০২:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫

রংপুরে অবসরপ্রাপ্ত নারী কর্মচারী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড

রংপুর মহানগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি নারী কর্মচারী আনজুমান বানু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আরমান আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান খান আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আরমান আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে কঠোর পুলিশি পাহারায় তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল হাদি বেলাল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,আনজুমান বানুর নির্মম হত্যাকাণ্ড সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা ন্যায়বিচারের একটি মাইলফলক এবং আইনের শাসনের প্রতি আস্থার জায়গা আরও মজবুত করবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো.হাবিবুর রহমান বলেন,আমার মক্কেল আরমান আলী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেটি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেওয়া। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৯ মে রংপুর মহানগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় নিজ বাসায় আনজুমান বানু (৬৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আনজুমান বানু ছিলেন ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। ঘটনার সময় তিনি বাসায় একাই ছিলেন।

পরদিন নিহতের জামাতা এনায়েত হোসেন মহন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরমান আলী এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পাঁচ বছর ধরে চলা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

রায় শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন এই হত্যাকাণ্ড ছিল চরম নির্মম। দোষী ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পেরে আমরা তৃপ্ত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও স্বস্তি অনুভব করছে।”

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করে জানানো হয়,আমাদের মা হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি, তবে আমরা আজ ন্যায়বিচার পেয়েছি।”

এই রায়ের মাধ্যমে এক নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের বিচারিক সমাপ্তি ঘটল।বিচারপ্রক্রিয়ার এই সফল পরিণতি বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় করবে-এমনটাই মত সংশ্লিষ্টজনদের।

ডিএস./

 

ট্যাগ :

রংপুরে অবসরপ্রাপ্ত নারী কর্মচারী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত : ০৫:৪৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

রংপুর মহানগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি নারী কর্মচারী আনজুমান বানু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আরমান আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান খান আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আরমান আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে কঠোর পুলিশি পাহারায় তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল হাদি বেলাল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,আনজুমান বানুর নির্মম হত্যাকাণ্ড সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা ন্যায়বিচারের একটি মাইলফলক এবং আইনের শাসনের প্রতি আস্থার জায়গা আরও মজবুত করবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো.হাবিবুর রহমান বলেন,আমার মক্কেল আরমান আলী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেটি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেওয়া। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৯ মে রংপুর মহানগরীর দক্ষিণ মুলাটোল এলাকায় নিজ বাসায় আনজুমান বানু (৬৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আনজুমান বানু ছিলেন ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। ঘটনার সময় তিনি বাসায় একাই ছিলেন।

পরদিন নিহতের জামাতা এনায়েত হোসেন মহন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরমান আলী এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পাঁচ বছর ধরে চলা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

রায় শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন এই হত্যাকাণ্ড ছিল চরম নির্মম। দোষী ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পেরে আমরা তৃপ্ত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও স্বস্তি অনুভব করছে।”

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করে জানানো হয়,আমাদের মা হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি, তবে আমরা আজ ন্যায়বিচার পেয়েছি।”

এই রায়ের মাধ্যমে এক নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের বিচারিক সমাপ্তি ঘটল।বিচারপ্রক্রিয়ার এই সফল পরিণতি বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় করবে-এমনটাই মত সংশ্লিষ্টজনদের।

ডিএস./