১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলে ঢিলেঢালা লকডাউন, আক্রান্ত ১৭৫ জন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টাঙ্গাইল ও কালিহাতী এলেঙ্গা পৌর এলাকায় চলছে তৃতীয় দিনের লকডাউন চলছে ঢিলেঢালাভাবে। লকডাউনের বিধি অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও জরুরি সেবা ছাড়া গণপরিবহন, মার্কেট ও অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু টাঙ্গাইলে গত দুই দিনের বেশি রিক্সা, মোটরসাইকেল, পিকআপ, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক অনেক বেশি চলাচল করছে। দোকান বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিকে কেউ এক সাটার আবার অনেকেই অর্ধেক সাটার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে কেনাকাটা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বটতলা, ডিস্ট্রিক গেট, কুমুদিনী কলেজ গেট, নতুন বাসস্ট্যান্ড, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, ভিক্টোরিয়া রোড, নিরালার মোড়, শান্তিকুঞ্জ মোড়, বেবীস্ট্যান্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এতে লকডাউন দিলেও জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ নিয়ে কারও কোনো ভাবনা নেই। মিষ্টির দোকান, খাবার হোটেল, মার্কেট, চা ও মুদিদোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। সাধারণ মানুষও ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্বাভাবিকভাবেই। অনেকে বাইরে বের হয়েছেন দৈনন্দিন কাজে। অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। একই চিত্র এলেঙ্গা পৌর এলকায়। প্রশাসনের তেমন তৎপরতা না থাকায় লকডাউন কার্যকর করা যাচ্ছে না।
ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার চালক বেলাল মিয়া বলেন, গত দুই দিন বের হয়নি। তবে জানতে পেরেছি গত দুই দিন টাঙ্গাইল অনেকেই রিক্সা চালিয়েছে। তাই আমিও আজ বের হয়েছি। সামনে ঈদ আসছে তাই ঝুঁকি নিয়েই বের হতে হয়েছে।
পথচারি জুবায়ের মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামে তো আর করোনা নেই, তাই শহরে মাস্ক ছাড়াই এসেছি। পুলিশ এখনও দেখেনি, আর পুলিশের সামনে দিয়ে আমি যাবও না।’
ব্যবসায়ী সোনা মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগেই শুধু লকডাউন দেয়। গত দুই বছর যাবত ঈদে কোন ব্যবসা করতে পারি না। এক সাটার খুলে দোকান চালাচ্ছি। ম্যাজিস্ট্রেট আসলে বন্ধ করে দিবো।
এ দিকে টাঙ্গাইলে গত ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮০ জন, কালিহাতীতে ২৩ জন, ঘাটাইলে ১৫ জন, মির্জাপুরে ১৪ জন, ভুঞাপুরে ১২ জন, মধুপুর ও দেলদুয়ারে নয় জন, বাসাইল ও গোপালপুরে পাঁচ জন, সখীপুরে তিন জন রয়েছেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকাল পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছয় হাজার ৭১৯ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় একজন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ১০৫ জন। আরোগ্য লাভ করেছেন চার হাজার ৪৩৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৯৬ জন।
করোনা সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গত রোববার সভা করে এই কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গা পৌর এলাকায় পুলিশ ১৮ টি চেক পোস্ট স্থাপন করেছে। গত ১১ দিন ধরে জেলায় সংক্রমনের হার ৩২ শতাংশের উপরে রয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, টাঙ্গাইল শহরে লকডাউন বাস্তবায়নে ১৩ টি চেকপোস্ট ও পাঁচটি মোবাইল টিম কাজ করছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় গত দুই দিনে ১২ টি মামলা করা হয়েছে। আজকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাব উদ্দিন খান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও সরকারি নির্দেশনা মেনে মাস্ক ব্যবহার করলেই দ্রুত সময়ে মধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :

ক্যারিবীয় সাগরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ পাঠালেন ট্রাম্প

টাঙ্গাইলে ঢিলেঢালা লকডাউন, আক্রান্ত ১৭৫ জন

প্রকাশিত : ০৫:১৩:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টাঙ্গাইল ও কালিহাতী এলেঙ্গা পৌর এলাকায় চলছে তৃতীয় দিনের লকডাউন চলছে ঢিলেঢালাভাবে। লকডাউনের বিধি অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও জরুরি সেবা ছাড়া গণপরিবহন, মার্কেট ও অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু টাঙ্গাইলে গত দুই দিনের বেশি রিক্সা, মোটরসাইকেল, পিকআপ, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক অনেক বেশি চলাচল করছে। দোকান বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিকে কেউ এক সাটার আবার অনেকেই অর্ধেক সাটার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে কেনাকাটা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বটতলা, ডিস্ট্রিক গেট, কুমুদিনী কলেজ গেট, নতুন বাসস্ট্যান্ড, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, ভিক্টোরিয়া রোড, নিরালার মোড়, শান্তিকুঞ্জ মোড়, বেবীস্ট্যান্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এতে লকডাউন দিলেও জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ নিয়ে কারও কোনো ভাবনা নেই। মিষ্টির দোকান, খাবার হোটেল, মার্কেট, চা ও মুদিদোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। সাধারণ মানুষও ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্বাভাবিকভাবেই। অনেকে বাইরে বের হয়েছেন দৈনন্দিন কাজে। অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। একই চিত্র এলেঙ্গা পৌর এলকায়। প্রশাসনের তেমন তৎপরতা না থাকায় লকডাউন কার্যকর করা যাচ্ছে না।
ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার চালক বেলাল মিয়া বলেন, গত দুই দিন বের হয়নি। তবে জানতে পেরেছি গত দুই দিন টাঙ্গাইল অনেকেই রিক্সা চালিয়েছে। তাই আমিও আজ বের হয়েছি। সামনে ঈদ আসছে তাই ঝুঁকি নিয়েই বের হতে হয়েছে।
পথচারি জুবায়ের মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামে তো আর করোনা নেই, তাই শহরে মাস্ক ছাড়াই এসেছি। পুলিশ এখনও দেখেনি, আর পুলিশের সামনে দিয়ে আমি যাবও না।’
ব্যবসায়ী সোনা মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগেই শুধু লকডাউন দেয়। গত দুই বছর যাবত ঈদে কোন ব্যবসা করতে পারি না। এক সাটার খুলে দোকান চালাচ্ছি। ম্যাজিস্ট্রেট আসলে বন্ধ করে দিবো।
এ দিকে টাঙ্গাইলে গত ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮০ জন, কালিহাতীতে ২৩ জন, ঘাটাইলে ১৫ জন, মির্জাপুরে ১৪ জন, ভুঞাপুরে ১২ জন, মধুপুর ও দেলদুয়ারে নয় জন, বাসাইল ও গোপালপুরে পাঁচ জন, সখীপুরে তিন জন রয়েছেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকাল পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছয় হাজার ৭১৯ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় একজন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ১০৫ জন। আরোগ্য লাভ করেছেন চার হাজার ৪৩৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৯৬ জন।
করোনা সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গত রোববার সভা করে এই কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গা পৌর এলাকায় পুলিশ ১৮ টি চেক পোস্ট স্থাপন করেছে। গত ১১ দিন ধরে জেলায় সংক্রমনের হার ৩২ শতাংশের উপরে রয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, টাঙ্গাইল শহরে লকডাউন বাস্তবায়নে ১৩ টি চেকপোস্ট ও পাঁচটি মোবাইল টিম কাজ করছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় গত দুই দিনে ১২ টি মামলা করা হয়েছে। আজকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাব উদ্দিন খান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও সরকারি নির্দেশনা মেনে মাস্ক ব্যবহার করলেই দ্রুত সময়ে মধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