অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা, ভালোবাসার মেলা, উৎসবের মেলা। করোনা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোল না কাটাতেই এবারের বইমেলা যেন নতুনভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে।
প্রকাশকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবারের বিক্রি গত কয়েকবছরের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। তবে অনিন্দ্য প্রকাশের চিত্র যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখান থেকে প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক মোশতাক আহমেদ এর চারটি উপন্যাস। এই চারটি উপন্যাসহ হলো দ্যা ওল্ড ওয়ার্ল্ড (সায়েন্স ফিকশন), হারানো জোছনার সুর (প্যারাসাইকোলজি), রূপার সিন্দুক (শিশিলিন কিশোর গোয়েন্দা) এবং মৃত্যুবাড়ি (ভৌতিক উপন্যাস)। অনিন্দ্য প্রকাশ পরিলক্ষিত হয় যে, দেদারসে বিক্রি হচ্ছে উপন্যাসগুলো। লেখক যেমন অটোগ্রাফের চাপে ব্যস্ত, তেমনই পাঠকদের ফটোগ্রাফের আশাও পূরণ করতে হচ্ছে তার। কোনো কোনো পাঠককে তার আট দশটি উপন্যাসও ক্রয় করতে দেখে গেছে।
অনিন্দ্য প্রকাশের সত্বাধিকারী আফজাল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চারটি উপন্যাসই ব্যাপক জনপ্রিয় পাঠকদের কাছে। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে হারোনো জোছনার সুর। তৃতীয় মুদ্রণ শেষে তারা এখন চতুর্থ মুদ্রণের পথে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, শিশু কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ তরুণী, মধ্যবয়সী এমনকি প্রবীণরাও কিনছেন মোশতাক আহমেদ এর উপন্যাস। কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোশতাক আহমেদ তাদের অন্যতম প্রিয় লেখক, সারা বছর অপেক্ষা করেন তার উপন্যাসের জন্য। কেউ কেউ একটানা পনের বছর ধরেও পড়ছেন মোশতাক আহমেদ এর উপন্যাস। মেরিনা নামের এক পাঠক জানান, মোশতাক আহমেদ এর পাঠক ধরে রাখার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, কারণ তার উপন্যাসগুলো টান টান উত্তেজনার এবং রহস্যে ভরপুর। একবার পড়তে বসলে আর শেষ করা যায় না। তার এক নম্বর পছন্দ প্যারাসাইকোলজি উপন্যাস।
সংক্ষিপ্ত কাহিনী
হারানো জোছনার সুর (প্যারাসাইকোলজি উপন্যাস):
মাহিন আর মাইশা প্রেম করে বিয়ে করেছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যেন মাইশার আচার আচরণে অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে জানায়, তার মধ্যে অশরীরীয় কোনো আত্মা আছে যে তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, প্রভাবিত করে। ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে না চাইলেও মাইশার নানা অনাকাঙ্খিত আচরণে তা প্রকাশ পেতে থাকে। মাইশা নিজের চুল নিজেই এলোমেলো করে ফেলে, রাতে বিড়বিড় করে কথা বলে, আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, এটা ওটা ভেঙে ফেলে, এমনকি একে ওকে চড় থাপ্পড়ও মেরে বসে। দেখলে মনে হবে সে বুঝি পাগল! সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, অশরীরী আত্মাটা গোপনে মাইশাকে তার ভালোবাসার অভিপ্রায়ের কথা প্রকাশ করে। মাইশা রাজি না হওয়ায় তার সর্বনাশ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে অশরীরী আত্মা!
মাইশাকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লাগে মাহিন। ঘটনাক্রমে তার সাথে পরিচয় হয় প্যারাসাইকোলজিক্যাল ইনভেস্টিগেটর ডাক্তার তরফদারের। ডাক্তার তরফদারও বিশ্বাস করেন না অশরীরীয় আত্মার অস্তিত্ব। কিন্তু কীভাবে বাঁচাবেন মাইশাকে! নাকি মৃত্যুই হবে তার শেষ পরিণতি!
উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য লেখক মোশতাক আহমেদ ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও শিশু একাডেমি পুরুস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি কালি ও কলম সাহিস্য পুরস্কার, চ্যানেল আই আনন্দ আলো পুরস্কারও লাভ করেছেন। তার প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ১২০টি।


























