তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং মূলধন যোগানের মাধ্যমে কষ্ট দূর করতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
মঙ্গলবার কক্সবাজার বেসিক সেন্টার পরিদর্শন শেষে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা বা নীতিমালা প্রণয়ন করলে তাঁতিদের জীবনমান উন্নয়ন করা সম্ভব। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সেই রূপ নীতিমালা প্রণয়ন করবে। এরই মধ্যে তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং মূলধন যোগানের মাধ্যমে কষ্ট দূর করতে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, তাঁতশিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যের ধারক। এ শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৯ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৬ লাখ মোট ১৫ লাখ লোক জড়িত রয়েছে। বছরে ৪৭ দশমিক ৪৭৪ কোটি মিটার কাপড় উৎপাদনের মাধ্যমে তাঁতশিল্প দেশের মোট বস্ত্র চাহিদার প্রায় ২৮ ভাগ পূরণ করে থাকে। তাঁতিদের চলতি মূলধনের চাহিদা মিটাতে ‘তাঁতিদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি’র আওতায় এ পর্যন্ত (ডিসেম্বর, ২০২০) ৪৬ হাজার ৬৪৫ জন প্রান্তিক তাঁতিকে নয় হাজার ৬৮৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু সংলগ্ন মাদারীপুরের শিবচর ও শরীয়তপুরের জাজিরায় নির্মিত হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী। সরকারের পক্ষ থেকে তাতিঁদের সুতা রঙসহ বিভিন্ন কাঁচামালের সুবিধা দেয়া হবে। নির্মিত হবে আন্তর্জাতিক মানের প্রর্দশনী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
দস্তগীর গাজী বলেন, তাঁতশিল্প বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কুঠির শিল্প। বাংলাদেশের বস্ত্রখাতের অধিকাংশ যোগান আসে তাঁত শিল্প থেকে। জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। সর্বশেষ তাঁত শুমারী অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরীণ বস্ত্র চাহিদার ৪০ শতাংশ তাঁতশিল্প যোগান দিয়ে থাকে। এ শিল্পের বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ ৬৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজনের দিক থেকে তাঁতশিল্প খাতের অবদান ১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, দেশে বিদ্যমান ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২টি তাঁত ইউনিটে মোট হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা রয়েছে ৫ লাখ ৫ হাজার ৫৫৬টি। এর মধ্যে চালু রয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ৮৫১টি তাঁত।