০৬:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫

ধামইরহাটে আবারও ১৮ বাংলাদেশিকে পুশইন করল বিএসএফ

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন এবং সাপাহার সীমান্ত দিয়ে আরও ৪ জনসহ মোট ১৮ বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত থেকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে ধামইরহাটের কালুপাড়া সীমান্তে এবং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাপাহারের বামনপাড়া সীমান্তে এ দুটি ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, ১৪ বিজিবির কালুপাড়া বিওপির টহল হাবিলদার রুপন চাকমার নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ২৭১/১-এস থেকে প্রায় ৫০ গজ ভেতরে উপজেলার সাতানাপাড়া আমবাগান এলাকায় ৬ নারী, ১ কিশোরী, ৩ শিশু ও ৪ যুবকসহ মোট ১৪ জনকে ঘোরাঘুরি অবস্থায় আটক করে।

আটকরা হলেন- খুলনার মহারাজপুরের সাত্তার গাজীর ছেলে বাদশা মিয়া (২০) ও মো. ইমরান গাজী (৩৪), কয়রা উপজেলার রুহুল আমিন মোড়লের ছেলে নাজমুল হাসান (২৪), দিঘলিয়ার মাধবপুর গ্রামের মৃত কাশেম শেখের মেয়ে সুমা মোল্লা, মোজাদ্দের মোল্লার ছেলে রায়হান মোল্লা, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বালাম শিকদারের মেয়ে নুপুর খানম (২২), আসমাউল শেখের মেয়ে আশিকা (৪), বালাম শেখের মেয়ে মুনিয়া খাতুন (১৮), রহিম শেখের মেয়ে রাকেয়া শেখ (২৮), গুড্ডু শিকদারের ছেলে বাবু শিকদার (১৭), কামাল শিকদারের মেয়ে প্রিয়া শিকদার, পেরুলিয়া গ্রামের মিলন শেখের মেয়ে ফাতেমা শেখ (৭), কামাল শিকদারের স্ত্রী ববিতা শিকদার (৩৫) এবং যশোরের কোতয়ালী উপজেলার বসুনন্দিয়া গ্রামের জহির আলী খানের মেয়ে মোছাঃ দুলি বেগম (৪০)।

তারা দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরা ও বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতের মুম্বাই শহরে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। গত ৭ আগস্ট বিমানযোগে পুনে বিমানবন্দরে এনে পরবর্তীতে বালুরঘাট থানার মাধ্যমে ১২৩ সানাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃক গাড়িযোগে সীমান্ত পিলার ২৭১/১-এস সংলগ্ন এলাকায় এনে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। খবর পেয়ে বিজিবি তাদের আটক করে।

ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমাম জাফর বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাইনি। বিজিবি যদি আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করে, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অপরদিকে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আইহাই ইউনিয়নের বামনপাড়া সীমান্ত দিয়ে ২ নারী ও ২ শিশুকে বাংলাদেশে পুশ ইন করে বিএসএফ।

সাপাহারের বামনপাড়া বিওপির মেইন পিলার ২৪৬/২-এস থেকে প্রায় ৮০০ গজ ভেতরে রসুলপুর গ্রামের জামে মসজিদের পাশ থেকে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। আটকরা হলেন— নড়াইলের কালিয়া থানার উথুলি গ্রামের এমদাদুল হকের স্ত্রী হেনা খাতুন (৩৮), একই থানার চানপুর গ্রামের বলাম সিকদারের স্ত্রী রূপালি (৩৫) এবং তাদের সঙ্গে থাকা আড়াই বছরের শিশু রমজান ও ৮ বছরের শিশু চাদনী।

সাপাহারে আটক ব্যক্তিরাও কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে গিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে ‘চেকব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ছত্রাহাটি বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠায়। সেখান থেকে ভোরে তাদেরও বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়।

সাপাহার থানার ওসি আব্দুল আজিজ বলেন, “ভোরে বামনপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করলে বিজিবি তাদের আটক করে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বিজিবি দীর্ঘ দুই ঘণ্টা হাসপাতালে বসিয়ে রেখেও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না দেওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ডিএস./

ট্যাগ :

