মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন,‘দেশ স্বাধীন করে আমরা যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করে ছিলাম, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র চলু করেন। গোলাম আযমকে এনে নাগরিকত্ব ফেরৎ দিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে সিনিয়র মন্ত্রী বানালেন।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নীলফামারী শহরের মশিউর রহমান ডিগ্রী কলেজ মাঠে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলেন তারা জয় বাংলা শ্লোগান নিষিদ্ধ করলেন। যুদ্ধের যে হুঙ্কার, যে রণধ্বনি, যে ধ্বণিতে আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করেছিলাম। খুনি জিয়া, মোস্তাক চক্র স্বাধীন বাংলাদেশকে মিনিপাকিস্তান বানানোর জন্য পাকিস্তানী কায়দায় বাংলাদেশ জিন্দাবাদ চালু করলেন।’
দেশ স্বাধীনের আজ ৫০ বছর উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘এই ৫০ বছরের ৩০ বছর যাদু মিয়ারা যাদুর খেলা দেখিয়েছেন। বিএনপির নেতা জিয়াউর রহমান আগাইরা বাগাইরা টাউট বাটপার মেলেটারী নিয়া ছিলেন ১০ বছর। খেলাদা জিয়া ছিলেন ১০ বছর। এরশাদ ছিলেন ১০ বছর। আমরা বঙ্গবন্ধুর আমলে সাড়ে তিন বছর, শেখ হাসিনার আমলে আগে ৫ বছর এখন সাড়ে ১২ বছর, অর্থাৎ ২১ বছরের মতো আমরা বঙ্গবন্ধু এবং তার রক্তের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনা মিলে ২১ বছর। আর ৩০ বছর ওরা। আমরা একদিকে যেমন বঙ্গবন্ধুর শতবার্ষিকী পালন করছি, একইসাথে স্বাধীনতার ৫০ বছর আমরা পালন করছি। এই যে উন্নয়ন দেখেন, এই উন্নয়ন কত বছরের হিসাবটা বুঝতে হবে।’
আওয়ামী লীগের ২১ বছরে কী কী হয়েছে হিসাব মিলান। এখানে ইপিজেড হয়েছে। স্কুল কলেজ, রাস্তা-ঘাট, বাড়ী বাড়ী বিদ্যুৎ, প্রাইমারী স্কুলের ৪তলা বিল্ডিং হয়েছে, মানুষের আয় বেড়েছে।’
আজকের প্রজম্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ এবং অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুর খুনিরা যারা ক্ষমতায় ছিল এবং খুনের সুবিধাভোগি তারা দেশকে উল্টো পথে নিয়েছেন। সেটাকে আবার সঠিক পথে এনে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এখন আর অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করতে হবে না। এখন দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
সভায় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “আমরা একটা রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ওই যুদ্ধের
নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শারীরীকভাবে উপস্থিত ছিলেন না নয় মাস। কিন্তু প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা, এবং এদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সব সময় তারা মনে করেছেন বঙ্গবন্ধু তাদের পাশে আছেন, তাদের সঙ্গে আছেন। তার কণ্ঠস্বর যখন স্বাধীন বাংলা বেতারে বাজতো, তার সেই বজ্রকণ্ঠ শুনে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা উদ্দিপ্ত হতো।
নূর আরো বলেন, “আজকে দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। যারা এই দেশের স্বাধীনতার শত্রæ ছিল তারা
দেশি এবং বিদেশি চক্রের সঙ্গে চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তারা মনে করেছে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে হত্যা করতে পারলে এই বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানো যাবে। কিন্তু তাদের যে ষড়যন্ত্র, তাদের যে অপ কৌশল তাদের যে কুৎসিত উদ্যেশ্য সেটি সফল হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর কণ্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো ঘুড়ে দাড়িয়েছেন।”
উল্লেখ্য, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মানে এক কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার এবং সৈয়দপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মানে এক কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।