১১:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এসেছে করোনার টিকা কমেছে সংক্রমণ ও মৃত্যু

করোনাকেন্দ্রিক ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সুস্থ আছেন। দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার অনেক কম। তবে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে অপপ্রচারও রয়েছে। রোধ করতে হবে এ অপপ্রচার। এ ব্যাপারে দেশব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি করাও জরুরি। বিশ্বব্যাপী এক মহাতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। পৃথিবীব্যাপী এক মহাবিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে এই ভাইরাস। এ এক অদৃশ্য শক্তি, যার সঙ্গে অভিন্ন মানসিকতা নিয়ে লড়াই করছে সারাবিশ্ব। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা বিশ্বের জন্য কঠিন হলেও আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক ভালো। বিগত কয়েকদিনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মঙ্গলবার এক দিনে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫২৫ জন। দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ১০৭ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ১৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮০ হাজার ৭২৮ জন। এই তথ্য আমাদের আশাবাদী করলেও শঙ্কামুক্ত করে না। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গতবছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যে ১০ কোটি ৩৪ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২২ লাখ ৩৯ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩১তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সংক্রমিত দেশ ভারত, তারপর পাকিস্তান। আর তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ।
সংক্রমণ শুরুর ১০ মাস পর বাংলাদেশে করোনার টিকা এসেছে। জনস্বাস্থ্যবিদদের অনেকে মনে করেন মহামারি মোকাবিলার স্থায়ী সমাধান দিতে পারে এ টিকা। ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় একযোগে টিকাদান শুরু হবে। ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ লাখ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাঠিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ‘কোভিশিল্ড’ নামের টিকা উৎপাদন করেছে। বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ও বেক্সিমকো ফার্মার মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫০ লাখ টিকা দেশে এসেছে। সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাদের করোনাভাইরাসের টিকা দিতে চায়, সেই তথ্য জাতীয় সংসদকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে পরিকল্পনা সাজিয়েছে তার সরকার।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে মোট তিন কোটি ডোজ টিকার সরবরাহ পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো টিকা কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যম কর্মী, ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, ৫ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি সেবার (পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পরিবহণ কর্মী) চার লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরের দেড় লাখ কর্মী, ১ লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকও আছেন অগ্রাধিকারের তালিকায়। ইতিমধ্যে দেশের বেশিরভাগ জেলায় টিকা পৌঁছেছে। করোনার ভ্যাকসিন সুষ্ঠুভাবে বিতরণ এবং প্রয়োগ করা এখন বড় বিষয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন দিতে ৪২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সব ধরনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, সারাদেশে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস যেভাবে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে, ভ্যাকসিনও সফলতার সঙ্গে দিতে পারব। যেকোনো কাজ করতে গেলে কিছু সমালোচক থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা নিয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা আছে। প্রতিটি ভ্যাকসিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। একটু জ্বর হতে পারে, শরীর গরম বা মাথাব্যথা হতে পারে। প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, তাতে কি ওষুধ সেবন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে? সুস্থ জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ভ্যাকসিন নিতে হবে।
করোনাকেন্দ্রিক ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সুস্থ আছেন। দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার অনেক কম। তবে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে অপপ্রচারও রয়েছে। রোধ করতে হবে এ অপপ্রচার। এ ব্যাপারে দেশব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি করাও জরুরি।
মনে রাখতে হবে, দেশের কঠিন সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনলে অন্যের কিছুই করার থাকে না। করোনা মোকাবিলা করা প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে সম্ভব নয়। দেশবাসীকেও সাবধানে থাকতে হবে, মেনে চলতে হবে সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি। তবে বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক দিক হচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা দেশের জনগণ মানছে না। তারা তাদের ইচ্ছামতো চলাফেরা করছে।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনার টিকা নিলেও সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এটাই হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
আশার কথা, সরকারের নানা উদ্যোগ ও তৎপরতায় করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে। হয়তো অচিরেই আমরা করোনা থেকে মুক্ত হবো।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

এসেছে করোনার টিকা কমেছে সংক্রমণ ও মৃত্যু

প্রকাশিত : ১২:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

করোনাকেন্দ্রিক ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সুস্থ আছেন। দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার অনেক কম। তবে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে অপপ্রচারও রয়েছে। রোধ করতে হবে এ অপপ্রচার। এ ব্যাপারে দেশব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি করাও জরুরি। বিশ্বব্যাপী এক মহাতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। পৃথিবীব্যাপী এক মহাবিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে এই ভাইরাস। এ এক অদৃশ্য শক্তি, যার সঙ্গে অভিন্ন মানসিকতা নিয়ে লড়াই করছে সারাবিশ্ব। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা বিশ্বের জন্য কঠিন হলেও আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক ভালো। বিগত কয়েকদিনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মঙ্গলবার এক দিনে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫২৫ জন। দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ১০৭ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ১৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮০ হাজার ৭২৮ জন। এই তথ্য আমাদের আশাবাদী করলেও শঙ্কামুক্ত করে না। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গতবছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যে ১০ কোটি ৩৪ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২২ লাখ ৩৯ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩১তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সংক্রমিত দেশ ভারত, তারপর পাকিস্তান। আর তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ।
সংক্রমণ শুরুর ১০ মাস পর বাংলাদেশে করোনার টিকা এসেছে। জনস্বাস্থ্যবিদদের অনেকে মনে করেন মহামারি মোকাবিলার স্থায়ী সমাধান দিতে পারে এ টিকা। ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় একযোগে টিকাদান শুরু হবে। ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ লাখ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাঠিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ‘কোভিশিল্ড’ নামের টিকা উৎপাদন করেছে। বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ও বেক্সিমকো ফার্মার মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫০ লাখ টিকা দেশে এসেছে। সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাদের করোনাভাইরাসের টিকা দিতে চায়, সেই তথ্য জাতীয় সংসদকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে পরিকল্পনা সাজিয়েছে তার সরকার।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে মোট তিন কোটি ডোজ টিকার সরবরাহ পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো টিকা কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যম কর্মী, ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, ৫ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি সেবার (পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পরিবহণ কর্মী) চার লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমান বন্দরের দেড় লাখ কর্মী, ১ লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকও আছেন অগ্রাধিকারের তালিকায়। ইতিমধ্যে দেশের বেশিরভাগ জেলায় টিকা পৌঁছেছে। করোনার ভ্যাকসিন সুষ্ঠুভাবে বিতরণ এবং প্রয়োগ করা এখন বড় বিষয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন দিতে ৪২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সব ধরনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, সারাদেশে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস যেভাবে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে, ভ্যাকসিনও সফলতার সঙ্গে দিতে পারব। যেকোনো কাজ করতে গেলে কিছু সমালোচক থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তা নিয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা আছে। প্রতিটি ভ্যাকসিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। একটু জ্বর হতে পারে, শরীর গরম বা মাথাব্যথা হতে পারে। প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, তাতে কি ওষুধ সেবন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে? সুস্থ জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ভ্যাকসিন নিতে হবে।
করোনাকেন্দ্রিক ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এ পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সুস্থ আছেন। দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার অনেক কম। তবে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে অপপ্রচারও রয়েছে। রোধ করতে হবে এ অপপ্রচার। এ ব্যাপারে দেশব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি করাও জরুরি।
মনে রাখতে হবে, দেশের কঠিন সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনলে অন্যের কিছুই করার থাকে না। করোনা মোকাবিলা করা প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে সম্ভব নয়। দেশবাসীকেও সাবধানে থাকতে হবে, মেনে চলতে হবে সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি। তবে বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক দিক হচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা দেশের জনগণ মানছে না। তারা তাদের ইচ্ছামতো চলাফেরা করছে।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনার টিকা নিলেও সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এটাই হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
আশার কথা, সরকারের নানা উদ্যোগ ও তৎপরতায় করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে। হয়তো অচিরেই আমরা করোনা থেকে মুক্ত হবো।