১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

এবার ব্রাহমা গরুর আমদানি সংক্রান্ত নথি খুঁজতে বিমানবন্দরে হানা দিলো দুদক

সাদিক অ্যাগ্রোর ব্রাহমা প্রজাতির গরু আমদানি সংক্রান্ত তথ‌্য জানতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করেছে।

 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালামের নেতৃত্বে একটি টিম বিমানবন্দরের কাস্টমস অফিসে অভিযান চালানো হয়।

এর আগে দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে করে ১৮টি ব্রাহমা গরু দেশে আনে সাদিক অ্যাগ্রো। জাল নথি দিয়ে ওই গরু আমদানির পর তা জব্দ করে দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়, সাভারে সরকারি গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারকে। মূলত ওই জব্দ তালিকা ও আইনগত কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতেই বিমানবন্দরে অভিযানে যায় দুদক টিম।
এদিকে সোমবার (০১ জুলাই) সাভারের বলিয়ারপুরে সাদিক অ্যাগ্রোর খামার থেকে ব্রাহমা গরুর সন্ধান পায় দুদক।

সাদিক অ্যাগ্রো খামারে অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে গরুগুলোর সন্ধান পেয়েছি, তা আপাতত এ খামারেই থাকবে। অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে নিষেধ করা হয়েছে খামারের লোকজনদের। কমিশনকে রিপোর্ট দেয়ার পরেই নেয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

খামারের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করে একটি সেডে সন্ধান পাওয়া যায় ব্রাহমা জাতের কয়েকটি গরুর-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খামারটির ম্যানেজারের সাথে কথা বলে এবং বিভিন্ন খাতা ও নথি পর্যালোচনা এবং তা জব্দও করা হয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে কোন প্রক্রিয়ায় সরকারের এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সাদিক অ্যাগ্রোকে দেয়া হয়েছে, সেটিসহ অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ নেয় দুদক টিম। ব্রাহমা জাতের গরু দেশে নিষিদ্ধ থাকলেও ২০২১ সালে আমেরিকা থেকে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু জাল কাগজপত্র তৈরি করে দেশে আনেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান। সেই সময় কাস্টমস তা জব্দ করে পাঠায় গো প্রজনন কেন্দ্রে। নিজেদের জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানি করা গরু তিন বছর পর আবারও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে কারসাজির মাধ্যমে নিলামে অংশ নিয়ে, সেসব গরু ফিরিয়ে নেয় সাদিক অ্যাগ্রো।

অভিযানে গো প্রজনন খামারের টেন্ডার জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখে দুদক। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার রামচন্দ্রপুর খালের অন্যসব দখলদারের সঙ্গে সরে যেতে শুরু করে সাদিক অ্যাগ্রো। সরিয়ে নেয়া হয় খামারের অধিকাংশ গরু-ছাগল। তবে সকাল থেকেই অজানা কারণে অনুপস্থিত থাকেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহ ইমরান হোসেন। পাঠান তার এক প্রতিনিধিকে। তাদের দাবি, খালের জায়গায় নেই তাদের কোনো স্থাপনা।

এদিকে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিষয়ে এবার নড়েচড়ে বসে (দুদক)। রবিবার (৩০ জুন) মতিউর দম্পতির জমিজমার হিসাব চেয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি। জানা গেছে, এ কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ক্রয়কৃত কোনো জমি আছে কিনা, সেটি জানতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তবে এর আগে, চারবার মতিউরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পান ছাগলকাণ্ডের মতিউর রহমান।

সম্প্রতি সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এবার সাদিক অ্যাগ্রো অর্থের খোঁজে নেমেছে দুদক।

ট্যাগ :

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ‍দিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা

এবার ব্রাহমা গরুর আমদানি সংক্রান্ত নথি খুঁজতে বিমানবন্দরে হানা দিলো দুদক

প্রকাশিত : ০৪:৫১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

সাদিক অ্যাগ্রোর ব্রাহমা প্রজাতির গরু আমদানি সংক্রান্ত তথ‌্য জানতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করেছে।

 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালামের নেতৃত্বে একটি টিম বিমানবন্দরের কাস্টমস অফিসে অভিযান চালানো হয়।

এর আগে দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে করে ১৮টি ব্রাহমা গরু দেশে আনে সাদিক অ্যাগ্রো। জাল নথি দিয়ে ওই গরু আমদানির পর তা জব্দ করে দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়, সাভারে সরকারি গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারকে। মূলত ওই জব্দ তালিকা ও আইনগত কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতেই বিমানবন্দরে অভিযানে যায় দুদক টিম।
এদিকে সোমবার (০১ জুলাই) সাভারের বলিয়ারপুরে সাদিক অ্যাগ্রোর খামার থেকে ব্রাহমা গরুর সন্ধান পায় দুদক।

সাদিক অ্যাগ্রো খামারে অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে গরুগুলোর সন্ধান পেয়েছি, তা আপাতত এ খামারেই থাকবে। অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে নিষেধ করা হয়েছে খামারের লোকজনদের। কমিশনকে রিপোর্ট দেয়ার পরেই নেয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

খামারের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করে একটি সেডে সন্ধান পাওয়া যায় ব্রাহমা জাতের কয়েকটি গরুর-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খামারটির ম্যানেজারের সাথে কথা বলে এবং বিভিন্ন খাতা ও নথি পর্যালোচনা এবং তা জব্দও করা হয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে কোন প্রক্রিয়ায় সরকারের এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সাদিক অ্যাগ্রোকে দেয়া হয়েছে, সেটিসহ অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ নেয় দুদক টিম। ব্রাহমা জাতের গরু দেশে নিষিদ্ধ থাকলেও ২০২১ সালে আমেরিকা থেকে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু জাল কাগজপত্র তৈরি করে দেশে আনেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান। সেই সময় কাস্টমস তা জব্দ করে পাঠায় গো প্রজনন কেন্দ্রে। নিজেদের জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানি করা গরু তিন বছর পর আবারও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে কারসাজির মাধ্যমে নিলামে অংশ নিয়ে, সেসব গরু ফিরিয়ে নেয় সাদিক অ্যাগ্রো।

অভিযানে গো প্রজনন খামারের টেন্ডার জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখে দুদক। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার রামচন্দ্রপুর খালের অন্যসব দখলদারের সঙ্গে সরে যেতে শুরু করে সাদিক অ্যাগ্রো। সরিয়ে নেয়া হয় খামারের অধিকাংশ গরু-ছাগল। তবে সকাল থেকেই অজানা কারণে অনুপস্থিত থাকেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহ ইমরান হোসেন। পাঠান তার এক প্রতিনিধিকে। তাদের দাবি, খালের জায়গায় নেই তাদের কোনো স্থাপনা।

এদিকে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিষয়ে এবার নড়েচড়ে বসে (দুদক)। রবিবার (৩০ জুন) মতিউর দম্পতির জমিজমার হিসাব চেয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি। জানা গেছে, এ কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ক্রয়কৃত কোনো জমি আছে কিনা, সেটি জানতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তবে এর আগে, চারবার মতিউরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পান ছাগলকাণ্ডের মতিউর রহমান।

সম্প্রতি সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এবার সাদিক অ্যাগ্রো অর্থের খোঁজে নেমেছে দুদক।