১০:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

‌‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললে বিষ খেয়েও মরতে পারি’

  • বাবুল হৃদয়
  • প্রকাশিত : ০৫:৩০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০২০
  • 35

জন্ম হওয়া মাত্র অসমতার নির্যাতনের শিকার হয়েছি বলেছেন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি, নারীযোদ্ধা সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা। ২৫ নভেম্বর ‌‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে মানিকমিয়া এভিনিউ তার বাসায় বসে একান্ত সাক্ষাতকারে ‘আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’কে তিনি একথা বলেন।

রুবিনা আক্তার মীরা আরো বলেন, জন্মের প্রথমদিন থেকেই মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আমার বড় ভাই জন্ম নেয়ার পরপর আমার বাবা জোড়ে আজানের ধ্বনি দিয়েছেন, আমি জন্মেছি তখন তিনি আজান দেয়নী। এটা আমার জন্য প্রথম অসমতার নির্যাতন।
স্কুলে ভর্তির পর পড়তে হয় আরেক নির্য়াতনের মুখে, স্কুলে যাওয়ার পথে ছেলেরা ইফটিজিং করলে বাসায় বিচার দিলে আমাদের দোষ দিত, বলতো তোমরা ছেলেদের কাছে যাও কেন? শুধু মেয়ে বলে এমন মিথ্যা সহ্য করতে হত। এই নিয়ে বারাবারি করলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হতো।

আমাদের গার্ডিয়ানরা ভেবেই নিত মেয়েদের আবার এতো পড়াশুনা কিশের, ওরাতো পরের ঘরেই চলে যাবে। এভাবে আমাদের প্রতি একটি অবিচার
করতো যা নির্যাতনের শামিল। আমরা আমাদের পরিবার থেকেই প্রথম নিয়াতনের শিকার হই। এরপর বাইরে অফিস-আদালত গাড়িতে. রাতে পথচলতে নানা নির্যাতনের শিকার হই আমরা নারীরা। আমাদের সমাজ, পরিবার. আমরাই আমাদের নারীদের ছোট করে রাখি। আসলে আমাদের সবার আগে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তা না হলে এই যে মাঝে মাঝে নারী নির্যাতন বেড়ে যায় তা আর কমবে না।

রুবিনা আক্তার মীরা আরো বলেন, নারী নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে হলে নারীকে সাহসী হতে হবে। আজ আমি সাহসী বলেই সেই অজোপাড়া গাঁ থেকে একটি নিন্মবিত্ত পরিবার থেকে যুদ্ধকরে এ পর্যন্ত এসেছি। এখনো প্রতি নিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছি কখনো সংসার নিয়ে, সমাজ নিয়ে, পরিবার নিয়ে।
আপনি মনে হয় জানেন, ৮০ দশকের ছাত্রনেতা শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এর নির্বাচিত সাবেক জিএস ও আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরদারের সহধর্মিনী আমি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। আমার এক ছেলে ও এক মেয়েসহ তাকে দেখা শুনা করতে হয়। ছেলেটি অষ্ট্রেলিয়া পড়াশুনা করতো, খরচ দিতে পারিনা বলে তাকে দেশে নিয়ে এসেছি। মেয়েটি দশম শ্রেনীতে পড়ে। জন্মের পর থেকে যুদ্ধ করে করে আজো যুদ্ধের মধ্যে আছি। আমি একজন সংগ্রামী নারী। দেশের জন্য, পরিবারে জন্য, সমাজের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছি। এখনো দিন-রাতে মাত্র ৪ ঘন্টা ঘুমাই।
সংগ্রামী এই নারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ। যিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি ৬ মার্চ ১৯৭৫ সালে বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করেন।
রুবিনা মিরা সাবেক ঢাবি ছাত্রলীগ নেত্রী, কেন্দ্রীয় যুব মহিলালীগের সাবেক সহসভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক দপ্তর সহসম্পাদক ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রিড়া সংস্থার সহসভাপতি।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এমপি বরিশালে মা মাটি মানুষের কল্যাণে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

অ্যাডভোকেট সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের পুরোটা জীবন বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তার আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে আমি সেভাবেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। আমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে তার যে মহা কর্মযজ্ঞ পরিকল্পনা, আমি তাতে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাই, অংশীদার হতে চাই।

রুবিনা মিরা আরো বলেন, মা আমাকে জন্ম দিয়েছে সত্যি কিন্তু সত্যিকারের মায়ের ভুমিকা পালন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছেন। ডেকে এনে এমপি করেছেন। তার মতো এমন প্রধানমন্ত্রী আর কোন দিন আসবে কি না জানি না। তিনি জনগণের কল্যানের জন্য এসেছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য এসেছেন। তিনিই আমার মা। তার জন্য আমি জীবন দিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বললে বিষ খেয়েও মরতে পারি।

সংগ্রামী এ নারী আরো বলেন, আমার জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় কেটেছে রাজনীতির মাঠে। আমি মানুষের জন্য কাজ করে গেছি, যাচ্ছি এবং যাব ভবিষ্যতেও। কারণ তাদের ছাড়া বেঁচে থাকাটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আমি নিজের জন্য কখনো রাজনীতি করি না, করি মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে তৃণমূলের মানুষের সাথে কাজ করে আমি নিজেকে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি, আমার এলাকাবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমৃত্যু কাজ করে যাবো।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

