১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

শহীদ মিনার ঘিরে শেষ পর্বের ব্যস্ততা

রাত পোহালেই ২১ ফেব্রুয়ারি। আজ সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নানা আয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৫২ এর ভাষা শহীদদের, যাদের রক্তস্রোতে আমরা পেয়েছিলাম বাংলা ভাষা। তাদের স্মরণেই নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। প্রতিবারের মতই এবারও মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে মিনার প্রাঙ্গণে। শহীদ মিনার এলাকায় দেখা যায়, সৌন্দর্য বাড়াতে শহীদ মিনারের মূল বেদিসহ আশপাশের রাস্তার দেয়ালে নতুন রঙ করা হচ্ছে। ঝাড়ু ও ধোয়ামোছাসহ পরিষ্কার করার কাজ চলছে পুরোদমে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে দেয়াললিখন, আলপনা, সাজসজ্জা ও গাছের গোড়া রং করার কাজ চলছে। শহীদ মিনার ও সংলগ্ন এলাকায় মশার ওষুধও স্প্রে করা হয়েছে। এখন কাউকে মিনার আঙিনার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মূল বেদিসহ তৎসংলগ্ন এলাকা নতুন করে রঙ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারদিকে সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। মিনারের উত্তর দিকে দেয়াল নানা রঙে রাঙানো হচ্ছে। দেয়ালে আলপনা ও ভাষা আন্দোলনের নানা গান, কবিতা ও স্লোগান লেখার কাজ চলছে। একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করেছে ডিএমপি। এসময় ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করতে যাচ্ছি। এখন করোনা পরিস্থিতি। এ কারণে এবার রাজনৈতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুজনের বেশি একসঙ্গে শহীদ মিনারে না আসার অনুরোধ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকিও নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে একুশে উদযাপন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, যথাসময়ে আমরা কার্যক্রম শেষ করতে পারব। একুশে ফেব্রুয়ারি মাস্ক পরিধান ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শহীদ মিনারে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহিদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। মাস্ক এবং হাত ধোয়ার বিষয়গুলো সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি একুশে উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সমন্বয়কারী, সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়াকে যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানীকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এ সমন্বয় কমিটি ছাড়াও অমর একুশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে বিভিন্ন উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে। একুশে আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, একুশ উদযাপন আমাদের রাষ্ট্রীয় আচার ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব। আমরা ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেছি। প্রতিবারের ন্যায় অমর একুশে উদযাপনের আয়োজনে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরইমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে যাবতীয় কাজও চলছে। আগামীকালের মধ্যে শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করছি। করোনার কারণে এবারের অমর একুশে পালনে কী পরিবর্তন আসছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, প্রতিবার কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জনসমাগম হতো, আপ্যায়ন হতো। এবার সে ব্যবস্থা থাকছে না। আমন্ত্রিত অতিথিদের শহীদ মিনার চত্বরেই আমরা অভ্যর্থনার আয়োজন করব। আর মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর জানান, একুশ উদযাপনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্যারিকেড দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ পাস ছাড়া ঢুকতে পারবে না। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রক্টরিয়াল টিম টহল দেবে। তাছাড়া ঢাবির বিএনসিসি এবং স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।

ট্যাগ :

বীরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

শহীদ মিনার ঘিরে শেষ পর্বের ব্যস্ততা

প্রকাশিত : ১২:০১:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

রাত পোহালেই ২১ ফেব্রুয়ারি। আজ সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নানা আয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৫২ এর ভাষা শহীদদের, যাদের রক্তস্রোতে আমরা পেয়েছিলাম বাংলা ভাষা। তাদের স্মরণেই নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। প্রতিবারের মতই এবারও মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে মিনার প্রাঙ্গণে। শহীদ মিনার এলাকায় দেখা যায়, সৌন্দর্য বাড়াতে শহীদ মিনারের মূল বেদিসহ আশপাশের রাস্তার দেয়ালে নতুন রঙ করা হচ্ছে। ঝাড়ু ও ধোয়ামোছাসহ পরিষ্কার করার কাজ চলছে পুরোদমে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে দেয়াললিখন, আলপনা, সাজসজ্জা ও গাছের গোড়া রং করার কাজ চলছে। শহীদ মিনার ও সংলগ্ন এলাকায় মশার ওষুধও স্প্রে করা হয়েছে। এখন কাউকে মিনার আঙিনার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মূল বেদিসহ তৎসংলগ্ন এলাকা নতুন করে রঙ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারদিকে সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। মিনারের উত্তর দিকে দেয়াল নানা রঙে রাঙানো হচ্ছে। দেয়ালে আলপনা ও ভাষা আন্দোলনের নানা গান, কবিতা ও স্লোগান লেখার কাজ চলছে। একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করেছে ডিএমপি। এসময় ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করতে যাচ্ছি। এখন করোনা পরিস্থিতি। এ কারণে এবার রাজনৈতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুজনের বেশি একসঙ্গে শহীদ মিনারে না আসার অনুরোধ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকিও নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে একুশে উদযাপন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, যথাসময়ে আমরা কার্যক্রম শেষ করতে পারব। একুশে ফেব্রুয়ারি মাস্ক পরিধান ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শহীদ মিনারে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহিদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। মাস্ক এবং হাত ধোয়ার বিষয়গুলো সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি একুশে উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সমন্বয়কারী, সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়াকে যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানীকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এ সমন্বয় কমিটি ছাড়াও অমর একুশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে বিভিন্ন উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে। একুশে আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, একুশ উদযাপন আমাদের রাষ্ট্রীয় আচার ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব। আমরা ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেছি। প্রতিবারের ন্যায় অমর একুশে উদযাপনের আয়োজনে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরইমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে যাবতীয় কাজও চলছে। আগামীকালের মধ্যে শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করছি। করোনার কারণে এবারের অমর একুশে পালনে কী পরিবর্তন আসছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, প্রতিবার কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জনসমাগম হতো, আপ্যায়ন হতো। এবার সে ব্যবস্থা থাকছে না। আমন্ত্রিত অতিথিদের শহীদ মিনার চত্বরেই আমরা অভ্যর্থনার আয়োজন করব। আর মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর জানান, একুশ উদযাপনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্যারিকেড দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ পাস ছাড়া ঢুকতে পারবে না। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রক্টরিয়াল টিম টহল দেবে। তাছাড়া ঢাবির বিএনসিসি এবং স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।