১১:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আজ বিশ্ব চকলেট দিবস

আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। চকলেটের নাম শুনলেই ছোট বড়, ছেলে মেয়ে সকলের জিভেই জল চলে আসে। চকলেট নিয়ে এমন একটি বিশেষ দিন থাকলেও বাড়ির বড়দের কাছে এর জন্য ছোটোদের আবদারের কোন সময়সীমা নেই। শুধু ছোটোরাই নয় বড়দেরও অনেকেই সুযোগ পেলেই মন ভরে চকলেটের স্বাদ নিয়ে থাকেন। আবার অনেকের কাছে চকলেট খাওয়া একরকম অভ্যাসও। অনেক ব্যক্তি তাদের পকেটে বিভিন্ন ধরণের টফি, ক্যান্ডি রাখেন। চলার পথে বা কাজের মধ্যে থাকাকালীন চুষে চুষে তার স্বাদ গ্রহণ করে থাকেন।

রোজ ডে, প্রপোজ ডে’র পর আজ চকোলেট ডে। এরপর আসছে ভ্যালেন্টাইন’স ডে। তার আগে আজকের দিনটি ভ্যালেন্টাইন’স সপ্তাহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন বলেও মনে করা হয়। কারণ, এই সময় অনেকেই প্রিয়জনকে গোলাপের পাশাপাশি চকলেট উপহার দিয়ে ভালবাসার সপ্তাহ উদযাপন করে থাকেন। কোন কারণে যদি প্রিয়জনের অভিমান হয়ে থাকে তা ভাঙাতেও চকলেট উপহার দিয়ে তার মানভঞ্জন করার চেষ্টা করা হয়।

আসুন তবে জেনে নেয়া যাক চকলেটের আদি কথা।

এর স্বাদ প্রথম পেয়েছিল লাতিন আমেরিকার মায়া সভ্যতা। ‘চকোলেট’ নামটিও এসেছে তাদের ভাষার ‘স্কোকোলেট’ থেকে। যার অর্থ অম্ল পানীয়। কোকো গাছের বীজ থেকে প্রস্তুত এই চকোলেট গোড়ার দিকে মূলত পানীয় হিসাবেই ব্যবহার করা হত। সে আমলে আবার অনেকে তা রান্নার মশলা হিসাবেও ব্যবহার করতেন। তখন কেবল মায়া রাজ পরিবারের সদস্য, প্রশাসক, ধর্মগুরু, সৈনিক এবং সম্মানীয় বণিক সম্প্রদায়ই একমাত্র এর স্বাদ আস্বাদন করতে পারত।

পরবর্তীকালে মায়াদের কাছ থেকে চকোলেটের ব্যবহার শিখে নেয় আজটেকরা। তাদের আরাধ্য দেবতা কোয়েটজালকটলই নাকি এই কোকো গাছ পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন। আর এই গাছের ফল খেলে সাম্রাজ্য এবং ক্ষমতা দুই-ই জয় করা যায়। এমনই বিশ্বাস ছিল আজটেকদের। সেই কারণে ওই দেশে কোকো গাছ দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয়। এমনকি দেবতাকে চকোলেট উৎসর্গ করারও নজির রয়েছে। আবার চকোলেটকে আজটেকরা যে মুদ্রা হিসাবেও ব্যবহার করতেন তারও প্রমাণ মেলে। চকোলেটকে তারা এতটাই সমৃদ্ধশালী বলে মনে কর, যে একমাত্র সোনার পাত্রেই তা পরিবেশন করতে হত। শুধু তাই নয়, একবার ব্যবহারের পরই পাত্রটি ফেলে দেওয়ারও রেওয়াজ ছিল। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, আজটেকরাজ মনটেজুমা দিনে এরকম ৫০ পাত্র ঘন চকোলেট পান করতেন।

আধুনিক চকোলেটের প্রথম কারখানা গড়ে ওঠে স্পেনে। জানেন কি, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চকোলেট কোনটি? ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্ক। জানা যায়, জর্জ ক্যাডবেরি (জুনিয়র) স্পেন থেকে ক্যাডবেরি বারের রেসিপিটি শিখে এসে প্রথম এটি বানান ১৯০৫ সালে। তবে ক্যাডবেরি কোম্পানির প্রথম সদস্য হিসাবে ধরা হয় জন ক্যাডবেরিকেই। এর আগে বার্মিংহামের বুলস্ট্রীটে তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। বর্তমানে অবশ্য পশ্চিম এশিয়ার দেশ যেমন, ঘানা, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে উন্নতমানের কোকো বীজ আমদানি করে ক্যাডবেরি প্রস্তুত করা হয়।

