০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ক্ষমা চাইল সিটি ব্যাংক

বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (অ্যাটর্নি হস্তান্তর) জালিয়াতি করে দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুর টাকা উত্তোলনের ঘটনায় তিন রকমের তারিখ এবং ঘষামাজা নথির বিষয়ে ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছে সিটি ব্যাংকের গুলশান এভিনিউ শাখা। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য সোমবার পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত। এছাড়াও এ সংক্রান্ত মূল নথি নিয়ে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) উপস্থিত ছিলেন আদালতে। এ বিষয়ে রবিবার শুনানি হয়েছে। পরে মামলার শুনানি মুলতবি করা হয়। তিন রকমের তারিখ এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বন্ধের দিনে কীভাবে টাকা তোলা হলো সিটি ব্যাংক থেকে তার ব্যাখ্যা শুনানির দিনে রোববারহাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। অন্যদিকে আঞ্জু কাপুরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আর সুবহান। মোস্তফা জগলুলের দুই মেয়ে মুশফেকা ও মুবাশ্বিরার পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। সিটি ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন মির্জা সুলতান আল রাজী। এদিন প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের মেয়ে মুশফিকা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সিটি ব্যাংক থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে টাকা উত্তোলন এবং ব্যাংকের নথিতে ঘষামাজা তারিখ এবং তিন রকম তারিখের বিষয়ে ওই ব্যাংকের ম্যানেজারকে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সরকারি ছুটির দিনে আঞ্জু কাপুর কীভাবে ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে জগলুলের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে সিটি ব্যাংক গুলশান শাখার ম্যানেজারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আদালতে তাদের পক্ষে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং সিআইডির কাছে থাকা ব্যাংকের মূল নথিপত্র হাইকোর্টকে দেখান। এরপর আদালত ওইসব নথি দেখে সিআইডির অফিসারকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, এ বিষয়ে (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের) তদন্তে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ করবে না। পরে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিন ঠিক করেন আদালত।’ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এর আগে প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরের অভিযোগ অনুযায়ী ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন এবং জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।’ একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আরও বলেন, ‘মুশফিকা ও মোবাশ্বেরাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রাতে আদালত বসিয়ে আদেশ দিয়ে তাদের বাবার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। পরে পুলিশ তাদের বাড়িতে ওঠার ব্যবস্থা করেছিল। ‘পরবর্তীতে আঞ্জু কাপুর আদালতে এফিডেভিট দিয়ে দাবি করেন যে, মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ তাকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছিলেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট অর্থাৎ জাতীয় শোক দিবস। ব্যাংক বন্ধের দিনে সিনিয়র কাস্টমার কেয়ার অফিসার স্বাক্ষরিত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তার হলফনামা আকারে জমা দিয়েছেন। আবার সিটি ব্যাংক গুলশান এভিনিউতে তারা একটা কমপ্লেইন দাখিল করেছেন, কিন্তু সেখানে ওই তারিখ ঘষামাজা করে তুলে ফেলা হয়েছে। আর এই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে তিনি (আঞ্জু কাপুর) এক কোটি ৪০ লাখ টাকা উঠিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ মারা যান ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর। এর পরের দিন ব্যাংক থেকে টাকা তোলা হয়। এটা স্পষ্ট একটা জালিয়াতি হয়েছে বলে মোস্তফা ওয়াহিদের বড় মেয়ে মুশফিকা গুলশান থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলাটি দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেটি আমি থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এছাড়াও মোস্তফা ওয়াহিদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুশফিকা ও মোবাশ্বেরার জন্মদাত্রী মা ড. মোমতাজ আদালতে মামলার পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করেছেন।’মামলার এজাহারে বাদী মুশফিকা মোস্তফা অভিযোগ করেন, ‘আমার বাবা ১০ অক্টোবর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে আঞ্জু কাপুর এক ভারতীয় নারীকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়োগ দেন। বাবার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় গেলে ব্যাংক থেকে জানানো হয়, গতকাল অর্থাৎ ১১ অক্টোবর আঞ্জু কাপুর ব্যাংকে এসে টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। বাবার মৃত্যুর বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানেন না।’ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে গত ৩ নভেম্বর হাইকোর্ট দুই বোন এবং তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের সম্পত্তি দাবির সপক্ষে কাগজপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে আদেশ দেন। একইসঙ্গে গুলশানের (২-এ/৯৫ নম্বর) ওই বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র কোনো পক্ষ বাইরে নিতে পারবে না এবং দুই বোনের নিরাপত্তা অব্যাহত রাখতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে বাবার মৃত্যুর পর মালিকানা নিয়ে বিরোধে গুলশান ২-এ/৯৫ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাড়ির সামনে অবস্থান নেন দুই বোন। তাদের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। পরে এই দুই বোনের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ আসার পরে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাড়িতে প্রবেশ ও সেখানে তাদের অবস্থান নিশ্চিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ওই দিন রাতেই আদালতকে জানাতে বলা হয়। আদেশ বাস্তবায়ন করার পরে তিনি তা আদালতে জানান।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বহিস্কৃত যুবদলের দুই নেতা, নিহত জুবায়ের যুবলীগের কর্মী

ক্ষমা চাইল সিটি ব্যাংক

প্রকাশিত : ১২:০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (অ্যাটর্নি হস্তান্তর) জালিয়াতি করে দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুর টাকা উত্তোলনের ঘটনায় তিন রকমের তারিখ এবং ঘষামাজা নথির বিষয়ে ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছে সিটি ব্যাংকের গুলশান এভিনিউ শাখা। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য সোমবার পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত। এছাড়াও এ সংক্রান্ত মূল নথি নিয়ে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) উপস্থিত ছিলেন আদালতে। এ বিষয়ে রবিবার শুনানি হয়েছে। পরে মামলার শুনানি মুলতবি করা হয়। তিন রকমের তারিখ এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বন্ধের দিনে কীভাবে টাকা তোলা হলো সিটি ব্যাংক থেকে তার ব্যাখ্যা শুনানির দিনে রোববারহাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। অন্যদিকে আঞ্জু কাপুরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আর সুবহান। মোস্তফা জগলুলের দুই মেয়ে মুশফেকা ও মুবাশ্বিরার পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। সিটি ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন মির্জা সুলতান আল রাজী। এদিন প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের মেয়ে মুশফিকা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সিটি ব্যাংক থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে টাকা উত্তোলন এবং ব্যাংকের নথিতে ঘষামাজা তারিখ এবং তিন রকম তারিখের বিষয়ে ওই ব্যাংকের ম্যানেজারকে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সরকারি ছুটির দিনে আঞ্জু কাপুর কীভাবে ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে জগলুলের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে সিটি ব্যাংক গুলশান শাখার ম্যানেজারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আদালতে তাদের পক্ষে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং সিআইডির কাছে থাকা ব্যাংকের মূল নথিপত্র হাইকোর্টকে দেখান। এরপর আদালত ওইসব নথি দেখে সিআইডির অফিসারকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, এ বিষয়ে (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের) তদন্তে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ করবে না। পরে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিন ঠিক করেন আদালত।’ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এর আগে প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরের অভিযোগ অনুযায়ী ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন এবং জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।’ একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আরও বলেন, ‘মুশফিকা ও মোবাশ্বেরাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রাতে আদালত বসিয়ে আদেশ দিয়ে তাদের বাবার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। পরে পুলিশ তাদের বাড়িতে ওঠার ব্যবস্থা করেছিল। ‘পরবর্তীতে আঞ্জু কাপুর আদালতে এফিডেভিট দিয়ে দাবি করেন যে, মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ তাকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছিলেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট অর্থাৎ জাতীয় শোক দিবস। ব্যাংক বন্ধের দিনে সিনিয়র কাস্টমার কেয়ার অফিসার স্বাক্ষরিত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তার হলফনামা আকারে জমা দিয়েছেন। আবার সিটি ব্যাংক গুলশান এভিনিউতে তারা একটা কমপ্লেইন দাখিল করেছেন, কিন্তু সেখানে ওই তারিখ ঘষামাজা করে তুলে ফেলা হয়েছে। আর এই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে তিনি (আঞ্জু কাপুর) এক কোটি ৪০ লাখ টাকা উঠিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ মারা যান ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর। এর পরের দিন ব্যাংক থেকে টাকা তোলা হয়। এটা স্পষ্ট একটা জালিয়াতি হয়েছে বলে মোস্তফা ওয়াহিদের বড় মেয়ে মুশফিকা গুলশান থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলাটি দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেটি আমি থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এছাড়াও মোস্তফা ওয়াহিদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুশফিকা ও মোবাশ্বেরার জন্মদাত্রী মা ড. মোমতাজ আদালতে মামলার পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করেছেন।’মামলার এজাহারে বাদী মুশফিকা মোস্তফা অভিযোগ করেন, ‘আমার বাবা ১০ অক্টোবর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে আঞ্জু কাপুর এক ভারতীয় নারীকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়োগ দেন। বাবার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় গেলে ব্যাংক থেকে জানানো হয়, গতকাল অর্থাৎ ১১ অক্টোবর আঞ্জু কাপুর ব্যাংকে এসে টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। বাবার মৃত্যুর বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানেন না।’ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে গত ৩ নভেম্বর হাইকোর্ট দুই বোন এবং তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের সম্পত্তি দাবির সপক্ষে কাগজপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে আদেশ দেন। একইসঙ্গে গুলশানের (২-এ/৯৫ নম্বর) ওই বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র কোনো পক্ষ বাইরে নিতে পারবে না এবং দুই বোনের নিরাপত্তা অব্যাহত রাখতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে বাবার মৃত্যুর পর মালিকানা নিয়ে বিরোধে গুলশান ২-এ/৯৫ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাড়ির সামনে অবস্থান নেন দুই বোন। তাদের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। পরে এই দুই বোনের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ আসার পরে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাড়িতে প্রবেশ ও সেখানে তাদের অবস্থান নিশ্চিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ওই দিন রাতেই আদালতকে জানাতে বলা হয়। আদেশ বাস্তবায়ন করার পরে তিনি তা আদালতে জানান।