১০:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার ২৫ থেকে ১২০%

দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে বা পল্লী অঞ্চলে বিতরণকৃত ঋণের ৬১ শতাংশ বিতরণ করা হয় এনজিও এবং মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন বা ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ঋণের সুদহার ২৫ থেকে ১২০ শতাংশ পর্যন্ত। এই অবস্থা চলতে থাকলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসাইন প্রধানিয়া।

বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ আয়োজিত ইম্প্যাক্ট অব ব্যাংক বেজড রুরাল অ্যান্ড আরবান ফাইন্যান্সিং অন ইকনোমিক গ্রোথ অব বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। আলী হোসাইন প্রধানিয়া বলেন, আমাদের দেশে গ্রামীণ পর্যায়ে মাত্র ৩৯ শতাংশ ঋণ সরাসরি ব্যাংক বিতরণ করে থাকে। বাকি ৬১ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে বিভিন্ন এনজিও এবং ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে হলে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণকে স্বল্প সুদে সরাসরি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কখনোই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ২০ বছর আগে যেসব গ্রাহক ব্যাংক থেকে ১৫ হাজার টাকা নিতেন এই মুহূর্তে তারা ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নিচ্ছেন।

ঋণ নেয়ার পরিমাণ তাদের বেড়েছে কিন্তু নতুন গ্রাহক সৃষ্টি হয়নি। টেকসই উন্নয়নে পৌঁছাতে গেলে সকল পরিবারকেই অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি ব্যাংকের এমডি বলেন, আমাদের দেশে সেক্টরভিত্তিক ঋণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক কোনো গবেষণা নেই। আমরা জানি না কৃষি সেক্টরে কি পরিমাণ ঋণ বিতরণ প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী সকল ব্যাংক মোট বিতরণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করে আসছে। এই বিষয়টিও বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। আমাদের দেশের এখন অন্যতম বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। অন্যান্য সেক্টরের খেলাপি ঋণের চেয়ে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ খুবই কম। গড়ে ১০ শতাংশেরও নিচে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং ব্যাংক খাত রক্ষায় এই ঋণের বিতরণ আরো বৃদ্ধি করা যায় কিনা এ বিষয়ে ভাবার সময় এসেছে, যোগ করেন তিনি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, যে কোনো ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে পরিমাণগত দিক বিবেচনার চেয়ে গুণগত মান বিবেচনা করা অধিক জরুরি।

পুরাতন গ্রাহককে বারবার ঋণ না দিয়ে দেশের ব্যাংকগুলোর প্রতি নতুন গ্রাহক তৈরির আহ্বান জানান মনিরুজ্জামান। তিনি আরও জানান, যে সব ব্যাংকের শাখা গ্রামাঞ্চলে নেই তারা অনেক সময় এনজিওর মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করত। কিন্তু এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে। গ্রামাঞ্চলে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের নীতিগত সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

ট্যাগ :

১০০ রাফায়েল যুদ্ধবিমান ইউক্রেনকে দেবে ফ্রান্স

কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার ২৫ থেকে ১২০%

প্রকাশিত : ০৯:২৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০১৯

দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে বা পল্লী অঞ্চলে বিতরণকৃত ঋণের ৬১ শতাংশ বিতরণ করা হয় এনজিও এবং মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন বা ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ঋণের সুদহার ২৫ থেকে ১২০ শতাংশ পর্যন্ত। এই অবস্থা চলতে থাকলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসাইন প্রধানিয়া।

বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ আয়োজিত ইম্প্যাক্ট অব ব্যাংক বেজড রুরাল অ্যান্ড আরবান ফাইন্যান্সিং অন ইকনোমিক গ্রোথ অব বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। আলী হোসাইন প্রধানিয়া বলেন, আমাদের দেশে গ্রামীণ পর্যায়ে মাত্র ৩৯ শতাংশ ঋণ সরাসরি ব্যাংক বিতরণ করে থাকে। বাকি ৬১ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে বিভিন্ন এনজিও এবং ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে হলে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণকে স্বল্প সুদে সরাসরি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কখনোই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ২০ বছর আগে যেসব গ্রাহক ব্যাংক থেকে ১৫ হাজার টাকা নিতেন এই মুহূর্তে তারা ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নিচ্ছেন।

ঋণ নেয়ার পরিমাণ তাদের বেড়েছে কিন্তু নতুন গ্রাহক সৃষ্টি হয়নি। টেকসই উন্নয়নে পৌঁছাতে গেলে সকল পরিবারকেই অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি ব্যাংকের এমডি বলেন, আমাদের দেশে সেক্টরভিত্তিক ঋণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক কোনো গবেষণা নেই। আমরা জানি না কৃষি সেক্টরে কি পরিমাণ ঋণ বিতরণ প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী সকল ব্যাংক মোট বিতরণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করে আসছে। এই বিষয়টিও বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। আমাদের দেশের এখন অন্যতম বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। অন্যান্য সেক্টরের খেলাপি ঋণের চেয়ে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ খুবই কম। গড়ে ১০ শতাংশেরও নিচে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং ব্যাংক খাত রক্ষায় এই ঋণের বিতরণ আরো বৃদ্ধি করা যায় কিনা এ বিষয়ে ভাবার সময় এসেছে, যোগ করেন তিনি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, যে কোনো ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে পরিমাণগত দিক বিবেচনার চেয়ে গুণগত মান বিবেচনা করা অধিক জরুরি।

পুরাতন গ্রাহককে বারবার ঋণ না দিয়ে দেশের ব্যাংকগুলোর প্রতি নতুন গ্রাহক তৈরির আহ্বান জানান মনিরুজ্জামান। তিনি আরও জানান, যে সব ব্যাংকের শাখা গ্রামাঞ্চলে নেই তারা অনেক সময় এনজিওর মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করত। কিন্তু এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে। গ্রামাঞ্চলে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের নীতিগত সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত বলে জানান তিনি।