বিবি/জেজে

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

কবি জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবস আজ

আজ বিশ্ব চকলেট দিবস

প্রকাশিত : ০৯:৩৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। চকলেটের নাম শুনলেই ছোট বড়, ছেলে মেয়ে সকলের জিভেই জল চলে আসে। চকলেট নিয়ে এমন একটি বিশেষ দিন থাকলেও বাড়ির বড়দের কাছে এর জন্য ছোটোদের আবদারের কোন সময়সীমা নেই। শুধু ছোটোরাই নয় বড়দেরও অনেকেই সুযোগ পেলেই মন ভরে চকলেটের স্বাদ নিয়ে থাকেন। আবার অনেকের কাছে চকলেট খাওয়া একরকম অভ্যাসও। অনেক ব্যক্তি তাদের পকেটে বিভিন্ন ধরণের টফি, ক্যান্ডি রাখেন। চলার পথে বা কাজের মধ্যে থাকাকালীন চুষে চুষে তার স্বাদ গ্রহণ করে থাকেন।

রোজ ডে, প্রপোজ ডে’র পর আজ চকোলেট ডে। এরপর আসছে ভ্যালেন্টাইন’স ডে। তার আগে আজকের দিনটি ভ্যালেন্টাইন’স সপ্তাহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন বলেও মনে করা হয়। কারণ, এই সময় অনেকেই প্রিয়জনকে গোলাপের পাশাপাশি চকলেট উপহার দিয়ে ভালবাসার সপ্তাহ উদযাপন করে থাকেন। কোন কারণে যদি প্রিয়জনের অভিমান হয়ে থাকে তা ভাঙাতেও চকলেট উপহার দিয়ে তার মানভঞ্জন করার চেষ্টা করা হয়।

আসুন তবে জেনে নেয়া যাক চকলেটের আদি কথা।

এর স্বাদ প্রথম পেয়েছিল লাতিন আমেরিকার মায়া সভ্যতা। ‘চকোলেট’ নামটিও এসেছে তাদের ভাষার ‘স্কোকোলেট’ থেকে। যার অর্থ অম্ল পানীয়। কোকো গাছের বীজ থেকে প্রস্তুত এই চকোলেট গোড়ার দিকে মূলত পানীয় হিসাবেই ব্যবহার করা হত। সে আমলে আবার অনেকে তা রান্নার মশলা হিসাবেও ব্যবহার করতেন। তখন কেবল মায়া রাজ পরিবারের সদস্য, প্রশাসক, ধর্মগুরু, সৈনিক এবং সম্মানীয় বণিক সম্প্রদায়ই একমাত্র এর স্বাদ আস্বাদন করতে পারত।

পরবর্তীকালে মায়াদের কাছ থেকে চকোলেটের ব্যবহার শিখে নেয় আজটেকরা। তাদের আরাধ্য দেবতা কোয়েটজালকটলই নাকি এই কোকো গাছ পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন। আর এই গাছের ফল খেলে সাম্রাজ্য এবং ক্ষমতা দুই-ই জয় করা যায়। এমনই বিশ্বাস ছিল আজটেকদের। সেই কারণে ওই দেশে কোকো গাছ দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয়। এমনকি দেবতাকে চকোলেট উৎসর্গ করারও নজির রয়েছে। আবার চকোলেটকে আজটেকরা যে মুদ্রা হিসাবেও ব্যবহার করতেন তারও প্রমাণ মেলে। চকোলেটকে তারা এতটাই সমৃদ্ধশালী বলে মনে কর, যে একমাত্র সোনার পাত্রেই তা পরিবেশন করতে হত। শুধু তাই নয়, একবার ব্যবহারের পরই পাত্রটি ফেলে দেওয়ারও রেওয়াজ ছিল। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, আজটেকরাজ মনটেজুমা দিনে এরকম ৫০ পাত্র ঘন চকোলেট পান করতেন।

আধুনিক চকোলেটের প্রথম কারখানা গড়ে ওঠে স্পেনে। জানেন কি, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চকোলেট কোনটি? ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্ক। জানা যায়, জর্জ ক্যাডবেরি (জুনিয়র) স্পেন থেকে ক্যাডবেরি বারের রেসিপিটি শিখে এসে প্রথম এটি বানান ১৯০৫ সালে। তবে ক্যাডবেরি কোম্পানির প্রথম সদস্য হিসাবে ধরা হয় জন ক্যাডবেরিকেই। এর আগে বার্মিংহামের বুলস্ট্রীটে তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। বর্তমানে অবশ্য পশ্চিম এশিয়ার দেশ যেমন, ঘানা, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে উন্নতমানের কোকো বীজ আমদানি করে ক্যাডবেরি প্রস্তুত করা হয়।

বিবি/জেজে