ভারতের ইন্টারনেট বাজারে সবচেয়ে বড় লেনদেন ঘটেছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রিটেল বহুজাতিক ওয়ালমার্টের ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে ভারতীয় ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্টের ৭৭ শতাংশ অংশীদারি কিনে নিয়েছে। গত বুধবার এক বিবৃতিতে বিশ্বের বৃহত্তম রিটেইলার ওয়ালমার্ট জানায়, তারা ফ্লিপকার্টের ৭৭ শতাংশ মালিকানা নিচ্ছে। ভারতীয় কোম্পানিটির বাজারমূল্য ২ হাজার কোটি ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
পাঁচ বছর আগে অ্যামাজন ভারতের বাজারে প্রবেশ করার পর থেকে ফ্লিপকার্ট চাপের মুখে পড়ে। অ্যামাজনও ১০ কোটি বেশি গ্রাহকের এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার কথা ভাবছিল। তবে ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়ালমার্টের অংশীদারি কমতে পারে আরো। কারণ, ফ্লিপকার্টে নতুন বিনিয়োগকারী আনতে কথাবার্তা চালাচ্ছে তারা। যে তালিকায় আছে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটও। সে ক্ষেত্রে একই সংস্থায় অংশীদারি থাকবে মাইক্রোসফট ও গুগলের। সংশ্লিষ্টদের মতে, ফ্লিপকার্টের মাধ্যমে ভারতের নেট বাজারে পা রাখতে পারল ওয়ালমার্ট। ২০২৬ সালের মধ্যে যার অঙ্ক দাঁড়াতে পারে ২০ হাজার কোটি ডলার।
ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে মার্কিন কোম্পানি অ্যামাজনের প্রভাবের কারণে প্রায় হারিয়ে যাওয়া ডিসকাউন্ট সুবিধা ফিরতে পারে ওয়ালমার্টের মাধ্যমে।গ্রাহকদের কাছে টানতে অনলাইন কেনাকাটায় ডিসকাউন্ট বা ছাড়ের ব্যাপক সুবিধা পাবে গ্রাহকরা। ওয়ালমার্টের সবচেয়ে সফল কৌশল – রোজ কম দাম। ফ্লিপকার্টকে কেনার পর প্রতিদিন কম দাম বা ছাড়ে পণ্য দিয়ে ওয়ালমার্ট এ কৌশল ব্যবহার করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রিটেল বহুজাতিক ওয়ালমার্ট অনেকদিন ধরেই চেষ্টায় ছিল অনলাইন বাজারে পা রাখতে। ওয়ালমার্টের ১১ হাজার ৭০০টি স্টোর রয়েছে বিশ্বের ২৮টি দেশে। আরো আছে নানান ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট।
এ প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে ২৩ লাখ মানুষের। বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট ব্যবসা স্টোর কেন্দ্রিক। কিন্তু চোখে দেখে কিন্তু ঘরে বসে কেনাকাটা করার ক্রেতা যে ব্যাপক বেড়েছে তা দিনদিন স্পষ্ট হচ্ছে। এই চুক্তিও তার প্রতিফলন। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ফ্লিপকার্টে মাইক্রোসফট, টেনসেন্ট এবং সফটব্যাংকের মতো নামিদামি বিনিয়োগকারী আছে, যারা তাদের শেয়ার ধরে রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভারতের ক্ষুদ্র রিটেইলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার কারণে ওয়ালমার্টের সঙ্গে ফ্লিপকার্টের চুক্তিটি বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টার জানিয়েছে, গত বছর ভারতে অনলাইনে বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার। ভারতের ১২৫ কোটি জনসংখ্যার বেশির ভাগ মানুষ দিন দিন ইন্টারনেটে আরো বেশি আগ্রহী হওয়ায় এর পরিমাণ সামনের দিনগুলোয় বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

























