০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

নকলায় সীমানার দাফন সম্পন্ন

হাসপাতালে ১৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে চলে গেছেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী রিশতা লাবণী সীমানা। মাত্র ৩৯ বছর বয়সেই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে ভক্ত-অনুরাগীরা।
এদিকে দুপুর ১২:১৫ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে মডেল অভিনেত্রী সীমানার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে মাকে শেষবারের মতো দেখতে ছটফট করছিল সীমানার ৭বছর বয়সী শিশুপুত্র শ্রেষ্ঠ। বারবার ছুটে যাচ্ছিল মায়ের মুখ খানি দেখতে।
লাশবাহী ফ্রিজ ভ্যান যখন চ্যানেল আইতে প্রবেশ করে তখন শ্রেষ্ঠ তার ছোটভাই স্বর্গকে বললো, চল স্বর্গ মাকে দেখি, মা চলে আসছে। কিন্তু দূর থেকে অবুঝ দুটি শিশু বোঝেনি তাদের মা আর ফিরে ফিরবে না।
শ্রেষ্ঠ বলছিল, মা আমাকে অনেক ভালোবাসতো, আমিও মাকে অনেক ভালোবাসতাম। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার মায়ের অনেক ইচ্ছা ছিল আমাকে ক্যাডেটে পড়ানোর। কিন্তু মা তো চলে গেল। আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
একটু দূরে সীমানার মা নাট্য পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলুকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, আমার মেয়ে এতো অল্প বয়সে চলে যাবে বুঝতে পারেনি। এতো কম বয়সে কেউ এভাবে যেতে পারে। তারপরে মেয়ের ছবি ধরে অঝোরে কেঁদে উঠেন।

অভিনেত্রী সীমানার ‘সাকিন সারিসুরি’ নাটকের সহকর্মী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। মঙ্গলবার ( ৪ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে সীমানার সাদা-কালো ছবি দিয়ে অভিনেত্রীকে নিয়ে লিখেছেন চঞ্চল।
তিনি লিখেছেন, ‘সীমানা… জীবনের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেলি মৃত্যুর সীমানায়…! অনন্তলোকে তুই চির শান্তিতে থাকিস। তোর জন্য রইল গভীর শোক। “সাকিন সারিসুরি”,কলেজ টুডেন…কত কত স্মৃতি!’
চঞ্চল চৌধুরীর এই পোস্টে মন্তব্য করছেন অনেক দর্শক। একজন লিখেছেন, ‘“সাকিন সারিসুরি” নাটকের কাকলি…ভালো থাকবেন পারপারে। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

সীমানার পরিবার জানিয়েছে, গত ২১ মে রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সীমানা। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে দ্রুত ধানমন্ডির বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানতে পারেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরদিন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সীমানাকে ধানমন্ডির আরেকটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
গত কয়েক দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ মে এই হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়।
গত বুধবার বিকেল থেকে সীমানার চিকিৎসা চলছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সীমানার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত অবনতি হয়েছে। শুরুর দিকে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হলেও বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সীমানা চলে যান না-ফেরার দেশে।
ডেল ও অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে এই নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়।

প্রথম জানাজা শেষে সীমানার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শেরপুর জেলার নকলা উপজেলাতে।
সীমানার ছোট ভাই এজাজ বিন আলী বলেন, বাদ মাগরিব আরও এক জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

সীমানা ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন। ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। পরে নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ২০১৬ সাল থেকে অভিনয়ে বিরতি। পরে জানা যায়, মা হওয়ার জন্যই এই বিরতি। গত বছর আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/BH

ট্যাগ :

নকলায় সীমানার দাফন সম্পন্ন

প্রকাশিত : ০৯:০৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

হাসপাতালে ১৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে চলে গেছেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী রিশতা লাবণী সীমানা। মাত্র ৩৯ বছর বয়সেই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে ভক্ত-অনুরাগীরা।
এদিকে দুপুর ১২:১৫ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে মডেল অভিনেত্রী সীমানার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে মাকে শেষবারের মতো দেখতে ছটফট করছিল সীমানার ৭বছর বয়সী শিশুপুত্র শ্রেষ্ঠ। বারবার ছুটে যাচ্ছিল মায়ের মুখ খানি দেখতে।
লাশবাহী ফ্রিজ ভ্যান যখন চ্যানেল আইতে প্রবেশ করে তখন শ্রেষ্ঠ তার ছোটভাই স্বর্গকে বললো, চল স্বর্গ মাকে দেখি, মা চলে আসছে। কিন্তু দূর থেকে অবুঝ দুটি শিশু বোঝেনি তাদের মা আর ফিরে ফিরবে না।
শ্রেষ্ঠ বলছিল, মা আমাকে অনেক ভালোবাসতো, আমিও মাকে অনেক ভালোবাসতাম। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার মায়ের অনেক ইচ্ছা ছিল আমাকে ক্যাডেটে পড়ানোর। কিন্তু মা তো চলে গেল। আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
একটু দূরে সীমানার মা নাট্য পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলুকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, আমার মেয়ে এতো অল্প বয়সে চলে যাবে বুঝতে পারেনি। এতো কম বয়সে কেউ এভাবে যেতে পারে। তারপরে মেয়ের ছবি ধরে অঝোরে কেঁদে উঠেন।

অভিনেত্রী সীমানার ‘সাকিন সারিসুরি’ নাটকের সহকর্মী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। মঙ্গলবার ( ৪ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে সীমানার সাদা-কালো ছবি দিয়ে অভিনেত্রীকে নিয়ে লিখেছেন চঞ্চল।
তিনি লিখেছেন, ‘সীমানা… জীবনের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেলি মৃত্যুর সীমানায়…! অনন্তলোকে তুই চির শান্তিতে থাকিস। তোর জন্য রইল গভীর শোক। “সাকিন সারিসুরি”,কলেজ টুডেন…কত কত স্মৃতি!’
চঞ্চল চৌধুরীর এই পোস্টে মন্তব্য করছেন অনেক দর্শক। একজন লিখেছেন, ‘“সাকিন সারিসুরি” নাটকের কাকলি…ভালো থাকবেন পারপারে। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

সীমানার পরিবার জানিয়েছে, গত ২১ মে রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সীমানা। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে দ্রুত ধানমন্ডির বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানতে পারেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরদিন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সীমানাকে ধানমন্ডির আরেকটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
গত কয়েক দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ মে এই হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়।
গত বুধবার বিকেল থেকে সীমানার চিকিৎসা চলছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সীমানার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত অবনতি হয়েছে। শুরুর দিকে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হলেও বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সীমানা চলে যান না-ফেরার দেশে।
ডেল ও অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে এই নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়।

প্রথম জানাজা শেষে সীমানার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শেরপুর জেলার নকলা উপজেলাতে।
সীমানার ছোট ভাই এজাজ বিন আলী বলেন, বাদ মাগরিব আরও এক জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

সীমানা ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন। ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। পরে নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ২০১৬ সাল থেকে অভিনয়ে বিরতি। পরে জানা যায়, মা হওয়ার জন্যই এই বিরতি। গত বছর আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/BH