জনপ্রিয়

ইরানে বড় শহরগুলোতে বিমান চলাচল বন্ধ, সিরিয়া-ইরাকে ব্যাপক বিস্ফোরণ

‌‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললে বিষ খেয়েও মরতে পারি’

প্রকাশিত : ০৫:৩০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০২০

জন্ম হওয়া মাত্র অসমতার নির্যাতনের শিকার হয়েছি বলেছেন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি, নারীযোদ্ধা সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা। ২৫ নভেম্বর ‌‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে মানিকমিয়া এভিনিউ তার বাসায় বসে একান্ত সাক্ষাতকারে ‘আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’কে তিনি একথা বলেন।

রুবিনা আক্তার মীরা আরো বলেন, জন্মের প্রথমদিন থেকেই মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আমার বড় ভাই জন্ম নেয়ার পরপর আমার বাবা জোড়ে আজানের ধ্বনি দিয়েছেন, আমি জন্মেছি তখন তিনি আজান দেয়নী। এটা আমার জন্য প্রথম অসমতার নির্যাতন।
স্কুলে ভর্তির পর পড়তে হয় আরেক নির্য়াতনের মুখে, স্কুলে যাওয়ার পথে ছেলেরা ইফটিজিং করলে বাসায় বিচার দিলে আমাদের দোষ দিত, বলতো তোমরা ছেলেদের কাছে যাও কেন? শুধু মেয়ে বলে এমন মিথ্যা সহ্য করতে হত। এই নিয়ে বারাবারি করলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হতো।

আমাদের গার্ডিয়ানরা ভেবেই নিত মেয়েদের আবার এতো পড়াশুনা কিশের, ওরাতো পরের ঘরেই চলে যাবে। এভাবে আমাদের প্রতি একটি অবিচার
করতো যা নির্যাতনের শামিল। আমরা আমাদের পরিবার থেকেই প্রথম নিয়াতনের শিকার হই। এরপর বাইরে অফিস-আদালত গাড়িতে. রাতে পথচলতে নানা নির্যাতনের শিকার হই আমরা নারীরা। আমাদের সমাজ, পরিবার. আমরাই আমাদের নারীদের ছোট করে রাখি। আসলে আমাদের সবার আগে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তা না হলে এই যে মাঝে মাঝে নারী নির্যাতন বেড়ে যায় তা আর কমবে না।

রুবিনা আক্তার মীরা আরো বলেন, নারী নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে হলে নারীকে সাহসী হতে হবে। আজ আমি সাহসী বলেই সেই অজোপাড়া গাঁ থেকে একটি নিন্মবিত্ত পরিবার থেকে যুদ্ধকরে এ পর্যন্ত এসেছি। এখনো প্রতি নিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছি কখনো সংসার নিয়ে, সমাজ নিয়ে, পরিবার নিয়ে।
আপনি মনে হয় জানেন, ৮০ দশকের ছাত্রনেতা শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এর নির্বাচিত সাবেক জিএস ও আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরদারের সহধর্মিনী আমি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। আমার এক ছেলে ও এক মেয়েসহ তাকে দেখা শুনা করতে হয়। ছেলেটি অষ্ট্রেলিয়া পড়াশুনা করতো, খরচ দিতে পারিনা বলে তাকে দেশে নিয়ে এসেছি। মেয়েটি দশম শ্রেনীতে পড়ে। জন্মের পর থেকে যুদ্ধ করে করে আজো যুদ্ধের মধ্যে আছি। আমি একজন সংগ্রামী নারী। দেশের জন্য, পরিবারে জন্য, সমাজের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছি। এখনো দিন-রাতে মাত্র ৪ ঘন্টা ঘুমাই।
সংগ্রামী এই নারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ। যিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি ৬ মার্চ ১৯৭৫ সালে বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করেন।
রুবিনা মিরা সাবেক ঢাবি ছাত্রলীগ নেত্রী, কেন্দ্রীয় যুব মহিলালীগের সাবেক সহসভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক দপ্তর সহসম্পাদক ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রিড়া সংস্থার সহসভাপতি।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এমপি বরিশালে মা মাটি মানুষের কল্যাণে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

অ্যাডভোকেট সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের পুরোটা জীবন বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তার আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে আমি সেভাবেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। আমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে তার যে মহা কর্মযজ্ঞ পরিকল্পনা, আমি তাতে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাই, অংশীদার হতে চাই।

রুবিনা মিরা আরো বলেন, মা আমাকে জন্ম দিয়েছে সত্যি কিন্তু সত্যিকারের মায়ের ভুমিকা পালন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছেন। ডেকে এনে এমপি করেছেন। তার মতো এমন প্রধানমন্ত্রী আর কোন দিন আসবে কি না জানি না। তিনি জনগণের কল্যানের জন্য এসেছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য এসেছেন। তিনিই আমার মা। তার জন্য আমি জীবন দিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বললে বিষ খেয়েও মরতে পারি।

সংগ্রামী এ নারী আরো বলেন, আমার জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় কেটেছে রাজনীতির মাঠে। আমি মানুষের জন্য কাজ করে গেছি, যাচ্ছি এবং যাব ভবিষ্যতেও। কারণ তাদের ছাড়া বেঁচে থাকাটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আমি নিজের জন্য কখনো রাজনীতি করি না, করি মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে তৃণমূলের মানুষের সাথে কাজ করে আমি নিজেকে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি, আমার এলাকাবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমৃত্যু কাজ করে যাবো।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