০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

নেত্রকোনায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ঝড়-বৃষ্টি মওসুমের শুরু হওয়ার আগেই নেত্রকোনায় প্রচ- শিলাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও শাক-সবজি এবং আম ও লিচুর মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির আঘাতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে হাওরাঞ্চলের উঠতি বোরো ধান।
মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টায় দিকে হঠাৎ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পৌনে ৫টার দিকে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রথমে ছোট শিলা পড়তে শুরু করে। পরে ৬টা পর্যন্ত এ শিলাবৃষ্টি হয়।। শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নেত্রকোনা সদর, কলমাকান্দা, মদন, খালিয়াজুরি ও পূর্বধলা উপজেলায়।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাওয়ালীকোনা গ্রামের কৃষক এস এম আরিফুল হাসান পুতুল জানান, প্রচ- শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ইউপির বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৬০ ভাগ টিনের ঘর বড় বড় শিলা পড়ে ফুটো (ছিদ্র) হয়ে গেছে। অনন্তপুর গ্রামের কামরুন্নাহার লিপি বলেন, ভোরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মনে হয়েছিল ফসলের ভাল হবে। কিন্তু শেষ দিকে ১৫/২০ মিনিট শিলা পড়ায় গ্রামের বেশির ভাগ বাড়ির টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে।

ফচিকা গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘শিলায় আমার শাক-সবজি ক্ষেত মাটিতে মিইশ্যা গেছে।’

কাইলাটী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, ‘এই সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম জমিতে সেচের পানি কম দেওন লাঘব। কিন্তু শেষ দিকে পাথর পইড়া ধান গাছের গজানো শীষ নষ্ট অইয়া গেছে।’

মৌজেবালী গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া বলেন, ‘এইবার আম ও লিচু গাছে ব্যাপক মুকুল আইছিলো। শিলায় বেশির ভাগ মুকুল পইড়া গেছে।

শিলাবৃষ্টির ফলে সবচেয়ে বেশি বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির ছায়ার হাওর ও গাজীপুর ইউপির বয়রার হাওর এলাকায়। ওই এলাকার কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, শিলাবৃষ্টিতে ছায়ার হাওরের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে উঠতি বোরো ধানের সব চারা ভেঙে মাটিতে লেপ্টে গেছে।স্থানীয় কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামীম মোড়ল জানান, সংবাদ পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো জমি ঘুরে দেখেছি। শিলাবৃষ্টিতে এখানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ছায়ার হাওর ও বয়রার হাওরের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে স্বীকার করেন খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে এ বৃষ্টিটা কৃষকদের ফসলের জন্য খুবই উপকারি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু স্বাভাবিক বৃষ্টি না হয়ে শিলাবৃষ্টি হওয়ার কারণে জেলা সদরসহ ৫ উপজেলায় আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত যে খবর পাওয়া গেছে, তাতে শিলাবৃষ্টিতে অনেক কৃষকের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। শাক সবজির ক্ষতি হয়েছে।

ট্যাগ :

সাবেক মার্কিন বিচারক ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন

নেত্রকোনায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত : ১২:০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১

ঝড়-বৃষ্টি মওসুমের শুরু হওয়ার আগেই নেত্রকোনায় প্রচ- শিলাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও শাক-সবজি এবং আম ও লিচুর মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির আঘাতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে হাওরাঞ্চলের উঠতি বোরো ধান।
মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টায় দিকে হঠাৎ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পৌনে ৫টার দিকে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রথমে ছোট শিলা পড়তে শুরু করে। পরে ৬টা পর্যন্ত এ শিলাবৃষ্টি হয়।। শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নেত্রকোনা সদর, কলমাকান্দা, মদন, খালিয়াজুরি ও পূর্বধলা উপজেলায়।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাওয়ালীকোনা গ্রামের কৃষক এস এম আরিফুল হাসান পুতুল জানান, প্রচ- শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ইউপির বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৬০ ভাগ টিনের ঘর বড় বড় শিলা পড়ে ফুটো (ছিদ্র) হয়ে গেছে। অনন্তপুর গ্রামের কামরুন্নাহার লিপি বলেন, ভোরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মনে হয়েছিল ফসলের ভাল হবে। কিন্তু শেষ দিকে ১৫/২০ মিনিট শিলা পড়ায় গ্রামের বেশির ভাগ বাড়ির টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে।

ফচিকা গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘শিলায় আমার শাক-সবজি ক্ষেত মাটিতে মিইশ্যা গেছে।’

কাইলাটী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, ‘এই সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম জমিতে সেচের পানি কম দেওন লাঘব। কিন্তু শেষ দিকে পাথর পইড়া ধান গাছের গজানো শীষ নষ্ট অইয়া গেছে।’

মৌজেবালী গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া বলেন, ‘এইবার আম ও লিচু গাছে ব্যাপক মুকুল আইছিলো। শিলায় বেশির ভাগ মুকুল পইড়া গেছে।

শিলাবৃষ্টির ফলে সবচেয়ে বেশি বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির ছায়ার হাওর ও গাজীপুর ইউপির বয়রার হাওর এলাকায়। ওই এলাকার কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, শিলাবৃষ্টিতে ছায়ার হাওরের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে উঠতি বোরো ধানের সব চারা ভেঙে মাটিতে লেপ্টে গেছে।স্থানীয় কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামীম মোড়ল জানান, সংবাদ পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো জমি ঘুরে দেখেছি। শিলাবৃষ্টিতে এখানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ছায়ার হাওর ও বয়রার হাওরের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে স্বীকার করেন খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে এ বৃষ্টিটা কৃষকদের ফসলের জন্য খুবই উপকারি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু স্বাভাবিক বৃষ্টি না হয়ে শিলাবৃষ্টি হওয়ার কারণে জেলা সদরসহ ৫ উপজেলায় আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত যে খবর পাওয়া গেছে, তাতে শিলাবৃষ্টিতে অনেক কৃষকের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। শাক সবজির ক্ষতি হয়েছে।