০৭:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভা ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ

নওগাঁয় দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই সভায় বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী থেকে আগত বিভাগীয় সমন্বয়ক দলের প্রধান মাহিন সরকার এবং তার সঙ্গী কুররাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, মাসুদ রানা সহ আন্দোলনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও শহীদদের পরিবারের সদস্যরা।

মতবিনিময় সভায় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে শাসক দলের অবসান হয়েছে। এই ঐতিহাসিক আন্দোলন শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনই করেনি, বরং ছাত্র-জনতার মধ্যে একটি অটুট ঐক্যের জন্ম দিয়েছে। এই ঐক্যই আমাদের মূল শক্তি, যা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। বর্তমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন, এবং এজন্য দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

মাহিন সরকার আরও উল্লেখ করেন, “শহীদ পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা উচিত। এই দাবিগুলো বর্তমান সরকারের প্রতি আমরা জোরালোভাবে উপস্থাপন করছি।” তিনি আরও জানান যে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধু আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ধারাবাহিকতা রাখতে ছাত্র-জনতার ঐক্য অপরিহার্য।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত শহীদদের পরিবারের সদস্যরা তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দেওয়া শহীদদের স্মরণ করে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সুযোগ-সুবিধার দাবি করা হচ্ছে। আহতদের পক্ষ থেকেও তাঁদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন শহীদদের পরিবারের সদস্য ও আন্দোলনের আহত কর্মীরাও। তাঁরা জানান, আন্দোলনের সময় তারা যেসব ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা শুধু তাদের ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং পুরো জাতির জন্য একটি বিশাল শিক্ষার উৎস। তাঁরা বলেন, “আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি, কিন্তু সেই ত্যাগ বৃথা যাবে না। দুর্নীতিমুক্ত একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র-জনতা একসঙ্গে কাজ করে যাবে।”

সভায় বিভিন্ন বক্তা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পতনের পরও সমাজের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়ে গেছে। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে এবং শিক্ষিত যুবসমাজকেই এর নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভা ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ

প্রকাশিত : ০৫:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নওগাঁয় দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই সভায় বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী থেকে আগত বিভাগীয় সমন্বয়ক দলের প্রধান মাহিন সরকার এবং তার সঙ্গী কুররাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, মাসুদ রানা সহ আন্দোলনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও শহীদদের পরিবারের সদস্যরা।

মতবিনিময় সভায় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে শাসক দলের অবসান হয়েছে। এই ঐতিহাসিক আন্দোলন শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনই করেনি, বরং ছাত্র-জনতার মধ্যে একটি অটুট ঐক্যের জন্ম দিয়েছে। এই ঐক্যই আমাদের মূল শক্তি, যা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। বর্তমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন, এবং এজন্য দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

মাহিন সরকার আরও উল্লেখ করেন, “শহীদ পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা উচিত। এই দাবিগুলো বর্তমান সরকারের প্রতি আমরা জোরালোভাবে উপস্থাপন করছি।” তিনি আরও জানান যে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধু আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ধারাবাহিকতা রাখতে ছাত্র-জনতার ঐক্য অপরিহার্য।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত শহীদদের পরিবারের সদস্যরা তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দেওয়া শহীদদের স্মরণ করে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সুযোগ-সুবিধার দাবি করা হচ্ছে। আহতদের পক্ষ থেকেও তাঁদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন শহীদদের পরিবারের সদস্য ও আন্দোলনের আহত কর্মীরাও। তাঁরা জানান, আন্দোলনের সময় তারা যেসব ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা শুধু তাদের ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং পুরো জাতির জন্য একটি বিশাল শিক্ষার উৎস। তাঁরা বলেন, “আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি, কিন্তু সেই ত্যাগ বৃথা যাবে না। দুর্নীতিমুক্ত একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র-জনতা একসঙ্গে কাজ করে যাবে।”

সভায় বিভিন্ন বক্তা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পতনের পরও সমাজের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়ে গেছে। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে এবং শিক্ষিত যুবসমাজকেই এর নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস