সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। দিনের শেষ ঘণ্টায় লেনদেন হওয়া একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সিএসইর সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ও বাছাই করা সূচক ডিএসই-৩০ পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
মূলত প্রকৌশল ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর অবদানেই পতন থেকে রক্ষা পেয়ে ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখীতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১২টির দাম। এদিন বীমা খাতের মতো প্রকৌশল খাতেরও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে প্রকৌশল খাতের ২০টি কোম্পানি দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় রয়েছে ১৫টি প্রতিষ্ঠান। এদিকে আগের কার্যদিবসের তুলনায়ে সোমবার কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়লেও উত্থানের থেকে পতনের তালিকায় স্থান করে নেয় বেশিরভাগ ব্যাংক।
ব্যাংক খাতের ১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১০টির। তবে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এদিন বাজারটিতে ১৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৩৯টি। আর ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার কারণে সূচকের এ বড় উত্থান ৩ ঘণ্টা অব্যাহত থাকে। কিন্তু লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমতে থাকে। ফলে এক পর্যায়ে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে যায়।
অবশ্য শেষ পাঁচ মিনেটের লেনদেনে সূচকটি ঊর্ধ্বমুখীতা ফিরে পায়। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকের পতন হয়েছে। এই সূচকটি আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিকে মূল্যসূচকে নেতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি ডিএসইতে সোমবার লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। এদিন বাজারটিতে মোট ৮৭৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৫৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এদিন ডিএসইতে টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে কেডিএস এক্সসরিজের শেয়ার। সোমবার কোম্পানিটির মোট ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেপিসিএলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকার। আর ২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণ ফোন। লেনদেনে এরপর রয়েছে- পেনিনসুলা চিটাগাং, বিবিএস কেবলস, লিগাসি ফুটওয়্যার, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, মুন্নু সিরামিক, আরএসআরএম স্টিল এবং কনফিডেন্স সিমেন্ট। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স সোমবার ১৬ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে মোট ৪৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হওয়া ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৭টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।

























