০১:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফেনীর হত্যা মামলায় যেসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আসামী হয়নি তাদের আইনের আওতায় আনা হবে

ফেনীর নবাগত পুলিশ সুপার মো: হাবিবুর রহমান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এ পর্যন্ত ফেনীতে ৮ জন শহীদ হয়েছে, এবং ফেনীর বাহিরে ঢাকায় আরো ৩ জনসহ মোট ১১ জন শহীদ হয়েছেন। এসব হতাকান্ডে থানায় ৮টি মামলা করা হয়েছে। ৮ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১২৮৭ জন। হত্যা মামলায় যেসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এখনও আসামি হয় নাই, তদন্তের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবো। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ফেনীতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ৪ আগষ্টের ঘটনার বিষয়ে আমরা একটি তদন্ত টিম গঠন করেছি। যেসব মামলাগুলো হয়েছে সেসব মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তদন্তকাজে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কোন গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে আমাকে অবহিত করবেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে পরিবর্তন করার দরকার হলে তা করা হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ফেনী জেলায় কোন পুলিশের সদস্য পলাতক নেই। বিগত ১৬ বছরে পুলিশকে বিভিন্ন কায়দায় ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের কিছু দোষত্রুটি ও ভুলত্রুটি আছে এ কারনে পুলিশ আজ বিতর্কিত। আমি ফেনী জেলায় নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছি চলতি মাসের ৮ তারিখে। আমরা চাই বাংলাদেশে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হয়েছে,এ স্বাধীনতায় ছাত্র-জনতা, সাংবাদিকসহ আপামর জনসাধারণ যেভাবে চায় সেভাবে আমরা ফেনী জেলা পুলিশকে গঠন করবো ইনশাআল্লাহ। আমি এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য,সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি বলেন, থানায়,ডিবি অফিস,ডিএজবি অফিসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স,ভেরিফিকেশন ও পাসপোর্ট ক্লিয়ারেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে টাকা দাবি করে তাহলে এ বিষয়ে কোন তথ্য পেয়ে থাকেন আমাকে অবহিত করবেন। আমি এর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছি। যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। যে সমস্ত অস্ত্র আমাদের থানা বাড়ি থেকে লুট হয়েছে সেগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে। যারা অবৈধ অস্ত্রধারী তাদেরকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শহর এলাকায় যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, ফেনী শহরে যানজট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমি আসার পর দুইদিন যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। কিন্তু এ যানজট নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না,আমি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে সহনীয় মাত্রায় যতটুকু কাজ করা যায় আমরা করবো। পুলিশের শৃঙ্খলার বিষয়ে তিনি বলেন, একদিনে কিন্তুু সব কাজ করা সম্ভব নয়, পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে অনেক নতুন অফিসার এসেছেন আমরা ইতিমধ্যে থানায় কিছু অফিসারদের নিয়োগ দিয়েছি,বাকিদের নিয়োগ দিতে আমাদের কিছু সময় লাগবে। কিশোর গ্যাং সম্পর্কে তিনি বলেন,কিশোর গ্যাং নির্মূলে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই এবং পুলিশের পক্ষ থেকে যত রকমের ভূমিকা রাখা দরকার আমরা রাখবো। নবাগত এসপি বলেন, আমার পেশাদারিত্ব ও সততার মাধ্যমে আমি ফেনীবাসীকে একটি নির্ভেজাল সেবা দিতে চাই। ফেনীর মানুষ এবং সাংবাদিকদের সাথে আমাদের পুলিশের একটি ভালো সেতুবন্ধন তৈরি হবে আশা করছি। ফেনীর মানুষ যেন নিরাপদে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারে এ ব্যাপারে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
মতবিনিময় সভার শুরুতে পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে জেলার বিভিন্ন্ সমস্যার কথা তুলে ধরেন উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ। পরে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেন।
এসময় পুলিশ সুপারের সাথে উপস্থিত ছিলেন, ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) দীন মোহাম্মদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন ।
