০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আমদানি-রফতানিতে ব্রিটেনের ভোগান্তি চরমে

ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোট থেকে বের হয়েছে এক মাস। এর মধ্যেই আমদানি-রফতানিকারকদের ভোগান্তি আর অভিযোগ আকাশ ছুঁয়েছে। অবাক করার বিষয়, ব্রিটিশ বন্দর দিয়ে ইউরোপে পণ্য রফতানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় অনেক কমে গেছে। নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্কে বিপাকে পড়ছে অনেক ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও ফার্ম। সরকারি মুখপাত্র বলছেন, রফতানির পরামর্শ দিতে ওয়েবিনার করা হচ্ছে, ৩০০ আন্তর্জাতিক ট্রেড অ্যাডভাইজারের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজে পরিচালনার বিষয়ে। ভারতীয় নিকাসু ফুডসের স্বত্বাধিকারী নিশা মেনোন জানান, ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। ২৫ বছর আগে এই ফার্মের কার্যক্রম শুরু করেন তারা। এত দিন বেশ ভালো চললেও এখন গ্রিসে তার পণ্য পাঠাতে হলে সেখানে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তার ফার্মের খাবার গ্রিসে ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু যেহেতু এ খাবারের আনুষঙ্গিক ভারতে তৈরি হয়, তাই ব্রিটেন থেকে ইউরোপে রফতানি করতে হলে মানও পরীক্ষা হয়। সে ক্ষেত্রে খরচ পড়ছে অনেক বেশি। অথচ আগে শুধু ব্রিটেনে শুল্ক পরিশোধ করলেই চলত। এক্ষেত্রে একটাই সমাধান আছে, পণ্যগুলো ভারত থেকে সরাসরি গ্রিসে রফতানি করলে খরচ কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু যেহেতু তারা অনেক বড় কন্টেইনারে শিপমেন্ট করে, সেক্ষেত্রে ১০ টনের অর্ডার জরুরি, যেটা একই চালানে ফার্মের পক্ষে সম্ভব না। আবার কেউ যদি ফ্রেঞ্চ ভাষা না জানে, সেটি হয়ে দাঁড়ায় আরেক সমস্যা। পাস্তা ফার্ম লা তুয়া পাস্তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকোলাস হেনসন ফ্রেঞ্চ, ব্রিটিশ, দুই ভাষাই জানেন। কিন্তু যারা জানেন না, তাদের জন্য পণ্যের আমদানি-রফতানি বেশ কঠিন। ব্রিটিশ সব রেস্টুরেন্টেই তার পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু জানুয়ারি থেকে কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে তাকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৭৫ হাজার পাউন্ড। খাবারের মান পরীক্ষা করা হচ্ছে একবার ব্রিটেনে, একবার ফ্রান্সে। শুধু মাংস নয়, দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম থেকে শুরু করে যে কোনো খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষা হচ্ছে দফায় দফায়, বাড়ছে খরচ। প্রাণিজ খাবারের মান পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় চিকিৎসক নেই। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রতি ঘণ্টায় খরচ ৫০ পাউন্ড। ট্রাক ড্রাইভার শিফট অনুযায়ী কাজ করে, তাকে আবার ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম দেয়া হয়। প্রত্যেক কর্মকর্তাকে অর্থ দিতে হয়। হতাশা প্রকাশ করে নিকোলাস হেনসন বলেন, পুরো হাইওয়েতে ডাকাতি চলে। তিনি বলেন, সরকারও ইচ্ছা করেই এ কার্যক্রমে সম্মতি জানাচ্ছে, অথচ সরকারের বোঝা উচিত, আমরা খাবারের ব্যবসা করে টিকে থাকার চেষ্টা করি। ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কিংবা অতিরিক্ত অর্থ খরচের বিষয়ে অবশ্য কোনো কথা বলতে রাজি নয় কোনো দেশের সরকারই।

ট্যাগ :

৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

আমদানি-রফতানিতে ব্রিটেনের ভোগান্তি চরমে

প্রকাশিত : ১২:০১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোট থেকে বের হয়েছে এক মাস। এর মধ্যেই আমদানি-রফতানিকারকদের ভোগান্তি আর অভিযোগ আকাশ ছুঁয়েছে। অবাক করার বিষয়, ব্রিটিশ বন্দর দিয়ে ইউরোপে পণ্য রফতানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় অনেক কমে গেছে। নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্কে বিপাকে পড়ছে অনেক ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও ফার্ম। সরকারি মুখপাত্র বলছেন, রফতানির পরামর্শ দিতে ওয়েবিনার করা হচ্ছে, ৩০০ আন্তর্জাতিক ট্রেড অ্যাডভাইজারের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজে পরিচালনার বিষয়ে। ভারতীয় নিকাসু ফুডসের স্বত্বাধিকারী নিশা মেনোন জানান, ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। ২৫ বছর আগে এই ফার্মের কার্যক্রম শুরু করেন তারা। এত দিন বেশ ভালো চললেও এখন গ্রিসে তার পণ্য পাঠাতে হলে সেখানে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তার ফার্মের খাবার গ্রিসে ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু যেহেতু এ খাবারের আনুষঙ্গিক ভারতে তৈরি হয়, তাই ব্রিটেন থেকে ইউরোপে রফতানি করতে হলে মানও পরীক্ষা হয়। সে ক্ষেত্রে খরচ পড়ছে অনেক বেশি। অথচ আগে শুধু ব্রিটেনে শুল্ক পরিশোধ করলেই চলত। এক্ষেত্রে একটাই সমাধান আছে, পণ্যগুলো ভারত থেকে সরাসরি গ্রিসে রফতানি করলে খরচ কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু যেহেতু তারা অনেক বড় কন্টেইনারে শিপমেন্ট করে, সেক্ষেত্রে ১০ টনের অর্ডার জরুরি, যেটা একই চালানে ফার্মের পক্ষে সম্ভব না। আবার কেউ যদি ফ্রেঞ্চ ভাষা না জানে, সেটি হয়ে দাঁড়ায় আরেক সমস্যা। পাস্তা ফার্ম লা তুয়া পাস্তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকোলাস হেনসন ফ্রেঞ্চ, ব্রিটিশ, দুই ভাষাই জানেন। কিন্তু যারা জানেন না, তাদের জন্য পণ্যের আমদানি-রফতানি বেশ কঠিন। ব্রিটিশ সব রেস্টুরেন্টেই তার পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু জানুয়ারি থেকে কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে তাকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৭৫ হাজার পাউন্ড। খাবারের মান পরীক্ষা করা হচ্ছে একবার ব্রিটেনে, একবার ফ্রান্সে। শুধু মাংস নয়, দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম থেকে শুরু করে যে কোনো খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষা হচ্ছে দফায় দফায়, বাড়ছে খরচ। প্রাণিজ খাবারের মান পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় চিকিৎসক নেই। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রতি ঘণ্টায় খরচ ৫০ পাউন্ড। ট্রাক ড্রাইভার শিফট অনুযায়ী কাজ করে, তাকে আবার ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম দেয়া হয়। প্রত্যেক কর্মকর্তাকে অর্থ দিতে হয়। হতাশা প্রকাশ করে নিকোলাস হেনসন বলেন, পুরো হাইওয়েতে ডাকাতি চলে। তিনি বলেন, সরকারও ইচ্ছা করেই এ কার্যক্রমে সম্মতি জানাচ্ছে, অথচ সরকারের বোঝা উচিত, আমরা খাবারের ব্যবসা করে টিকে থাকার চেষ্টা করি। ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কিংবা অতিরিক্ত অর্থ খরচের বিষয়ে অবশ্য কোনো কথা বলতে রাজি নয় কোনো দেশের সরকারই।