তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মায়ের জানাজার সময় কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমের ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো । বুধবার, ২১ ডিসেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমের ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরে মায়ের জানাজা পড়ার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জানাজার সময় হাতকড়া-ডাণ্ডাবেড়ি থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা অমানবিক না হলেও পারতো।
তিনি বলেন, আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডাণ্ডাবেড়ি পরানো বা হাতকড়া পরানো না পরানো জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয় এবং একজন আইজিপি প্রিজন আছেন সেই প্রশাসনের অধীনে। আমাদের পুলিশের যে মহাপরিদর্শক, তাদের অধীনে নয়। ডান্ডা কিংবা হাতকড়া জেল প্রশাসনই পরায়। আমি বিষয়টি চেক করেছি, তাকে প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল, তা করা হয়নি বলে তদন্তে উঠে এসেছে এবং তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য সেখানে (গাজীপুরে) তারা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে ক্যারি (বহন) করে এনেছিলেন, শুধু তারাই জানতেন, অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি যে, জানাজার সময় তার ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।
আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে রোববার বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। স্বজনরা জানান, শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে গত সোমবার বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় মায়ের জানাজায় উপস্থিত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন বিএনপি নেতা আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এটি নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আমরাও চাই সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিক। বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক- সেটি আমরাও চাই।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে একটি কথা আছে, গাধা জল ঘোলা করে খায়। বিএনপি যেমন ১০ তারিখ গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মত করে খেয়েছিল, নয়াপল্টন অফিসের সামনে থেকে নড়বে না (সমাবেশ ইস্যুতে), পরে গরুর হাটের ময়দানে গিয়েছিল। এক্ষেত্রেও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব






















