চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদী নাব্যতা হারিয়ে এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। পানি শুকিয়ে নালায় পরিণত হওয়া ভৈরর নদীর দুইপাড় দখল করে চলছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ। দামুড়হুদা উপজেলার সুবোলপুর থেকে দুলালনগর পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার জুড়ে ভৈরব নদী। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এই দূষণ ঠেকাতে ও নদী রক্ষা করতে নদীটি পুনঃখনন প্রয়োজন।
দামুড়হুদার সুবোলপুর, পাটাচোরা, বাঘাডাঙ্গা, কাঞ্চনতলা, কার্পাসডাঙ্গা, কানাইডাঙ্গা, ছাতিয়ানতলা, মোক্তারপুর, হাতিভাঙ্গা, কুনিয়াচাঁদপুর, হেমায়েতপুর, নতিপোতা, কালিয়াবকরী, বেড়বাড়ী, চারুলিয়া, দুলালনগর হয়ে মেহেরপুর জেলায় প্রবেশ করেছে।
নদীর পাড় দখল করে স্থানীয়রা মৌসুম বুঝে ধান, গম, পেঁয়াজ, লাল শাক, কফি, পালং শাক, মূলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমের শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন মাস পর্যন্ত খরস্রোতা নদীতে পরিণত থাকলেও বাকি ৯ মাস নদী শুকিয়ে সরু নালায় পরিণত হয়। নদীর কোনো কোনো স্থান ৩/৪ ফুট চওড়া সরু নালায় পরিণত হলেও কোথাও হাঁটু পানির বেশি পানি নেই। পানি না থাকায় স্থানীয়রা অবৈধভাবে নদীর দুই পাড়ের জমি দখল করে কর্ষণ করে চাষাবাদের কারণে বর্ষা মৌসুমে ধোয়াট এসে পলি জমে ভরাট হয়ে যায়। পুনঃখনন করে দুই পাড়ের জমি কর্ষণ বন্ধ করলে আবার নাব্যতা ফিরে পাবে। সেই সাথে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পানির বহুমুখী ব্যবহারসহ দেশীয় মাছের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত সিংহ জানান, ভৈরব নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় কৃষকরা অবৈধভাবে দখল করে সেখানে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ আবাদ করছেন। শুধু ভৈরব নয়, মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়েও একই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এইসব ফসলে বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে মাছগুলো মারা যাচ্ছে। দ্রুত নদীর পাড় দখলমুক্ত করে কর্ষণ ও চাষাবাদ বন্ধ করা হবে। দ্রুত নদীটি পুনঃখনন করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।
দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আইয়ুব আলি জানান, নদীর দুই পাড় কর্ষণ ও নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে ধোয়াট ও স্রোত বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে পলি জমে ভৈরব নদীটি ভরাট হচ্ছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের আবাসস্থল হারিয়ে বিলুপ্ত হতে চলেছে। নদীটি পুনরায় খনন করে পাড় কর্ষণ ও বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করা গেলে আবারো প্রাণ ফিরে পাবে নদীটি।