বছরখানেক আগেই ভেঙে গিয়েছিল রংপুরের মিঠাপুকুরের বালুয়া-বড়বালা সেতুর সংযোগ সড়কটি। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল যান চলাচল। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় পাঁচ ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় সড়কটি আবার নির্মিত হলেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সড়কটি। অপরদিকে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বালুয়া-বড়বালা সেতুটিও পড়েছে চরম হুমকিতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে যমুনেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় মূল সেতু ও সংযোগ সড়কটি ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের বালুয়া-বড়বালা সেতুর দক্ষিণে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নদীর পাড় খনন করে ট্রাক্টরের মাধ্যমে তা বহন করছেন প্রভাবশালীরা। সেতুর নিচ দিয়ে ট্রাক্টরগুলো মূল সড়কে উঠতে গেলেই ভেঙে পড়ছে সেতুর সংযোগ সড়ক। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুর দক্ষিণে নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে সেতুর সংযোগ সড়ক ও মূল সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। কয়েকবার চৌকিদার পাঠিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বলা হলেও তারা শোনেননি।’ জরুরি ভিত্তিতে অবৈধ বালুর পয়েন্ট বন্ধে প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বলেন, ‘সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক মুরাদ মাস্টারের নেতৃত্বে ওই স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তিনি বালুয়া এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছি না।’
বালু উত্তোলনকারী মুরাদ মাস্টার বলেন, ‘নদীর পাড়ে আমাদের নিজস্ব জমি থেকে বালু উত্তোলন করছি। এ জন্য সহকারী ভূমি কমিশনারের কাছে অনুমতিও নেওয়া আছে।’ তবে বালু উত্তোলনের ফলে সংযোগ সড়ক ও মূল সেতুর ক্ষতির বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরে আলম সিদ্দিকি বলেন, ‘বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি প্রদান করা হয়নি। যদি অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করে তবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’