১০:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

দুই এসআই আক্রান্ত, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশে করোনা আতংক

কুষ্টিয়া মডেল থানার দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে আরো দুজনের। এ অবস্থায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের মধ্যে করোনা আতংক বিরাজ করছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বিরুল আলম থানার দুই এসআই’র করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে কুষ্টিয়া জেলায় উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ।

বিশেষ করে ঈদের পর থেকেই এই সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সোমবার (১৪ জুন) কুষ্টিয়া জেলায় ৯১ জনের করোনা সনাক্ত হয়। আর মৃত্যু হয় দু’ জনের। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে তিল ধারণের জায়গা নেই। ওয়ার্ডে যেখানে ৪১ টি বেড রয়েছে মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুর পর্যন্ত সেখানে ৭৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওয়ার্ডে বেড না থাকায় বরান্দায় রাখা হচ্ছে রোগীদের।

ভিড় বাড়ায় দখল হয়ে গেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বসার জায়গায়ও। কুষ্টিয়া শহর এলাকায় দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নানা বিধি নিষেধ আরোপ করার পরও জেলায় প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্য বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার। এ অবস্থায় করোনা রোগীর ভিড় সামাল দিতে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি নেয়াকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। আরএমও জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় রোগীদের ভিড় সামাল দিতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) একশো বেডের নতুন একটি করোনা ওয়ার্ড চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক?

এমন প্রশ্নের জবাবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা যোদ্ধা বলে পরিচিত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মুসা কবির পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় সনাক্তের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগের উপরে কোনদিন অতিক্রম করেনি। কিন্তু এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ ভাগের উপরে উঠে গেছে। গত ১৩ জুন আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ৪১ দশমিক ৫২ ভাগ। করোনার বিস্তার রোধে গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

পৌরসভাধীন এলাকায় সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হলেও জেলায় করোনা সংক্রমনের হার ক্রমশই বেড়ে চলেছে। জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার প্রবণতা তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। জেলায় করোনা সংক্রমনের হার যে ভাবে বেড়ে যাচ্ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা: এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম। জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৪ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় ৫৭৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :

পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

দুই এসআই আক্রান্ত, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশে করোনা আতংক

প্রকাশিত : ০৬:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

কুষ্টিয়া মডেল থানার দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে আরো দুজনের। এ অবস্থায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের মধ্যে করোনা আতংক বিরাজ করছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বিরুল আলম থানার দুই এসআই’র করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে কুষ্টিয়া জেলায় উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ।

বিশেষ করে ঈদের পর থেকেই এই সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সোমবার (১৪ জুন) কুষ্টিয়া জেলায় ৯১ জনের করোনা সনাক্ত হয়। আর মৃত্যু হয় দু’ জনের। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে তিল ধারণের জায়গা নেই। ওয়ার্ডে যেখানে ৪১ টি বেড রয়েছে মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুর পর্যন্ত সেখানে ৭৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওয়ার্ডে বেড না থাকায় বরান্দায় রাখা হচ্ছে রোগীদের।

ভিড় বাড়ায় দখল হয়ে গেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বসার জায়গায়ও। কুষ্টিয়া শহর এলাকায় দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নানা বিধি নিষেধ আরোপ করার পরও জেলায় প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্য বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার। এ অবস্থায় করোনা রোগীর ভিড় সামাল দিতে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি নেয়াকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। আরএমও জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় রোগীদের ভিড় সামাল দিতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) একশো বেডের নতুন একটি করোনা ওয়ার্ড চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক?

এমন প্রশ্নের জবাবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা যোদ্ধা বলে পরিচিত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মুসা কবির পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় সনাক্তের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগের উপরে কোনদিন অতিক্রম করেনি। কিন্তু এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ ভাগের উপরে উঠে গেছে। গত ১৩ জুন আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ৪১ দশমিক ৫২ ভাগ। করোনার বিস্তার রোধে গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

পৌরসভাধীন এলাকায় সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হলেও জেলায় করোনা সংক্রমনের হার ক্রমশই বেড়ে চলেছে। জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার প্রবণতা তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। জেলায় করোনা সংক্রমনের হার যে ভাবে বেড়ে যাচ্ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা: এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম। জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৪ জুন পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় ৫৭৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