০৩:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুজিববর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার’

গ্রিক শব্দ ‘খরনৎব’ থেকে ‘খরনৎধৎু’র উৎপত্তি, যার অর্থ ’গ্রন্থাগার’। গ্রন্থাগার হচ্ছে বইপুস্তক, পত্রপত্রিকা-সাময়িকীসহ অডিওভিজ্যুয়াল সামগ্রীর ভাণ্ডার, সংগ্রহশালা, সংরক্ষণাগার। পাঠক গ্রন্থাগারে বসে কিংবা বই ধার নিয়ে বাড়িতে পড়তে পারেন। প্রবাদ আছে, ‘একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার গ্রন্থাগার, মহাফেজখানা (আর্কাইভ/সংগ্রহশালা), জাদুঘর ধ্বংস করে দাও। ব্যস, আর কিছু লাগবে না।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রন্থাগার সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে বাঁধা পড়িয়া আছে।’ যে জাতির গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ, সে জাতি তত উন্নত।
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ২০১৮ সালে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। চলতি বছর (২০২১ সালে) এর প্রতিপাদ্য, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার’। আমরা বহুদিন ধরেই এমন একটি দিবস প্রত্যাশা করছিলাম। বর্তমান গ্রন্থাগারবান্ধব সরকার তা অনুমোদন করে গ্রন্থপ্রেমিকদের ধন্য করেছে। এই দিবসের কর্মসূচির মধ্যে থাকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, বইপড়া, আবৃত্তি, বক্তৃতা, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, সুন্দর হাতের লেখাসহ নানা প্রতিযোগিতা। ২০১৮ সালে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘বই পড়ি, স্বদেশ গড়ি’। ২০১৯ সালে ‘গ্রন্থাগারে বই পড়ি আলোকিত মানুষ গড়ি’ এবং ২০২০ সালে ‘পড়ব বই গড়ব দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’
মন্ত্রিপরিষদ পরিপত্র (৭ নভেম্বর ২০১৭) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের (১৪ ডিসেম্বর ২০১৭) আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা, বোর্ডের আওতাধীন অনুমোদিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) বরাবর ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি একটি ‘বিজ্ঞপ্তি’ পাঠায়। তাতে বলা হয়, সরকার ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে উদযাপন এবং দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী দিবসটি যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে (স্কুল-কলেজ-মাদরাসা) ‘একাডেমিক গ্রন্থাগার’ পরিচালনার নির্দেশনা জারি আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা প্রতিপালন হতে দেখা যায় না।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (শাখা-১৩) জনবল কাঠামো বিষয়ক প্রজ্ঞাপনবলে মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দশম) ও উচ্চ মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) স্তরে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগারের পদ সৃষ্টি করা হয়। সরকার এরই মধ্যে ক্লাস রুটিনে ‘গ্রন্থাগার বিজ্ঞান’কে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দিলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়ন করছে না।
পুরস্কার হিসেবে বইয়ের চেয়ে উত্তম কিছু নেই। বিলম্বে হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে, যার মূল বক্তব্য, ‘বিদ্যালয়গুলোর সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে ক্রোকারিজ সামগ্রী প্রদান করা হয়। এ ধরনের পুরস্কার শিক্ষার্থীদের শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে সব অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে বয়স উপযোগী মানসম্মত বই অথবা শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রদান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। বিষয়টি অতীব জরুরি।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ২৬-০৫-২০১৬ ইং তারিখের স্মারকে জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) ১০-০২-২০১৬ ইং তারিখের সভায় দেশের মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি রুটিনে বাধ্যতামূলকভাবে লাইব্রেরি ক্লাস অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে পত্র প্রেরণ করে।
ওই পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ শিক্ষা বছরের শুরু থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি রুটিনে লাইব্রেরি অন্তর্ভুক্ত করা এবং লাইব্রেরি ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরিতে গমন ও পৃথক লাইব্রেরি কক্ষ না থাকলে শ্রেণিকক্ষেই লাইব্রেরির বই লেনদেন ও বিতর্ক, গল্প বলা, আবৃত্তি, দেয়ালপত্রিকা প্রস্তুত, বইপড়া নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইব্রেরি ঘণ্টার কার্যক্রম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারদের নিবিড় পরিদর্শনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি ২৯ জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা থানার বেরাইদ গণপাঠাগার সংলগ্ন পুরান ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত দ্বিতীয় ঢাকা গ্রন্থসুহৃদ/গ্রন্থাগার প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেছেন, ‘বেসরকারি গ্রন্থাগারিকদের সম্মানী প্রদান করা হবে।
প্রণয়ন করা হবে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’। ২০ ডিসেম্বর ২০২০ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি ৮০০ লাইব্রেরিতে যে লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন তাঁদের জন্য এ বছর থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী দিনে এই অনুদান নিয়মিত করা যায় কি না সে চেষ্টাও করা হবে।’ তিনি বলেন, এ বছর অনুদানের চেকও ব্যাংকে সরাসরি গ্রন্থাগারের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, প্রতিমন্ত্রীর এই ঘোষণা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে ‘দুই ধাপ অগ্রগতি’।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। এটি বাস্তবায়নে তৈরি করা হচ্ছে ‘ফ্রেমওয়ার্ক’। এই কর্মসূচিতে আমরা গ্রন্থাগার অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করছি। ‘গণগ্রন্থাগার মন্ত্রণালয়’ গঠন করে দেশের সব গ্রন্থাগার পরিচালনার ভার তাদের ওপর ন্যস্ত করা যেতে পারে। সরকার ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মুজিব কর্নার’ স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই কর্নারকে স্থায়ী রূপ দিতে হলে গ্রন্থাগারিকের পদ সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে এগুলো টিকবে না।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

মুজিববর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার’

