০৮:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী ও ১১ নম্বর পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফসহ সহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শহিদুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন পশ্চিম গুজরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ অপহরণের পর, শারীরিক নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোসহ নানা অভিযোগে এই ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মোট ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামীরা হলেন পশ্চিম গুজরার ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ, সুজাতুল ইসলাম ফাহিম, টনি বড়ুয়া, লিটন দে, মো. আনোয়ার, মো. মাসুদ, আজম খান, মো. সাদ্দাম, সালাউদ্দিন মিন্টু, সাইফুল ইসলাম (লিটন), আবু তৈয়ব প্র: কালা তৈয়ব, মো. জামাল প্র. কালা জামাল, অংশুমান বড়ুয়া, আব্দুল মান্নান, মো. আরিফ, মো. সাজ্জাদ, মো. হাবিবুর রহমান, আরিফ ইসলাম রুবেল, মো. ইসমাঈল প্র. বছ, মো. দুলাল, মো. রফিক, মো. কামাল, আব্দুল আজিজ, মো. আসলাম, মো. ফারুক ও মো. তানভীর। প্রধান আসামি ছাড়া এরা প্রত্যেকেই রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

মামলার পেশকার জয়নুল আবেদিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাদীর পক্ষের উকিল এডভোকেট সবুজ তালুকদার জানান, আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজুদ্দৌলাহ তার পরিচিত এমদাদের ভাগ্নির বাড়িতে দাওয়াতে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তাকে আটকের চেষ্টা করবে জানতে পেরে দ্রুত বাড়িতে চলে আসেন। পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় তাকে প্রধান আসামীর নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে বাঁচাতে স্ত্রী-কন্যা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আসামি মো. মাসুদ তাদের আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, আসামি লিটন দে ১৫ হাজার টাকা লুট করে৷ এছাড়া বাড়ির মূল্যবান আসবাব ভাঙচুর করে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। তাকে অপহরণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ এলাকার নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে। এরপর তার মাথার চুল ও মুখের দাঁড়ি ফেলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে দেখানো হয়।

এরপর সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এছাড়া আসামি টনি বড়ুয়া মৃত্যুর হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তার মেঝ ভাই মো. হারুন তিন লাখ টাকা এনে টনির হাতে তুলে দেয়। রাত ৮টার দিকে বাদীকে আসামি শাহাবুদ্দিন আরিফের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একটি সিএনজিতে বসিয়ে ৫ নম্বর আসামি লিটন দে পুরাতন একটি অস্ত্র ও ৬ নম্বর আসামি আনোয়ার একটি গুলি এনে ওই সিএনজির পেছনে রাখে। এরপর রাউজান থানার উপপরিদর্শক অজয় দেবনাথ ও ইলিয়াছ বাদীকে আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় করে থানায় নিয়ে যায়। এসআই অজয় দেবনাথ বাদীকে দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় রাউজান থানায় অস্ত্রসহ ছবি তুলে অস্ত্র আইনে একটি মামলা রুজু করে বাদীকে আদালতে পাঠানো হয়।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাউজানের একক ক্ষমতাধর সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রথম কোন মামলা হওয়ায় স্থানীয় জনতাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণও করা হয়।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ

সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা

প্রকাশিত : ০৪:১৮:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী ও ১১ নম্বর পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফসহ সহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শহিদুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন পশ্চিম গুজরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ অপহরণের পর, শারীরিক নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোসহ নানা অভিযোগে এই ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মোট ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামীরা হলেন পশ্চিম গুজরার ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ, সুজাতুল ইসলাম ফাহিম, টনি বড়ুয়া, লিটন দে, মো. আনোয়ার, মো. মাসুদ, আজম খান, মো. সাদ্দাম, সালাউদ্দিন মিন্টু, সাইফুল ইসলাম (লিটন), আবু তৈয়ব প্র: কালা তৈয়ব, মো. জামাল প্র. কালা জামাল, অংশুমান বড়ুয়া, আব্দুল মান্নান, মো. আরিফ, মো. সাজ্জাদ, মো. হাবিবুর রহমান, আরিফ ইসলাম রুবেল, মো. ইসমাঈল প্র. বছ, মো. দুলাল, মো. রফিক, মো. কামাল, আব্দুল আজিজ, মো. আসলাম, মো. ফারুক ও মো. তানভীর। প্রধান আসামি ছাড়া এরা প্রত্যেকেই রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

মামলার পেশকার জয়নুল আবেদিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাদীর পক্ষের উকিল এডভোকেট সবুজ তালুকদার জানান, আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজুদ্দৌলাহ তার পরিচিত এমদাদের ভাগ্নির বাড়িতে দাওয়াতে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তাকে আটকের চেষ্টা করবে জানতে পেরে দ্রুত বাড়িতে চলে আসেন। পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় তাকে প্রধান আসামীর নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে বাঁচাতে স্ত্রী-কন্যা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আসামি মো. মাসুদ তাদের আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, আসামি লিটন দে ১৫ হাজার টাকা লুট করে৷ এছাড়া বাড়ির মূল্যবান আসবাব ভাঙচুর করে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। তাকে অপহরণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ এলাকার নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে। এরপর তার মাথার চুল ও মুখের দাঁড়ি ফেলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে দেখানো হয়।

এরপর সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এছাড়া আসামি টনি বড়ুয়া মৃত্যুর হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তার মেঝ ভাই মো. হারুন তিন লাখ টাকা এনে টনির হাতে তুলে দেয়। রাত ৮টার দিকে বাদীকে আসামি শাহাবুদ্দিন আরিফের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একটি সিএনজিতে বসিয়ে ৫ নম্বর আসামি লিটন দে পুরাতন একটি অস্ত্র ও ৬ নম্বর আসামি আনোয়ার একটি গুলি এনে ওই সিএনজির পেছনে রাখে। এরপর রাউজান থানার উপপরিদর্শক অজয় দেবনাথ ও ইলিয়াছ বাদীকে আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় করে থানায় নিয়ে যায়। এসআই অজয় দেবনাথ বাদীকে দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় রাউজান থানায় অস্ত্রসহ ছবি তুলে অস্ত্র আইনে একটি মামলা রুজু করে বাদীকে আদালতে পাঠানো হয়।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাউজানের একক ক্ষমতাধর সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রথম কোন মামলা হওয়ায় স্থানীয় জনতাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণও করা হয়।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