চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ এর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এ নিয়ে টানেলের নির্মাণকাজ ৭১ শতাংশ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ হয়ে আনোয়ারা প্রান্ত পর্যন্ত একটি টিউব পরিপূর্ণভাবে স্থাপন করা হয়েছে। দ্বিতীয় টিউব স্থাপনের কাজও প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া প্রথম টিউবের ভেতর দিয়ে পিচঢালা সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে, যার ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে।টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, নির্মাণকাজে করোনা ও জমি অধিগ্রহণ প্রতিবন্ধকতা ছিল। দুটিই আমরা কাটিয়ে উঠেছি। কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টানেল যান চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশা করছি।
দেশে প্রথমবারের মতো নির্মাণাধীন এ টানেলের চট্টগ্রাম নগর প্রান্ত শুরু হয়েছে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমির পাশ থেকে। গত বছরের ২ আগস্ট শেষ হয় নগর প্রান্তের প্রথম টিউবের খননকাজ। এরপর একই বছরের ১২ ডিসেম্বর শুরু হয় আনোয়ারা প্রান্তে টিউবের খননকাজ।২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পরে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানেলটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প ঋণ হিসেবে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। এছাড়া বাকি অর্থায়ন বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি)।
টানেলটি নির্মিত হলে ত্বরান্বিত হবে কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন। পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গেও স্থাপিত হবে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কমে যাবে ভ্রমণের সময় ও খরচ।
এছাড়া পূর্বপ্রান্তের শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও প্রস্তুত করা মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দরসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে বিকশিত হবে পর্যটনশিল্প।