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ফেনীর হত্যা মামলায় যেসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আসামী হয়নি তাদের আইনের আওতায় আনা হবে

প্রকাশিত : ০৮:১১:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ফেনীর নবাগত পুলিশ সুপার মো: হাবিবুর রহমান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এ পর্যন্ত ফেনীতে ৮ জন শহীদ হয়েছে, এবং ফেনীর বাহিরে ঢাকায় আরো ৩ জনসহ মোট ১১ জন শহীদ হয়েছেন। এসব হতাকান্ডে থানায় ৮টি মামলা করা হয়েছে। ৮ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১২৮৭ জন। হত্যা মামলায় যেসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এখনও আসামি হয় নাই, তদন্তের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবো। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ফেনীতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ৪ আগষ্টের ঘটনার বিষয়ে আমরা একটি তদন্ত টিম গঠন করেছি। যেসব মামলাগুলো হয়েছে সেসব মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তদন্তকাজে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কোন গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে আমাকে অবহিত করবেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে পরিবর্তন করার দরকার হলে তা করা হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ফেনী জেলায় কোন পুলিশের সদস্য পলাতক নেই। বিগত ১৬ বছরে পুলিশকে বিভিন্ন কায়দায় ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের কিছু দোষত্রুটি ও ভুলত্রুটি আছে এ কারনে পুলিশ আজ বিতর্কিত। আমি ফেনী জেলায় নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছি চলতি মাসের ৮ তারিখে। আমরা চাই বাংলাদেশে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হয়েছে,এ স্বাধীনতায় ছাত্র-জনতা, সাংবাদিকসহ আপামর জনসাধারণ যেভাবে চায় সেভাবে আমরা ফেনী জেলা পুলিশকে গঠন করবো ইনশাআল্লাহ। আমি এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য,সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি বলেন, থানায়,ডিবি অফিস,ডিএজবি অফিসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স,ভেরিফিকেশন ও পাসপোর্ট ক্লিয়ারেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে টাকা দাবি করে তাহলে এ বিষয়ে কোন তথ্য পেয়ে থাকেন আমাকে অবহিত করবেন। আমি এর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছি। যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। যে সমস্ত অস্ত্র আমাদের থানা বাড়ি থেকে লুট হয়েছে সেগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে। যারা অবৈধ অস্ত্রধারী তাদেরকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শহর এলাকায় যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, ফেনী শহরে যানজট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমি আসার পর দুইদিন যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। কিন্তু এ যানজট নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না,আমি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে সহনীয় মাত্রায় যতটুকু কাজ করা যায় আমরা করবো। পুলিশের শৃঙ্খলার বিষয়ে তিনি বলেন, একদিনে কিন্তুু সব কাজ করা সম্ভব নয়, পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে অনেক নতুন অফিসার এসেছেন আমরা ইতিমধ্যে থানায় কিছু অফিসারদের নিয়োগ দিয়েছি,বাকিদের নিয়োগ দিতে আমাদের কিছু সময় লাগবে। কিশোর গ্যাং সম্পর্কে তিনি বলেন,কিশোর গ্যাং নির্মূলে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই এবং পুলিশের পক্ষ থেকে যত রকমের ভূমিকা রাখা দরকার আমরা রাখবো। নবাগত এসপি বলেন, আমার পেশাদারিত্ব ও সততার মাধ্যমে আমি ফেনীবাসীকে একটি নির্ভেজাল সেবা দিতে চাই। ফেনীর মানুষ এবং সাংবাদিকদের সাথে আমাদের পুলিশের একটি ভালো সেতুবন্ধন তৈরি হবে আশা করছি। ফেনীর মানুষ যেন নিরাপদে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারে এ ব্যাপারে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
মতবিনিময় সভার শুরুতে পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে জেলার বিভিন্ন্ সমস্যার কথা তুলে ধরেন উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ। পরে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেন।
এসময় পুলিশ সুপারের সাথে উপস্থিত ছিলেন, ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) দীন মোহাম্মদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন ।