০১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের সহিংসতা!

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন নদী ও পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে পাশ্ববর্তী কৃষি জমি ও ঘর বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। এই বালু উত্তোলনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারি ও স্থানীয় আ.লীগ অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে “আজকের বিজনেস বাংলাদেশ” পত্রিকার প্রতিবেদকের কাছে বেড়িয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ওয়াপদা বাজার, পাকার মাথা, খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি পাকার মাথা, বাগডোরা, মরাশতী, রাজপুর ইনিয়নের তিস্তার চর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা, মরাশতী (গোরবারের ঘাট), পশ্চিম গুড়িয়াদহ, মহেন্দ্রনগর, হারাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাড়ী সংলগ্ন এয়ারপোর্ট পাকার মাথা এলাকায় চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। বেশিরভাগ এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং তিস্তা ও ধরলা নদীর চর দখল করে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। কেউ কিছু বলতে পারে না। প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হয় তাদের। গোপনে স্থানীয় ভুমি অফিসে অভিযোগ দিয়েও লাভ হয় না। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করছেন এই বালু খেকোরা। গোকুন্ডা ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ বলেন, আমার এলাকার বেশিরভাগ রাস্তার কাজের বালু নদী থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মরাশতীতে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছে।
এদিকে, শুক্রবার তিস্তার চর থেকে বালু বিক্রিতে বাধা প্রদান করায় স্থানীয় গোকুন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাথে বালু ব্যাবসায়ী রুহুল আমিন দুলু ও রিপন সিন্ডিকেটের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চর দখল করে বালু বিক্রি করায় বাঁধা প্রদান করেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতারা। বাঁধা না মেনে বালু বিক্রি করায় দুটি ট্রাক্টর আটক করে ছাত্রলীগের নেতারা। পরে অস্ত্র হাতে নিয়ে দুলু ও রিপন সিন্ডিকেটরা মিছিল করে ট্রাক্টর দুটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গোকুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অফিসে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। মতবিনিময় সভা শেষ হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা হামলা করে ওই আওয়ামীলীগ অফিসে। হামলায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনার পর থেকেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ওই এলাকায়। যে কোনো মূহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের সহিংসতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বালু ব্যাবসায়ী ফরিদুল ধরলা নদীর চর থেকে ট্রাকে ট্রাকে বালু বিক্রি করছেন। সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে কথা বললে তিনি জানান প্রতি ট্রাক বালু আমি পাঁচশত টাকা করে বিক্রি করি। আমার বালু পাশ্ববর্তী ঢেপঢেপি এলাকায় আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজে দুই’শ গাড়ি দিয়েছি তারপর আরেকজন ঠিকাদারকে বালু দিচ্ছি। ওখানে দেওয়া শেষ হলেই আমি আপনাদের দিতে পারবো। ওই এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় নেতারাও বালু বিক্রি সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। তবে কয়েকদিন আগে তাদের ভিতর অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে এসব অভিযোগ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তাদের ভিতরে রফাদফা না হলে গন্ডগোলও হতে পারে।
সরেজমিনে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি বাগডোরা এলাকায় দেখা যায়, স্থানীয় রবিউল ইসলাম অবাধে বিক্রি করছেন তিস্তা চরের বালু। চর দখল করে বালু ব্যাবসা এটা তার নতুন কিছু নয়। তার ভয়ে টটস্ত এলাকাবাসী। কেউ ভয়ে অভিযোগ দিতে পারে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে ভূমি অফিসের লোকদের ম্যানেজ করেই বছর ব্যাপী চলে তার বালু ব্যাবসা। অন্যান্য এলাকায় বালু বিক্রি নিয়ে

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের সহিংসতা!

প্রকাশিত : ১২:০০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন নদী ও পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে পাশ্ববর্তী কৃষি জমি ও ঘর বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। এই বালু উত্তোলনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারি ও স্থানীয় আ.লীগ অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে “আজকের বিজনেস বাংলাদেশ” পত্রিকার প্রতিবেদকের কাছে বেড়িয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ওয়াপদা বাজার, পাকার মাথা, খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি পাকার মাথা, বাগডোরা, মরাশতী, রাজপুর ইনিয়নের তিস্তার চর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা, মরাশতী (গোরবারের ঘাট), পশ্চিম গুড়িয়াদহ, মহেন্দ্রনগর, হারাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাড়ী সংলগ্ন এয়ারপোর্ট পাকার মাথা এলাকায় চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। বেশিরভাগ এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং তিস্তা ও ধরলা নদীর চর দখল করে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। কেউ কিছু বলতে পারে না। প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হয় তাদের। গোপনে স্থানীয় ভুমি অফিসে অভিযোগ দিয়েও লাভ হয় না। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করছেন এই বালু খেকোরা। গোকুন্ডা ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ বলেন, আমার এলাকার বেশিরভাগ রাস্তার কাজের বালু নদী থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মরাশতীতে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছে।
এদিকে, শুক্রবার তিস্তার চর থেকে বালু বিক্রিতে বাধা প্রদান করায় স্থানীয় গোকুন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাথে বালু ব্যাবসায়ী রুহুল আমিন দুলু ও রিপন সিন্ডিকেটের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চর দখল করে বালু বিক্রি করায় বাঁধা প্রদান করেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতারা। বাঁধা না মেনে বালু বিক্রি করায় দুটি ট্রাক্টর আটক করে ছাত্রলীগের নেতারা। পরে অস্ত্র হাতে নিয়ে দুলু ও রিপন সিন্ডিকেটরা মিছিল করে ট্রাক্টর দুটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গোকুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অফিসে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। মতবিনিময় সভা শেষ হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা হামলা করে ওই আওয়ামীলীগ অফিসে। হামলায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনার পর থেকেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ওই এলাকায়। যে কোনো মূহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের সহিংসতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বালু ব্যাবসায়ী ফরিদুল ধরলা নদীর চর থেকে ট্রাকে ট্রাকে বালু বিক্রি করছেন। সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে কথা বললে তিনি জানান প্রতি ট্রাক বালু আমি পাঁচশত টাকা করে বিক্রি করি। আমার বালু পাশ্ববর্তী ঢেপঢেপি এলাকায় আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজে দুই’শ গাড়ি দিয়েছি তারপর আরেকজন ঠিকাদারকে বালু দিচ্ছি। ওখানে দেওয়া শেষ হলেই আমি আপনাদের দিতে পারবো। ওই এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় নেতারাও বালু বিক্রি সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। তবে কয়েকদিন আগে তাদের ভিতর অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে এসব অভিযোগ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তাদের ভিতরে রফাদফা না হলে গন্ডগোলও হতে পারে।
সরেজমিনে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি বাগডোরা এলাকায় দেখা যায়, স্থানীয় রবিউল ইসলাম অবাধে বিক্রি করছেন তিস্তা চরের বালু। চর দখল করে বালু ব্যাবসা এটা তার নতুন কিছু নয়। তার ভয়ে টটস্ত এলাকাবাসী। কেউ ভয়ে অভিযোগ দিতে পারে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে ভূমি অফিসের লোকদের ম্যানেজ করেই বছর ব্যাপী চলে তার বালু ব্যাবসা। অন্যান্য এলাকায় বালু বিক্রি নিয়ে