১১:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

স্থায়ী বাঁধ চায় নোয়াখালীবাসী

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি এ সংস্কারে কোনো উপকার হয় না দ্বীপ এলাকার।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, হাতিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশে বেড়িবাঁধসহ নদীর তীর রক্ষায় দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রকল্প একনেকে জমা থাকলেও রেভিনিউ খাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে এ সংস্কার কাজ শুরু হয়।তিনি বলেন, ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত তমরদ্দি ইউনিয়ন থেকে সোনাদিয়ার মাইজছরা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ তিন কোটি ৪০ লাখ টাকায় এবং হাতিয়ার সূবর্ণচর অংশে বয়ারচরে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এক কোটি পাঁচ লাখ টাকায় সংস্কার কাজ চলছে।

এছাড়াও উপকূলীয় কোম্পানীগঞ্জ, সূবর্ণচর ও হাতিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রতিনিয়ত পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে লোনা পানিতে রবিশস্য, ধান, পানের বরজ, মাছের ঘের ভেসে যাচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।

কোম্পানীগঞ্জের চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. জয়নাল আবেদীন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ১০ একর ফসলি জমি ও দুটি বাড়ি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ইউপি সদস্য থাকতে বহু জায়গায়, অনেক অফিসে ধর্না দিয়েছি বাঁধের জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেদের মতো প্রকল্প তৈরি করে। কিন্তু টেকসই প্রকল্প বা সঠিক উন্নয়ন নিশ্চিত হয় না বিধায় নদী ভাঙনের সমস্যা দূর হচ্ছে না।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, উপজেলার চরএলাহীতে আগের বাঁধ বিলীন হওয়ার পর চরলেংটায় ১৬ কিলোমিটার মাটির তৈরি কাঁচা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেটির উত্তর চরলেংটা (১ নম্বর ওয়ার্ড) ও পূর্ব চরএলাহীর (৪ নম্বর ওয়ার্ড) এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সঠিক পরিকল্পনা করে এখনি টেকসই বাঁধ না দিলে অচিরেই তার ইউনিয়ন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি এ জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

হাতিয়ার তমরদ্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আলমগীর হোসেন জানান, বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সক্রিয় হয়। কিন্তু সরকারের শত শত কোটি টাকা তদারকির অভাবে নষ্ট ও লুটপাট হলেও সেদিকে কোনো নজর থাকে না।

হাতিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন জানান, হাতিয়ায় বর্তমানে সংস্কার করা বাঁধ মূলত তেমন কোনো কাজে আসবে না। দ্বীপ এলাকা হওয়ায় এসব বাঁধ তীব্র ঢেউ সহ্য করতে পারে না। ফলে জোয়ার আটকানো সম্ভব হয় না।

তিনি আরও বলেন, হাতিয়া দ্বীপকে বাঁচাতে হলে উল্লেখযোগ্য অংশে নদীর তীর রক্ষায় ব্লক বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য তিনি একনেকে জমা হওয়া দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদনের অনুরোধ জানান।

ট্যাগ :

ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

স্থায়ী বাঁধ চায় নোয়াখালীবাসী

প্রকাশিত : ১২:০১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি এ সংস্কারে কোনো উপকার হয় না দ্বীপ এলাকার।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, হাতিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশে বেড়িবাঁধসহ নদীর তীর রক্ষায় দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রকল্প একনেকে জমা থাকলেও রেভিনিউ খাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে এ সংস্কার কাজ শুরু হয়।তিনি বলেন, ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত তমরদ্দি ইউনিয়ন থেকে সোনাদিয়ার মাইজছরা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ তিন কোটি ৪০ লাখ টাকায় এবং হাতিয়ার সূবর্ণচর অংশে বয়ারচরে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এক কোটি পাঁচ লাখ টাকায় সংস্কার কাজ চলছে।

এছাড়াও উপকূলীয় কোম্পানীগঞ্জ, সূবর্ণচর ও হাতিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রতিনিয়ত পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে লোনা পানিতে রবিশস্য, ধান, পানের বরজ, মাছের ঘের ভেসে যাচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।

কোম্পানীগঞ্জের চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. জয়নাল আবেদীন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ১০ একর ফসলি জমি ও দুটি বাড়ি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ইউপি সদস্য থাকতে বহু জায়গায়, অনেক অফিসে ধর্না দিয়েছি বাঁধের জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেদের মতো প্রকল্প তৈরি করে। কিন্তু টেকসই প্রকল্প বা সঠিক উন্নয়ন নিশ্চিত হয় না বিধায় নদী ভাঙনের সমস্যা দূর হচ্ছে না।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, উপজেলার চরএলাহীতে আগের বাঁধ বিলীন হওয়ার পর চরলেংটায় ১৬ কিলোমিটার মাটির তৈরি কাঁচা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেটির উত্তর চরলেংটা (১ নম্বর ওয়ার্ড) ও পূর্ব চরএলাহীর (৪ নম্বর ওয়ার্ড) এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সঠিক পরিকল্পনা করে এখনি টেকসই বাঁধ না দিলে অচিরেই তার ইউনিয়ন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি এ জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

হাতিয়ার তমরদ্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আলমগীর হোসেন জানান, বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সক্রিয় হয়। কিন্তু সরকারের শত শত কোটি টাকা তদারকির অভাবে নষ্ট ও লুটপাট হলেও সেদিকে কোনো নজর থাকে না।

হাতিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন জানান, হাতিয়ায় বর্তমানে সংস্কার করা বাঁধ মূলত তেমন কোনো কাজে আসবে না। দ্বীপ এলাকা হওয়ায় এসব বাঁধ তীব্র ঢেউ সহ্য করতে পারে না। ফলে জোয়ার আটকানো সম্ভব হয় না।

তিনি আরও বলেন, হাতিয়া দ্বীপকে বাঁচাতে হলে উল্লেখযোগ্য অংশে নদীর তীর রক্ষায় ব্লক বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য তিনি একনেকে জমা হওয়া দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদনের অনুরোধ জানান।