নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান অংশগ্রহন করলে ওই অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ডোমার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মঙ্গলবার দুপুরে এমন ঘোষণায় উপজেলার ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষর করা স্মারকলিপি প্রদান করা হয় জেলা প্রশাসকের কাছে। এর আগে তাঁরা একই স্মারকলিপি প্রদান করেন ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. নুরন নবী, সাবেক ডেপুটি কমা-ার এম, এ কবির, সাবেক সহকারী কমা-ার গোলাম রব্বানী, ফারুক আলম প্রধান, রবিউল আলম রব্বী, বজলুল করিম বজু, নুরল আশীন নূর, সহকারী কমা-ার আমিনুর রহমান প্রমুখ।
ওই স্মারকলিপিতে ডোমার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফায়েল আহমেদকে স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান হিসেবে দাবি করে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি থেকে তাঁকে বিরত রাখার অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় ওই অনুষ্ঠান বর্জণের ঘোষনা দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. নুরন নবী বলেন,‘ডোমার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফায়েল আহমেদ স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তাঁর বাবা শওকত আলী সরকারের নাম রয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে একজন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে এটা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। ওই কর্মসূচি থেকে তাঁকে বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি আমরা। সেটি না হলে দিবসটির সরকারি কর্মসূচি বর্জণ করে আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমাদের দাবি উপেক্ষা করে তোফায়েল আহমেদ সরকারি কর্মসূচিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করায় আমরা ওই অনুষ্ঠান বর্জণ করেছি। এসময় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দ ওই অনুষ্ঠান বর্জণ করেন।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফায়েল আহমেদ অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে যে তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছিল সেটি বিতর্কিত হওয়ায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই তালিকা স্থগিত হয়। আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক এসব করা হচ্ছে। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। আমি ছাত্রলীগ থেকে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। আমর তিন ভাই তিন বোন সকলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেই আছে।’
জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের সম্মান দেয়া আমাদের কর্তব্য। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা তাদের সম্মান জানাবো। ডোমার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া স্মারকলিপি পেয়েছি। তাদের দেয়া স্মারকলিপি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে পাঠাবো। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’