০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

ইবিতে আসকারী প্রশাসনে নারীর ক্ষমতায়নে রেকর্ড

দেশ-বিদেশে নারীরা যুগ যুগ ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’। স্বাধীনতা উত্তর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে এখানে হিন্দু ও নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হতো না। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রথমবারের মতো নারী শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ দলের কাছে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস জিম্মি ছিল। যার দরুন নারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার মতো অবস্থা ছিলোনা। এমনকি নারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন অনেকটা রুপকথার কল্পনা সদৃশ ছিল। কিন্তু বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারীর আমলে নারীর ক্ষমতায় অভূতপূর্ব রেকর্ড গড়েছে। অনেক সংখ্যক নারী শিক্ষককে প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছে বলে জানা যায়। নারী শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণপদে বিচক্ষণতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন এমনটাই দাবি করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

ড. রাশিদ আসকারী ২০১৬ সালের ২১অগাস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামুখী উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশাসনিক পদে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রাধ্যক্ষ, দ্বিতীয় নারী ডিন ও সহকারী প্রক্টর নিয়োগ আসকারী প্রশাসনের আমলেই হয়েছে বলে দাবী কর্তৃপক্ষের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ সূত্রে জানা যায়, গত চার বছরে বিভিন্ন বিভাগে ৫৯ জনের মধ্যে ৩৩ জন নারী শিক্ষক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন।

বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন, বিভাগীয় প্রধান, প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে অনেক নারী শিক্ষককে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৩টি হলেই প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নারী শিক্ষককে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বাবলি সাবিনা আজহার ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে। ড. শেলীনা নাসরিন বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে বর্তমানে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. নিলুফা আক্তার বানু। এবং খালেদা জিয়া হলে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আইন অনুষদে অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে। এ অনুষদে বর্তমানে ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন আরেকজন নারী অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড.নাসিম বানুকে।

বিভাগীয় সভাপতি পদেও রয়েছেন নারী শিক্ষকগণ। ইংরেজি বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ড. সালমা সুলতানা, ডেভেলোপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক ড. নাসিম বানু। আইন বিভাগে অধ্যাপক ড. নুরুন নাহার। বিনসিসির টি.ইউ.ও পদে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড.ইয়াসমিন আরা সাথি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ, সেকশন অফিসার, কেন্দ্রীয় চিকিৎসালয়ে নারী ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ, বিভিন্ন বিভাগের ও দপ্তরে অনেক নারী কর্মকর্তাকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারী জাগরণের যে বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে তারই স্পর্শ আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতে চেষ্টা করেছি। নারী শিক্ষার্থী ও নারী সহকর্মী সবার জন্য সহ অবস্থান এবং উন্নয়নের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে সাংবাদিকতায় কোন নারী শিক্ষর্থী সুযোগ পায়নি। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী সাংবাদিক সংগঠন ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সুবাদে বিগত বছর থেকে নারী শিক্ষার্থীরাও উন্মুক্তভাবে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা চর্চা করার সুযোগ পেয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত

জনপ্রিয়

টমেটো চাষীদের নিয়ে এসিআই সীড এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

ইবিতে আসকারী প্রশাসনে নারীর ক্ষমতায়নে রেকর্ড

প্রকাশিত : ০৫:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুলাই ২০২০

দেশ-বিদেশে নারীরা যুগ যুগ ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’। স্বাধীনতা উত্তর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে এখানে হিন্দু ও নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হতো না। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রথমবারের মতো নারী শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ দলের কাছে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস জিম্মি ছিল। যার দরুন নারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার মতো অবস্থা ছিলোনা। এমনকি নারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন অনেকটা রুপকথার কল্পনা সদৃশ ছিল। কিন্তু বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারীর আমলে নারীর ক্ষমতায় অভূতপূর্ব রেকর্ড গড়েছে। অনেক সংখ্যক নারী শিক্ষককে প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছে বলে জানা যায়। নারী শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণপদে বিচক্ষণতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন এমনটাই দাবি করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

ড. রাশিদ আসকারী ২০১৬ সালের ২১অগাস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামুখী উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশাসনিক পদে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রাধ্যক্ষ, দ্বিতীয় নারী ডিন ও সহকারী প্রক্টর নিয়োগ আসকারী প্রশাসনের আমলেই হয়েছে বলে দাবী কর্তৃপক্ষের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ সূত্রে জানা যায়, গত চার বছরে বিভিন্ন বিভাগে ৫৯ জনের মধ্যে ৩৩ জন নারী শিক্ষক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন।

বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন, বিভাগীয় প্রধান, প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে অনেক নারী শিক্ষককে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৩টি হলেই প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নারী শিক্ষককে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বাবলি সাবিনা আজহার ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে। ড. শেলীনা নাসরিন বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে বর্তমানে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. নিলুফা আক্তার বানু। এবং খালেদা জিয়া হলে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আইন অনুষদে অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে। এ অনুষদে বর্তমানে ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন আরেকজন নারী অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড.নাসিম বানুকে।

বিভাগীয় সভাপতি পদেও রয়েছেন নারী শিক্ষকগণ। ইংরেজি বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ড. সালমা সুলতানা, ডেভেলোপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক ড. নাসিম বানু। আইন বিভাগে অধ্যাপক ড. নুরুন নাহার। বিনসিসির টি.ইউ.ও পদে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড.ইয়াসমিন আরা সাথি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ, সেকশন অফিসার, কেন্দ্রীয় চিকিৎসালয়ে নারী ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ, বিভিন্ন বিভাগের ও দপ্তরে অনেক নারী কর্মকর্তাকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারী জাগরণের যে বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে তারই স্পর্শ আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতে চেষ্টা করেছি। নারী শিক্ষার্থী ও নারী সহকর্মী সবার জন্য সহ অবস্থান এবং উন্নয়নের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে সাংবাদিকতায় কোন নারী শিক্ষর্থী সুযোগ পায়নি। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী সাংবাদিক সংগঠন ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সুবাদে বিগত বছর থেকে নারী শিক্ষার্থীরাও উন্মুক্তভাবে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা চর্চা করার সুযোগ পেয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত