১২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

 সদর দক্ষিণ ওসি সেলিমের মানবিক উদ্যোগে উদ্ধার, দশ মাসের শিশু

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম আহমেদের মানবিক ও তৎপর উদ্যোগে মায়ের কোলে ফিরে এসেছে হারিয়ে যাওয়া দশ মাসের এক শিশু।

ঘটনার সূত্রপাত দুই বছর আগে। কুমিল্লা কোতোয়ালী থানার দক্ষিণ ৩নং দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়নের খেতাশার গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী সহকারী মোহাম্মদ মামুনের কন্যা সন্তান সুমাইয়ার বিয়ে হয় সদর দক্ষিণ থানার পিপুলিয়া সাদা ঘর এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আজাদ হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের প্রথম এক বছর ভালো কাটলেও বিদেশ যাওয়ার পর স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ইতালিপ্রবাসী আজাদ হোসেনের অনুপস্থিতিতে সুমাইয়া শ্বশুরবাড়িতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রায় দশ দিন আগে সন্তানের বয়স মাত্র দশ মাস থাকা অবস্থায় সুমাইয়াকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তার সন্তানকে তার কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন সুমাইয়ার পরিবার। মেয়ের সন্তানের হেফাজত পাওয়ার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হন আইনজীবী সহকারী মোহাম্মদ মামুন। আদালত মা সুমাইয়ার কাছে শিশুকে হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সদর দক্ষিণ থানায় যোগাযোগ করেন মামুন। বিষয়টি জানার পর ওসি সেলিম আহমেদ অত্যন্ত দ্রুত ও আন্তরিক পদক্ষেপ নেন এবং তার নির্দেশে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত সীমান্তসংলগ্ন কালীর বাজার নলপুর এলাকা থেকে শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে। পরবর্তীতে থানা চত্বরে এক আবেগঘন মুহূর্তে দশ মাসের শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা।

দ্রুত অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিকেল নাগাদ শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে থানায় এনে শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হলে কান্না আর আনন্দে ভেসে যায় পুরো পরিবেশ।

ওসি সেলিম আহমেদ বলেন, “মানুষের বিপদে পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পুলিশ শুধু আইন প্রয়োগকারী নয়, জনগণের বন্ধু এটা কাজের মাধ্যমেই আমরা প্রমাণ করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “এটি ছিল আদালতের আদেশ এবং মানবিক বিষয়। আইন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। শিশুটি তার মায়ের কাছে ফিরে গেছে এটাই সবচেয়ে বড় সন্তুষ্টি।”

এ মানবিক উদ্যোগে স্থানীয়রা ওসি সেলিম আহমেদ ও সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের ভাষায়, “এমন পুলিশই জনগণের ভরসা।”

স্থানীয় সচেতন মহল ও মানবাধিকারকর্মীরা ঘটনাটিকে একটি মানবিক ও দৃষ্টান্তমূলক পুলিশি উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন। পুলিশের এমন দ্রুত ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করল বলে মন্তব্য করেন তারা।

ডিএস./

ট্যাগ :

সিসি ক্যামেরা থাকা ভোটকেন্দ্র নিয়ে ইসির নির্দেশনা

 সদর দক্ষিণ ওসি সেলিমের মানবিক উদ্যোগে উদ্ধার, দশ মাসের শিশু

প্রকাশিত : ০২:৪১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম আহমেদের মানবিক ও তৎপর উদ্যোগে মায়ের কোলে ফিরে এসেছে হারিয়ে যাওয়া দশ মাসের এক শিশু।

ঘটনার সূত্রপাত দুই বছর আগে। কুমিল্লা কোতোয়ালী থানার দক্ষিণ ৩নং দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়নের খেতাশার গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী সহকারী মোহাম্মদ মামুনের কন্যা সন্তান সুমাইয়ার বিয়ে হয় সদর দক্ষিণ থানার পিপুলিয়া সাদা ঘর এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আজাদ হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের প্রথম এক বছর ভালো কাটলেও বিদেশ যাওয়ার পর স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ইতালিপ্রবাসী আজাদ হোসেনের অনুপস্থিতিতে সুমাইয়া শ্বশুরবাড়িতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রায় দশ দিন আগে সন্তানের বয়স মাত্র দশ মাস থাকা অবস্থায় সুমাইয়াকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তার সন্তানকে তার কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন সুমাইয়ার পরিবার। মেয়ের সন্তানের হেফাজত পাওয়ার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হন আইনজীবী সহকারী মোহাম্মদ মামুন। আদালত মা সুমাইয়ার কাছে শিশুকে হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সদর দক্ষিণ থানায় যোগাযোগ করেন মামুন। বিষয়টি জানার পর ওসি সেলিম আহমেদ অত্যন্ত দ্রুত ও আন্তরিক পদক্ষেপ নেন এবং তার নির্দেশে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত সীমান্তসংলগ্ন কালীর বাজার নলপুর এলাকা থেকে শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে। পরবর্তীতে থানা চত্বরে এক আবেগঘন মুহূর্তে দশ মাসের শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা।

দ্রুত অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিকেল নাগাদ শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে থানায় এনে শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হলে কান্না আর আনন্দে ভেসে যায় পুরো পরিবেশ।

ওসি সেলিম আহমেদ বলেন, “মানুষের বিপদে পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পুলিশ শুধু আইন প্রয়োগকারী নয়, জনগণের বন্ধু এটা কাজের মাধ্যমেই আমরা প্রমাণ করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “এটি ছিল আদালতের আদেশ এবং মানবিক বিষয়। আইন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। শিশুটি তার মায়ের কাছে ফিরে গেছে এটাই সবচেয়ে বড় সন্তুষ্টি।”

এ মানবিক উদ্যোগে স্থানীয়রা ওসি সেলিম আহমেদ ও সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের ভাষায়, “এমন পুলিশই জনগণের ভরসা।”

স্থানীয় সচেতন মহল ও মানবাধিকারকর্মীরা ঘটনাটিকে একটি মানবিক ও দৃষ্টান্তমূলক পুলিশি উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন। পুলিশের এমন দ্রুত ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করল বলে মন্তব্য করেন তারা।

ডিএস./