তিমুর লেস্তের জালে ৮ গোল বাংলাদেশের মেয়েদের

ধামইরহাটে আবারও ১৮ বাংলাদেশিকে পুশইন করল বিএসএফ

প্রকাশিত : ০৪:১৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন এবং সাপাহার সীমান্ত দিয়ে আরও ৪ জনসহ মোট ১৮ বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত থেকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে ধামইরহাটের কালুপাড়া সীমান্তে এবং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাপাহারের বামনপাড়া সীমান্তে এ দুটি ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, ১৪ বিজিবির কালুপাড়া বিওপির টহল হাবিলদার রুপন চাকমার নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ২৭১/১-এস থেকে প্রায় ৫০ গজ ভেতরে উপজেলার সাতানাপাড়া আমবাগান এলাকায় ৬ নারী, ১ কিশোরী, ৩ শিশু ও ৪ যুবকসহ মোট ১৪ জনকে ঘোরাঘুরি অবস্থায় আটক করে।

আটকরা হলেন- খুলনার মহারাজপুরের সাত্তার গাজীর ছেলে বাদশা মিয়া (২০) ও মো. ইমরান গাজী (৩৪), কয়রা উপজেলার রুহুল আমিন মোড়লের ছেলে নাজমুল হাসান (২৪), দিঘলিয়ার মাধবপুর গ্রামের মৃত কাশেম শেখের মেয়ে সুমা মোল্লা, মোজাদ্দের মোল্লার ছেলে রায়হান মোল্লা, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বালাম শিকদারের মেয়ে নুপুর খানম (২২), আসমাউল শেখের মেয়ে আশিকা (৪), বালাম শেখের মেয়ে মুনিয়া খাতুন (১৮), রহিম শেখের মেয়ে রাকেয়া শেখ (২৮), গুড্ডু শিকদারের ছেলে বাবু শিকদার (১৭), কামাল শিকদারের মেয়ে প্রিয়া শিকদার, পেরুলিয়া গ্রামের মিলন শেখের মেয়ে ফাতেমা শেখ (৭), কামাল শিকদারের স্ত্রী ববিতা শিকদার (৩৫) এবং যশোরের কোতয়ালী উপজেলার বসুনন্দিয়া গ্রামের জহির আলী খানের মেয়ে মোছাঃ দুলি বেগম (৪০)।

তারা দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরা ও বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতের মুম্বাই শহরে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। গত ৭ আগস্ট বিমানযোগে পুনে বিমানবন্দরে এনে পরবর্তীতে বালুরঘাট থানার মাধ্যমে ১২৩ সানাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃক গাড়িযোগে সীমান্ত পিলার ২৭১/১-এস সংলগ্ন এলাকায় এনে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। খবর পেয়ে বিজিবি তাদের আটক করে।

ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমাম জাফর বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাইনি। বিজিবি যদি আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করে, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অপরদিকে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আইহাই ইউনিয়নের বামনপাড়া সীমান্ত দিয়ে ২ নারী ও ২ শিশুকে বাংলাদেশে পুশ ইন করে বিএসএফ।

সাপাহারের বামনপাড়া বিওপির মেইন পিলার ২৪৬/২-এস থেকে প্রায় ৮০০ গজ ভেতরে রসুলপুর গ্রামের জামে মসজিদের পাশ থেকে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। আটকরা হলেন— নড়াইলের কালিয়া থানার উথুলি গ্রামের এমদাদুল হকের স্ত্রী হেনা খাতুন (৩৮), একই থানার চানপুর গ্রামের বলাম সিকদারের স্ত্রী রূপালি (৩৫) এবং তাদের সঙ্গে থাকা আড়াই বছরের শিশু রমজান ও ৮ বছরের শিশু চাদনী।

সাপাহারে আটক ব্যক্তিরাও কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে গিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে ‘চেকব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ছত্রাহাটি বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠায়। সেখান থেকে ভোরে তাদেরও বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়।

সাপাহার থানার ওসি আব্দুল আজিজ বলেন, “ভোরে বামনপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করলে বিজিবি তাদের আটক করে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বিজিবি দীর্ঘ দুই ঘণ্টা হাসপাতালে বসিয়ে রেখেও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না দেওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ডিএস./