশ্চিত। ইন্ডেক্স কিন্তু ৪ পয়েন্ট মাইনাস। তবে লেনদেন একদিনেই অনেক টা বেড়ে গেছে। আবার প্রফিট ও পাওয়া গেলো। এখন যে ধরতে পারবে, সেই পাবে। এই বাজার আরো পরিনত হবে। লাভ ও লস, দুটোর পরিমানই কমে আসবে। কারন, আপনি কম দামে বেচলে বিদেশী ক্রেতা কিনবে। আবার আপনি বেশি দামে কোন শেয়ার কিনতে চাইলে, তারা বেচবে। আশা করি, বোঝাতে পারলাম। ধন্যবাদ। উল্লেখ্য, ডিএসই’র স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে চীনের দুই এক্সচেঞ্জ সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম (জোট) কারিগরি ও নগদসহ প্রায় ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকার প্রস্তাব করে।

চীনের জোটের পক্ষ থেকে ডিএসই’র প্রতিটি শেয়ার ২২ টাকা দরে ক্রয়ের প্রস্তাব প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে ডিএসই’র ২৫ শতাংশ শেয়ার অর্থাৎ ৪৫ কোটি শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ৯৯০ কোটি টাকা। এছাড়া কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটি টাকার (৩ কোটি ৭১ মার্কিন ডলার) বেশি ব্যয় করবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে, ডিএসই ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় প্রতিটি শেয়ার দর ডিভিডেন্ড পরবর্তী সময়ে ২১ টাকা নির্ধারণ করা হবে।

ট্যাগ :

দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

পুঁজিবাজারে চীনা বিনিয়োগ ও ভুল ধারণা

প্রকাশিত : ০৯:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মে ২০১৮

টানা নাটকীয়তা চীনের সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে (জোট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হওয়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চীনা জোটের এ বিনিয়োগ নিয়ে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারী অনেকের মধ্যেই রয়েছে ভুল ধারণা। অনেকে তো এর মানেই বোঝেন নাই যে, চীন কি কিনলো? আবার অনেকের ধারনা শেয়ার বাজারের ইন্ডেক্স ২০ হাজার হয়ে যাবে। আবার অনেকের ধারনা সব শেয়ার তিন চার গুন হয়ে যাবে। অনেকে এটা ও ভাবছেন যে, চীন সব শেয়ার কিনে নেবে, এই দেশের বাজারে আর কোন শেয়ারই পাওয়া যাবে না ! আসলে, সেরকম কিছুই না। সাধারন ভাবে বিষয়টা বোঝানোর চেস্টা করছি- ধরুন, একজন বিদেশী আপনার এলাকার একটা বাজারের ২৫% মালিকানা কিনেছে।

তবে সে কিন্তু বাজারের ২৫% মাল কিনে নাই। কিনবে, এরকম কোন কমিটমেন্ট ও করে নাই। সে বাজারের মালিক। এই বাজারের হাজারো লোকজন আসবে। কেনাবেচা করবে। মাছ, সবজি, মুরগী, বিক্রি করবে। সেই বিদেশীসহ বাজারের বাকি মালিকরা সেখান থেকে ভাড়া ও কমিশন পাবে। তবে মাছ বা সবজি কিন্তু বিদেশি কিনবে না। তবে, এখানে একটা ব্যাপার আছে ! যখন একজন বিদেশী, একটা মাছ বাজারের মালিক। তখন আশেপাশে যে কয়জন বিদেশী ক্রেতা বা বিক্রেতা আছে, তারা চাইবে এখানেই বাজার সদাই করতে। কারন, কোন ঝামেলা বা পচা মাল গছায়া দিলে তার স্বদেশী লোকের কাছে এর জবাব চাইতে পারে। অথবা কোন মাছ বা মুরগী কেনার আগে যেন স্বদেশি লোকের কাছ থেকে পরামর্শ পায়। আর সেই বিদেশী মালিক ও চাইবে, বাজারে আরো দোকান পাট বসাতে বা নতুন নতুন মাল পত্র আনতে। যেন কেনাবেচা বেশি হয়। চীন সব শেয়ার কিনে নেবে, ইন্ডেক্স ২০ হাজার যাবে, এরকম স্বপ্ন কেউ দেইখেন না। তারা বাজার কিনেছে। শেয়ার না। এই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।

তবে তাদের দেশি কিছু বিনিয়োগকারী ভবিষ্যৎ এ আসবে ইনশাআল্লাহ। তারা শেয়ার কিনবে, বেচবে। শুধু যে কিনেই যাবে, তা কিন্তু না। ঠিক আমাদের মতই। লাভ হলে বেচবে। কিন্তু বাজারটা স্টেবল (স্থিতিশীল) হবে ও লেনদেন অনেকটাই বাড়বে, এই ব্যাপারে আমি (বিনিয়োগকারীরা) ৯৯% নিশ্চিত। ইন্ডেক্স কিন্তু ৪ পয়েন্ট মাইনাস। তবে লেনদেন একদিনেই অনেক টা বেড়ে গেছে। আবার প্রফিট ও পাওয়া গেলো। এখন যে ধরতে পারবে, সেই পাবে। এই বাজার আরো পরিনত হবে। লাভ ও লস, দুটোর পরিমানই কমে আসবে। কারন, আপনি কম দামে বেচলে বিদেশী ক্রেতা কিনবে। আবার আপনি বেশি দামে কোন শেয়ার কিনতে চাইলে, তারা বেচবে। আশা করি, বোঝাতে পারলাম। ধন্যবাদ। উল্লেখ্য, ডিএসই’র স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে চীনের দুই এক্সচেঞ্জ সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম (জোট) কারিগরি ও নগদসহ প্রায় ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকার প্রস্তাব করে।

চীনের জোটের পক্ষ থেকে ডিএসই’র প্রতিটি শেয়ার ২২ টাকা দরে ক্রয়ের প্রস্তাব প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে ডিএসই’র ২৫ শতাংশ শেয়ার অর্থাৎ ৪৫ কোটি শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ৯৯০ কোটি টাকা। এছাড়া কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটি টাকার (৩ কোটি ৭১ মার্কিন ডলার) বেশি ব্যয় করবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে, ডিএসই ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় প্রতিটি শেয়ার দর ডিভিডেন্ড পরবর্তী সময়ে ২১ টাকা নির্ধারণ করা হবে।