১০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন

৫৮ দিন পর নিহত মিলনের মরদেহ উত্তোলন

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণ শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলন হত্যার ঘটনায় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।মিলনের মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই ২০ জুলাই মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফনের ৫৮ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে।

রোববার (১৫সেপ্টেম্বর)মামলার সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে দুপুরে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে মিলনের মরদেহ তোলা হয়।ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গত ২৭ আগস্ট দুপুরে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতের বিচারক রাজু আহম্মেদ আদালতে মামলাটি করেছেন রংপুর নগরীর পূর্ব গনেশপুর এলাকার স্বর্ণ শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার (৩২)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন,রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান,রংপুর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল)হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী।

তবে এর কয়েকদিন পর এই মামলা থেকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন,সাবেক রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের নাম বাদির আবেদনে বাদ দ্ওেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলায় অন্য আসামীরা হলেন-সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান,সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাৎ হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শফিয়ার রহমান সাফি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নগরীর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়।এ সময় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির প্ররোচনায় হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে।এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পরে আসামিদের চাপে মরদেহ ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।

মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি)ও এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট(এসিল্যান্ড)আহমেদ সাদাত ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা,মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী কমিশনার(ভুমি)ও এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট(এসিল্যান্ড)আহমেদ সাদাত বলেন,আদালতের নির্দেশে সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে নিহত মিলনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত মিলন রংপুর মহানগরীর পুর্ব গণেশপুর মোখলেছুর রহমান মন্টুর ছেলে।গত ১৯ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর নগরীর সিটি বাজারের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মিলন।

মামলার আবেদনে বলা হয়,১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়।এসময় ৮ থেকে ১৭ নম্বর আসামিদের প্ররোচনা ও উস্কানিতে ১ থেকে ৭ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর আসামিসহ হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়ে।এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।পরে আসামিদের চাপে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয় মুন্সিপাড়া কবরস্থানে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন

৫৮ দিন পর নিহত মিলনের মরদেহ উত্তোলন

প্রকাশিত : ০৪:১৭:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণ শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলন হত্যার ঘটনায় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।মিলনের মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই ২০ জুলাই মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফনের ৫৮ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে।

রোববার (১৫সেপ্টেম্বর)মামলার সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে দুপুরে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে মিলনের মরদেহ তোলা হয়।ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গত ২৭ আগস্ট দুপুরে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতের বিচারক রাজু আহম্মেদ আদালতে মামলাটি করেছেন রংপুর নগরীর পূর্ব গনেশপুর এলাকার স্বর্ণ শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার (৩২)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন,রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান,রংপুর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল)হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী।

তবে এর কয়েকদিন পর এই মামলা থেকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন,সাবেক রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের নাম বাদির আবেদনে বাদ দ্ওেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলায় অন্য আসামীরা হলেন-সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান,সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাৎ হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শফিয়ার রহমান সাফি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নগরীর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়।এ সময় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির প্ররোচনায় হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে।এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পরে আসামিদের চাপে মরদেহ ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।

মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি)ও এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট(এসিল্যান্ড)আহমেদ সাদাত ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা,মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী কমিশনার(ভুমি)ও এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট(এসিল্যান্ড)আহমেদ সাদাত বলেন,আদালতের নির্দেশে সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে নিহত মিলনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত মিলন রংপুর মহানগরীর পুর্ব গণেশপুর মোখলেছুর রহমান মন্টুর ছেলে।গত ১৯ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর নগরীর সিটি বাজারের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মিলন।

মামলার আবেদনে বলা হয়,১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়।এসময় ৮ থেকে ১৭ নম্বর আসামিদের প্ররোচনা ও উস্কানিতে ১ থেকে ৭ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর আসামিসহ হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়ে।এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।পরে আসামিদের চাপে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয় মুন্সিপাড়া কবরস্থানে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস