০২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে হঠিয়ে দক্ষিণ সুদানে পাঠাতে চায় দখলদাররা

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে হঠিয়ে দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তর করতে চায় ইসরায়েল। পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির সঙ্গে ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে আলোচনাও শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভা।

দুই দেশের এই আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত ও ওয়াকিবহাল ৬টি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এপি নিউজ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) মার্কিন সংবাদসংস্থাটি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচনা কোন পর্যায়ে আছে, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। তবে সত্যিই যদি এ ইস্যুতে দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে ইসরায়েলের সমঝোতা হয়, তাহলে গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য তা হবে একটি বড় দুঃসংবাদ। কারণ, ইসরায়েল তার পরিকল্পনায় সফল হলে যুদ্ধ ও সংঘাতপীড়িত জন্মভূমি থেকে এমন এক দেশে যেতে হবে গাজাবাসীকে, যেখানে চরম দারিদ্র্য এবং প্রায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি চলছে। সেইসঙ্গে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের ঝুঁকি তো আছেই।

গাজার ফিলিস্তিনিদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের ব্যাপারে প্রথম আগ্রহ জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হওয়ার পর একাধিকবার তিনি বলেছেন যে গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তিনি ‘নিরাপদ’ ও ‘সংঘাতের ঝুঁকিমুক্ত’ কোনো দেশে স্থানান্তর করতে চান। বিভিন্ন দেশকে এ ইস্যুতে এগিয়ে আসা এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করার আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে এ বিষয়ে আর কথা বাড়াননি ট্রাম্প।

তবে, অতি সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, ট্রাম্প একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে ট্রাম্প যা বলেছেন, তার সঙ্গে একমত তিনি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম আই২৪-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমি যতদূর জানি, যুদ্ধের আইন হলো যে এলাকায় যুদ্ধ হবে—সেখান থেকে বেসামরিক লোকজনকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া, তারপর পূর্ণ শক্তি দিয়ে শত্রুকে মোকাবিলা করা।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ইসরায়েল এবং দক্ষিণ সুদান—উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এপি। তবে, কোনো দেশের কর্মকর্তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে দক্ষিণ সুদানে কর্মরত একটি মার্কিন লবিং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী জোয়ে স্লাভিক এপি নিউজকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি দক্ষিণ সুদানের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন যে সামনে ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল দক্ষিণ সুদানে আসছে এবং তাদের এই সফরের প্রধান ‍উদ্দেশ্য হলো গাজার ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য সম্ভাব্য এলাকা নির্বাচন করা।

এপি নিউজকে স্লাভিক বলেন, দক্ষিণ সুদানের সবচেয়ে সড় সংকট হলো দারিদ্র্য ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট। গাজার ফিলিস্তিনিদের যদি সেখানে স্থানান্তর করা হয়, তাহলে ইসরায়েলের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাবে দক্ষিণ সুদান। তাছাড়া দক্ষিণ সুদানের ধনী ও অভিজাত শ্রেণীর বেশ কয়েক জনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করলে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জোর সম্ভাবনা আছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, দারিদ্র্যপীড়িত সুদান এখন হন্যে হয়ে বন্ধুত্বের হাত খুঁজছে, আর ইসরায়েল সেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

ডিএস/

পরিবেশ রক্ষার সারাদেশেই বৃক্ষরোপন কর্মসুচি চালু হওয়া উচিত: বিভাগীয় কমিশনার

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে হঠিয়ে দক্ষিণ সুদানে পাঠাতে চায় দখলদাররা

প্রকাশিত : ০৪:৩০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে হঠিয়ে দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তর করতে চায় ইসরায়েল। পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির সঙ্গে ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে আলোচনাও শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভা।

দুই দেশের এই আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত ও ওয়াকিবহাল ৬টি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এপি নিউজ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) মার্কিন সংবাদসংস্থাটি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচনা কোন পর্যায়ে আছে, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। তবে সত্যিই যদি এ ইস্যুতে দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে ইসরায়েলের সমঝোতা হয়, তাহলে গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য তা হবে একটি বড় দুঃসংবাদ। কারণ, ইসরায়েল তার পরিকল্পনায় সফল হলে যুদ্ধ ও সংঘাতপীড়িত জন্মভূমি থেকে এমন এক দেশে যেতে হবে গাজাবাসীকে, যেখানে চরম দারিদ্র্য এবং প্রায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি চলছে। সেইসঙ্গে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের ঝুঁকি তো আছেই।

গাজার ফিলিস্তিনিদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের ব্যাপারে প্রথম আগ্রহ জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হওয়ার পর একাধিকবার তিনি বলেছেন যে গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তিনি ‘নিরাপদ’ ও ‘সংঘাতের ঝুঁকিমুক্ত’ কোনো দেশে স্থানান্তর করতে চান। বিভিন্ন দেশকে এ ইস্যুতে এগিয়ে আসা এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করার আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে এ বিষয়ে আর কথা বাড়াননি ট্রাম্প।

তবে, অতি সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, ট্রাম্প একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে ট্রাম্প যা বলেছেন, তার সঙ্গে একমত তিনি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম আই২৪-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমি যতদূর জানি, যুদ্ধের আইন হলো যে এলাকায় যুদ্ধ হবে—সেখান থেকে বেসামরিক লোকজনকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া, তারপর পূর্ণ শক্তি দিয়ে শত্রুকে মোকাবিলা করা।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ইসরায়েল এবং দক্ষিণ সুদান—উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এপি। তবে, কোনো দেশের কর্মকর্তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে দক্ষিণ সুদানে কর্মরত একটি মার্কিন লবিং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী জোয়ে স্লাভিক এপি নিউজকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি দক্ষিণ সুদানের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন যে সামনে ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল দক্ষিণ সুদানে আসছে এবং তাদের এই সফরের প্রধান ‍উদ্দেশ্য হলো গাজার ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য সম্ভাব্য এলাকা নির্বাচন করা।

এপি নিউজকে স্লাভিক বলেন, দক্ষিণ সুদানের সবচেয়ে সড় সংকট হলো দারিদ্র্য ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট। গাজার ফিলিস্তিনিদের যদি সেখানে স্থানান্তর করা হয়, তাহলে ইসরায়েলের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাবে দক্ষিণ সুদান। তাছাড়া দক্ষিণ সুদানের ধনী ও অভিজাত শ্রেণীর বেশ কয়েক জনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করলে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জোর সম্ভাবনা আছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, দারিদ্র্যপীড়িত সুদান এখন হন্যে হয়ে বন্ধুত্বের হাত খুঁজছে, আর ইসরায়েল সেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

ডিএস/