০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাজারে গতি ফেরাতে ২ উদ্যোগ

  • সাইফুল ইসলাম
  • প্রকাশিত : ১২:০১:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 23

গত কয়েক কার্যদিবস ধরে ছন্দপতনে থাকা দেশের শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে দুটি উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথমত, পুঁজিবাজারে সুশাসন আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাইছে। পাশাপাশি, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে। দেশের শেয়ারবাজারে বড় অংকের বিদেশি বিনিয়োগ আনতে বিভিন্ন দেশে রোড শো করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। ৯ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে শুরু হচ্ছে চার দিনের রোড শো। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বিখ্যাত দুবাই মলের কাছে স্কাইভিউ হোটেলে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি রোড শো’টি চলবে। জানা গেছে, এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য বড় শহরেও রোড শো আয়োজন করবে বিএসইসি।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখে আরও কঠোর পথে হাটছে বিএসইসি। এর অংশ হিসেবে সর্বশেষ নেওয়া উদ্যোগটি হলো, লেনদেন শুরুর আগেই দিনের সর্বোচ্চ দামে ক্রয়াদেশ দিয়ে শেয়ারের দাম প্রভাবিত করায় দুটি বিও হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি লেনদেন যন্ত্রে এ ক্রয়াদেশ দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন ট্রেডারকে (অনুমোদিত প্রতিনিধি) সাময়িকভাবে লেনদেন কার্যক্রম থেকে বিরত করা হয়েছে।
এদিকে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানিয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়ায় বাজারে পতন চলছে। কিছুদিন অপেক্ষা করে তারা আবার বিনিয়োগ শুরু করবে। তখন স্বাভাবিক ভাবেই আবার দর বাড়বে। তাই শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ার বাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ পতনের কারণে ২২ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন হারিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর মধ্যে শুধু গেলো সপ্তাহেই হারিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বড় অঙ্কের বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে কমেছে সবকটি মূল্য সূচকও। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় দেড় শতাংশ এবং লেনদেন সাড়ে ৩৭ শতাংশের মতো কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা, যা এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল চার লাখ ৮৪ হাজার ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। অবশ্য এই বছরের শুরুর দিকে বাজার মূলধন রেকর্ড পরিমাণ তথা ৫ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল।
তথ্য বলছে, আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে আট হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এই হিসাবে টানা তিন সপ্তাহের পতনে ডিএসই ২২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে। অবশ্য এর আগে টানা ৭ সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর বাজার মূলধন এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা বেড়েছিল।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২০৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১১১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে কমেছিল ৭৩ দশমিক ১৩ পয়েন্ট । তিন সপ্তাহের এই পতনের আগে টানা সাত সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ১ হাজার ৩৭ পয়েন্ট বাড়ে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

গণপরিবহণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে বাস মালিকদের সাথে ডিএমপি কমিশনারের মতবিনিময়

বাজারে গতি ফেরাতে ২ উদ্যোগ

প্রকাশিত : ১২:০১:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

গত কয়েক কার্যদিবস ধরে ছন্দপতনে থাকা দেশের শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে দুটি উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথমত, পুঁজিবাজারে সুশাসন আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাইছে। পাশাপাশি, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে। দেশের শেয়ারবাজারে বড় অংকের বিদেশি বিনিয়োগ আনতে বিভিন্ন দেশে রোড শো করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। ৯ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে শুরু হচ্ছে চার দিনের রোড শো। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বিখ্যাত দুবাই মলের কাছে স্কাইভিউ হোটেলে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি রোড শো’টি চলবে। জানা গেছে, এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য বড় শহরেও রোড শো আয়োজন করবে বিএসইসি।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখে আরও কঠোর পথে হাটছে বিএসইসি। এর অংশ হিসেবে সর্বশেষ নেওয়া উদ্যোগটি হলো, লেনদেন শুরুর আগেই দিনের সর্বোচ্চ দামে ক্রয়াদেশ দিয়ে শেয়ারের দাম প্রভাবিত করায় দুটি বিও হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি লেনদেন যন্ত্রে এ ক্রয়াদেশ দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন ট্রেডারকে (অনুমোদিত প্রতিনিধি) সাময়িকভাবে লেনদেন কার্যক্রম থেকে বিরত করা হয়েছে।
এদিকে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানিয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়ায় বাজারে পতন চলছে। কিছুদিন অপেক্ষা করে তারা আবার বিনিয়োগ শুরু করবে। তখন স্বাভাবিক ভাবেই আবার দর বাড়বে। তাই শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ার বাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ পতনের কারণে ২২ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন হারিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর মধ্যে শুধু গেলো সপ্তাহেই হারিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বড় অঙ্কের বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে কমেছে সবকটি মূল্য সূচকও। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় দেড় শতাংশ এবং লেনদেন সাড়ে ৩৭ শতাংশের মতো কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা, যা এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল চার লাখ ৮৪ হাজার ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। অবশ্য এই বছরের শুরুর দিকে বাজার মূলধন রেকর্ড পরিমাণ তথা ৫ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল।
তথ্য বলছে, আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে আট হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এই হিসাবে টানা তিন সপ্তাহের পতনে ডিএসই ২২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে। অবশ্য এর আগে টানা ৭ সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর বাজার মূলধন এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা বেড়েছিল।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২০৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১১১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট এবং তার আগের সপ্তাহে কমেছিল ৭৩ দশমিক ১৩ পয়েন্ট । তিন সপ্তাহের এই পতনের আগে টানা সাত সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ১ হাজার ৩৭ পয়েন্ট বাড়ে।