০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার দুই হাজার পরিবার

অধিক স্রোতের কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার বহু বছর ধরে ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার। সম্প্রতি সময়ে এই ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদীতে পানি বাড়লেই ভাঙন শুরু হয় এবং ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী।সরেজমিন দামোদরদীতে দেখা যায়, গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের হুমকিতে। নদীর খুবই কাছে অবস্থান বিদ্যালয়টির। পাশেই ছিল মুক্তিযোদ্ধা আরিফ উল্যাহ’র বাড়ি। সেটিও কয়েকমাস আগে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনের শিকার হয়েছে বহু মানুষের বসতঘর এবং ফসলি জমি।

 

ভাঙন প্রতিরোধে একমাস আগে চাঁদপুর পানি উন্নয়নবোর্ড অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদ্যালয় এলাকায় ৫০টি বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ফেলে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে পুরোদমে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

 

ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভাঙনের শিকার তৈয়ব আলী হাওলাদার বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ৩ বার ভাঙনের শিকার হয়েছি। বর্তমান নদীর উত্তর পাশে আমাদের বাড়ি ছিলো। এখন কমপক্ষে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে নদী চলে এসেছে। তারপরেও নদীর ভাঙন থামছে না। আমরা সরকারের কাছে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি করছি।

 

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সমির গোলদার বলেন, আমাদের দমোদরদী গ্রাম থেকে শুরু করে মতলব আড়ংবাজার খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারের অধিক পরিবার বসবাস করে। বর্তমানে ৪টি মসজিদ, ৩টি পাকা ব্রিজ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা নদী ভাঙনের হুমকিতে। ভাঙন প্রতিরোধে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছি।

 

ক্ষতিগ্রস্ত জুয়েল প্রধানিয়া ও মো. কামাল বকাউল বলেন, সম্প্রতি সময়ের ভাঙনে আমাদের বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে অন্যের আশ্রয়ে রাস্তার পাশে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই এখন বাড়ি ঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

 

দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার মিয়াজী বলেন, ভাঙন আতঙ্কে সব সময় থাকতে হয়। নদীর নিকটবর্তী বিদ্যালয় হওয়ার কারণে নতুন ভবনের বরাদ্দও পাই না। বিদ্যালয়সহ হাজার হাজার পরিবার এখন ভাঙন হুমকিতে।

 

এদিকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং অস্থায়ী প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করছেন।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নিক আল হাসান বলেন, সম্প্রতি ভাঙনের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অস্থায়ীভাবে ৮০ মিটার নদী পাড়ে ৮০ কেজির সাড়ে ১১ হাজার এবং ১৭৫ কেজি ওজনের ৫ হাজার বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা হবে। এতে ২৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে। জরুরি ভিত্তিতে খুব দ্রুত সময় এ কাজ করা হবে।

ট্যাগ :

বীরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার দুই হাজার পরিবার

প্রকাশিত : ১২:০১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

অধিক স্রোতের কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার বহু বছর ধরে ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার। সম্প্রতি সময়ে এই ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদীতে পানি বাড়লেই ভাঙন শুরু হয় এবং ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী।সরেজমিন দামোদরদীতে দেখা যায়, গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের হুমকিতে। নদীর খুবই কাছে অবস্থান বিদ্যালয়টির। পাশেই ছিল মুক্তিযোদ্ধা আরিফ উল্যাহ’র বাড়ি। সেটিও কয়েকমাস আগে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনের শিকার হয়েছে বহু মানুষের বসতঘর এবং ফসলি জমি।

 

ভাঙন প্রতিরোধে একমাস আগে চাঁদপুর পানি উন্নয়নবোর্ড অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদ্যালয় এলাকায় ৫০টি বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ফেলে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে পুরোদমে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

 

ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভাঙনের শিকার তৈয়ব আলী হাওলাদার বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ৩ বার ভাঙনের শিকার হয়েছি। বর্তমান নদীর উত্তর পাশে আমাদের বাড়ি ছিলো। এখন কমপক্ষে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে নদী চলে এসেছে। তারপরেও নদীর ভাঙন থামছে না। আমরা সরকারের কাছে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি করছি।

 

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সমির গোলদার বলেন, আমাদের দমোদরদী গ্রাম থেকে শুরু করে মতলব আড়ংবাজার খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারের অধিক পরিবার বসবাস করে। বর্তমানে ৪টি মসজিদ, ৩টি পাকা ব্রিজ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা নদী ভাঙনের হুমকিতে। ভাঙন প্রতিরোধে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছি।

 

ক্ষতিগ্রস্ত জুয়েল প্রধানিয়া ও মো. কামাল বকাউল বলেন, সম্প্রতি সময়ের ভাঙনে আমাদের বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে অন্যের আশ্রয়ে রাস্তার পাশে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই এখন বাড়ি ঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

 

দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার মিয়াজী বলেন, ভাঙন আতঙ্কে সব সময় থাকতে হয়। নদীর নিকটবর্তী বিদ্যালয় হওয়ার কারণে নতুন ভবনের বরাদ্দও পাই না। বিদ্যালয়সহ হাজার হাজার পরিবার এখন ভাঙন হুমকিতে।

 

এদিকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং অস্থায়ী প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করছেন।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নিক আল হাসান বলেন, সম্প্রতি ভাঙনের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অস্থায়ীভাবে ৮০ মিটার নদী পাড়ে ৮০ কেজির সাড়ে ১১ হাজার এবং ১৭৫ কেজি ওজনের ৫ হাজার বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা হবে। এতে ২৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে। জরুরি ভিত্তিতে খুব দ্রুত সময় এ কাজ করা হবে।