প্রকাশিত : ১২:০০:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১

গ্রিক শব্দ ‘খরনৎব’ থেকে ‘খরনৎধৎু’র উৎপত্তি, যার অর্থ ’গ্রন্থাগার’। গ্রন্থাগার হচ্ছে বইপুস্তক, পত্রপত্রিকা-সাময়িকীসহ অডিওভিজ্যুয়াল সামগ্রীর ভাণ্ডার, সংগ্রহশালা, সংরক্ষণাগার। পাঠক গ্রন্থাগারে বসে কিংবা বই ধার নিয়ে বাড়িতে পড়তে পারেন। প্রবাদ আছে, ‘একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার গ্রন্থাগার, মহাফেজখানা (আর্কাইভ/সংগ্রহশালা), জাদুঘর ধ্বংস করে দাও। ব্যস, আর কিছু লাগবে না।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রন্থাগার সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে বাঁধা পড়িয়া আছে।’ যে জাতির গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ, সে জাতি তত উন্নত।
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ২০১৮ সালে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। চলতি বছর (২০২১ সালে) এর প্রতিপাদ্য, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে গ্রন্থাগার’। আমরা বহুদিন ধরেই এমন একটি দিবস প্রত্যাশা করছিলাম। বর্তমান গ্রন্থাগারবান্ধব সরকার তা অনুমোদন করে গ্রন্থপ্রেমিকদের ধন্য করেছে। এই দিবসের কর্মসূচির মধ্যে থাকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, বইপড়া, আবৃত্তি, বক্তৃতা, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, সুন্দর হাতের লেখাসহ নানা প্রতিযোগিতা। ২০১৮ সালে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘বই পড়ি, স্বদেশ গড়ি’। ২০১৯ সালে ‘গ্রন্থাগারে বই পড়ি আলোকিত মানুষ গড়ি’ এবং ২০২০ সালে ‘পড়ব বই গড়ব দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’
মন্ত্রিপরিষদ পরিপত্র (৭ নভেম্বর ২০১৭) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের (১৪ ডিসেম্বর ২০১৭) আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা, বোর্ডের আওতাধীন অনুমোদিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) বরাবর ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি একটি ‘বিজ্ঞপ্তি’ পাঠায়। তাতে বলা হয়, সরকার ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে উদযাপন এবং দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী দিবসটি যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে (স্কুল-কলেজ-মাদরাসা) ‘একাডেমিক গ্রন্থাগার’ পরিচালনার নির্দেশনা জারি আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা প্রতিপালন হতে দেখা যায় না।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (শাখা-১৩) জনবল কাঠামো বিষয়ক প্রজ্ঞাপনবলে মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দশম) ও উচ্চ মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) স্তরে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগারের পদ সৃষ্টি করা হয়। সরকার এরই মধ্যে ক্লাস রুটিনে ‘গ্রন্থাগার বিজ্ঞান’কে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দিলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়ন করছে না।
পুরস্কার হিসেবে বইয়ের চেয়ে উত্তম কিছু নেই। বিলম্বে হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে, যার মূল বক্তব্য, ‘বিদ্যালয়গুলোর সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে ক্রোকারিজ সামগ্রী প্রদান করা হয়। এ ধরনের পুরস্কার শিক্ষার্থীদের শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে সব অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে বয়স উপযোগী মানসম্মত বই অথবা শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রদান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। বিষয়টি অতীব জরুরি।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ২৬-০৫-২০১৬ ইং তারিখের স্মারকে জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) ১০-০২-২০১৬ ইং তারিখের সভায় দেশের মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি রুটিনে বাধ্যতামূলকভাবে লাইব্রেরি ক্লাস অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে পত্র প্রেরণ করে।
ওই পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ শিক্ষা বছরের শুরু থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি রুটিনে লাইব্রেরি অন্তর্ভুক্ত করা এবং লাইব্রেরি ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরিতে গমন ও পৃথক লাইব্রেরি কক্ষ না থাকলে শ্রেণিকক্ষেই লাইব্রেরির বই লেনদেন ও বিতর্ক, গল্প বলা, আবৃত্তি, দেয়ালপত্রিকা প্রস্তুত, বইপড়া নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইব্রেরি ঘণ্টার কার্যক্রম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারদের নিবিড় পরিদর্শনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি ২৯ জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা থানার বেরাইদ গণপাঠাগার সংলগ্ন পুরান ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত দ্বিতীয় ঢাকা গ্রন্থসুহৃদ/গ্রন্থাগার প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেছেন, ‘বেসরকারি গ্রন্থাগারিকদের সম্মানী প্রদান করা হবে।
প্রণয়ন করা হবে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’। ২০ ডিসেম্বর ২০২০ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি ৮০০ লাইব্রেরিতে যে লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন তাঁদের জন্য এ বছর থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী দিনে এই অনুদান নিয়মিত করা যায় কি না সে চেষ্টাও করা হবে।’ তিনি বলেন, এ বছর অনুদানের চেকও ব্যাংকে সরাসরি গ্রন্থাগারের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, প্রতিমন্ত্রীর এই ঘোষণা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে ‘দুই ধাপ অগ্রগতি’।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। এটি বাস্তবায়নে তৈরি করা হচ্ছে ‘ফ্রেমওয়ার্ক’। এই কর্মসূচিতে আমরা গ্রন্থাগার অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করছি। ‘গণগ্রন্থাগার মন্ত্রণালয়’ গঠন করে দেশের সব গ্রন্থাগার পরিচালনার ভার তাদের ওপর ন্যস্ত করা যেতে পারে। সরকার ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মুজিব কর্নার’ স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই কর্নারকে স্থায়ী রূপ দিতে হলে গ্রন্থাগারিকের পদ সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে এগুলো টিকবে না।