১২:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মেয়র লাপাত্তা, নাগরিক সেবা ব্যাহত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এসএম রবীন হোসেন। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পৌরসভা। ফলে পৌরসভায় গিয়েও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না পৌরবাসী।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায় পৌর মেয়রের কক্ষে তালা ঝুলছে। কর্মকর্তারা-কর্মচারী আসলেও পুরো পৌরসভা যেন সুনসান নীরবতা। অলস সময় কাটাচ্ছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও), প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পৌর প্রকৌশলীসহ পৌরসভার শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পৌরসভার বারান্দায় বসে আছেন সেবা প্রত্যাশীরা। তবে, ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীরা জানান সপ্তাহ খানেক ধরে এমন অবস্থা চলছে।

কথা হয় ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীদের সাথে। তারা জানান, সপ্তাহখানেক আগেও এই পৌরসভায় থাকত উপচেপড়া ভিড়। আর কাজে ব্যতিব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। ওইদিন পৌর সেবা নিতে আসা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে ভাদার্ত্তী গ্রামের শহিদুল সরকার জানান, তিনি ওয়ারিশ সনদের জন্য গেল তিন দিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছেন। কিন্তু মেয়র না থাকায় প্রতিদিনই ফিরে যাচ্ছেন।

কথা হয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার সাধারণ, স্বাস্থ্য, কর আদায়-নিরুপন, লাইসেন্স-বাজার শাখার কয়েকজন কর্মচারীর সাথে। তারা জানান, আমরা কয়েকদিন বিশেষ ব্যবস্থায় পৌরবাসীর সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আর পারছিনা। যে কারণে পৌরবাসীর সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমাদের কিছু করার নাই। যখন যে যেভাবে চালাবে আমরা সেভাবেই চলি।

পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ মোমেন জানান, পৌর মেয়র অনুপস্থিত থাকার কারণে আমরা পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছি না।

কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিলন মিয়া বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত মেয়র অফিসে আসেন না। এতে করে পৌরবাসীকে সেবা দিতে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তবে অচিরেই পৌরবাসীদের সেবা পাওয়ার ভোগান্তি দুর হয়ে যাবে।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত পৌরসভার কার্যক্রমে কোন বিঘœ ঘটেনি। সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট থেকে অফিসে আসতে পারি নাই। কবে নাগাদ অফিস করবেন এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন-দেশের অবস্থা তো জানেনই, দেখা যাক কী হয়?

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, পৌরসভার বিষয়ে কারা অনুপস্থিত এসব খবর নিচ্ছেন গাজীপুর ডিডিএলজি। তিনি মন্ত্রণালয়ে জানাবেন, এরপর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিবেন কী হবে।

স্থানীয় সরকার গাজীপুরের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অচিরেই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুর দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেনের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে একসাথে ওই পৌরসভার ৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ ১২ জন কাউন্সিলর কঠোর অবস্থান নিয়েছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

মেয়র লাপাত্তা, নাগরিক সেবা ব্যাহত

প্রকাশিত : ০৩:২৩:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এসএম রবীন হোসেন। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পৌরসভা। ফলে পৌরসভায় গিয়েও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না পৌরবাসী।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায় পৌর মেয়রের কক্ষে তালা ঝুলছে। কর্মকর্তারা-কর্মচারী আসলেও পুরো পৌরসভা যেন সুনসান নীরবতা। অলস সময় কাটাচ্ছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও), প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পৌর প্রকৌশলীসহ পৌরসভার শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পৌরসভার বারান্দায় বসে আছেন সেবা প্রত্যাশীরা। তবে, ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীরা জানান সপ্তাহ খানেক ধরে এমন অবস্থা চলছে।

কথা হয় ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীদের সাথে। তারা জানান, সপ্তাহখানেক আগেও এই পৌরসভায় থাকত উপচেপড়া ভিড়। আর কাজে ব্যতিব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। ওইদিন পৌর সেবা নিতে আসা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে ভাদার্ত্তী গ্রামের শহিদুল সরকার জানান, তিনি ওয়ারিশ সনদের জন্য গেল তিন দিন ধরে পৌরসভায় ঘুরছেন। কিন্তু মেয়র না থাকায় প্রতিদিনই ফিরে যাচ্ছেন।

কথা হয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার সাধারণ, স্বাস্থ্য, কর আদায়-নিরুপন, লাইসেন্স-বাজার শাখার কয়েকজন কর্মচারীর সাথে। তারা জানান, আমরা কয়েকদিন বিশেষ ব্যবস্থায় পৌরবাসীর সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আর পারছিনা। যে কারণে পৌরবাসীর সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমাদের কিছু করার নাই। যখন যে যেভাবে চালাবে আমরা সেভাবেই চলি।

পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ মোমেন জানান, পৌর মেয়র অনুপস্থিত থাকার কারণে আমরা পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছি না।

কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিলন মিয়া বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত মেয়র অফিসে আসেন না। এতে করে পৌরবাসীকে সেবা দিতে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তবে অচিরেই পৌরবাসীদের সেবা পাওয়ার ভোগান্তি দুর হয়ে যাবে।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত পৌরসভার কার্যক্রমে কোন বিঘœ ঘটেনি। সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট থেকে অফিসে আসতে পারি নাই। কবে নাগাদ অফিস করবেন এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন-দেশের অবস্থা তো জানেনই, দেখা যাক কী হয়?

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, পৌরসভার বিষয়ে কারা অনুপস্থিত এসব খবর নিচ্ছেন গাজীপুর ডিডিএলজি। তিনি মন্ত্রণালয়ে জানাবেন, এরপর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিবেন কী হবে।

স্থানীয় সরকার গাজীপুরের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অচিরেই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুর দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেনের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে একসাথে ওই পৌরসভার ৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ ১২ জন কাউন্সিলর কঠোর অবস্থান নিয়েছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে