মানিকগঞ্জে স্বর্ণের দোকানে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতের ছোড়া গুলি ও ককটেলে আহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার এসআই আসলাম ও কনস্টেবল ওহেদ আলী। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এসআই আসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর ওহেদ আলীকে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৭/৮ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ককটেল ফাটিয়ে মানিকগঞ্জ পৌর শহরের স্বর্ণকারপট্টি এলাকায় নাগ জুয়েলার্সের ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর মালিককে জিম্মি করে কয়েকশ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে দুটি গাড়িতে করে পালিয়ে যায় তারা। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে দোকানের সিসি ক্যামেরায়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, প্যান্ট শার্ট পরিহিত ডাকাতদল বস্তা ও ব্যাগে স্বর্ণালংকার ঢোকাচ্ছে। একটি রিভলভার উঁচিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। ডাকাতির সময় আশপাশের দোকানদাররা পুরো ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেও ভয়ে কাছে আসতে সাহস পাননি। এ সময় বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ডাকাতি শেষে একটি হাইচ ও ট্যাক্সিতে করে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।
ডাকাতদল গড়পাড়া দরগ্রাম সাটুরিয়া সড়ক হয়ে পালানোর চেষ্টা করলে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে সাটুরিয়া থানা পুলিশ।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাটুরিয়া উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডাকাতদলের গাড়ি পুলিশ ব্যারিকেট দেখে ককটেল নিক্ষেপ করে গাড়ি রেখে গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতদের গুলিতে এসআই আসলাম ও কনস্টেবল ওহেদ আলী আহত হন। পরে জনগণের সহযোগিতায় সাটুরিয়ায় উত্তর কাওন্নারা এলাকা থেকে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নাগ জুয়েলার্সের মালিক চন্দ নাগ জানায়, তার উপস্থিতিতে বুধবার রাত ৭টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তার দোকানে প্রথমে দুই নারী কাস্টমার প্রবেশ করে। এরপরপরই ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ৭/৮ জন অস্ত্রধারী প্যান্ট শার্ট পরিহিত যুবক তার দোকানে অতকির্তভাবে ঢুকে তার এক কর্মচারীকে থাপ্পর দিয়ে তাদের কাছে থাকা ব্যাগের মধ্যে স্বর্ণালংকারগুলো ঢুকাতে থাকে। তাদের অধিকাংশের মুখোশধারী ছিল।
নাগ জুয়েলাসের মালিকের বড় ভাই চন্দন নাগ জানায়, এটি একটি পরিকল্পিত ডাকাতি। এর সাথে ডিবি পুলিশ জড়িত বলে তিনি দাবি করেছে।
এদিকে, স্বর্ণকার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঘুনাথ সরকার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছে কয়েকদিন আগে তাকে মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের কয়েকজন সদস্য ডেকে নিয়ে অবৈধ স্বর্ণের ব্যবসার করা হচ্ছে এই অভিযোগ এনে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান একজন ডাকাত গ্রেপ্তার ও দুই পুলিশ সদস্যদের আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।