০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

সোমশ্বেরী নদীর ভাঙন অব্যাহত, আতঙ্কে ৮ গ্রামের মানুষ

অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে নানা স্থাপনা।নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী, বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামের বেশ কিছু অংশ ভেঙে গেছে।

ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুই ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

সোমেশ্বরীর ভাঙনে গত দুই বছরে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার শত শত ঘরবাড়ি। শনিবার এমনটাই জানালেন কামারখালী এলাকার শত শত মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থায়ী কোন বেড়িবাঁধ না থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ওই এলকার ৮ গ্রামের মানুষ।

থামছে না নদীভাঙন, বাড়ছে সাধারণ মানুষের কান্না। সোমেশ্বরীর করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসকৃত আদিবাসীসহ হাজারো মানুষ।

নতুন করে নদীর পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দির ও বিদ্যালয়সহ ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী।

২০১৯-২০অর্থবছরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদােরের চেষ্টায় ভাঙন রোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যায়ে ৯০০ মিটার ভাঙন এলাকায় ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। ধীরগতিতে ওই কাজ শুরু করায় এখনো তা শেষ হয়নি ,ফলে এর মধ্যে মাত্র ২০০ মিটার কাজ সম্পন্ন হলেও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বাবি কাজ।

ভাঙগ এলাকাগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ভরে রাখা শত শত ব্যগ পড়ে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাক্সফোর্সের তদারকি না থাকায় তা নষ্ট হচ্ছে বলেন জানান এলাকাবাসী।

ওই কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তা কোন প্রকার আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

এনিয়ে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, আমার বলার ভাষা নাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই বিমাতাসুলভ আচরণ দেখে। আমরা এ দেশের নাগরিক কিনা তা জানতে ইচ্ছা হচ্ছে। যে কাজ ৩ মাসে শেষ হওয়ার কথা, তা ১ বছরেও শেষ হচ্ছে না। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছি আমরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, নদীতে নতুন করে পানি আসার ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবো নিয়োজিত টাক্সফোর্স ভাঙন এলাকায় ফেলানোর জন্য বস্তা গুলো গুণে না দিলে ঠিকাদার ফেলতে পারবে না, বিধায় কাজে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে।

অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে, আজকালের মধ্যেই নতুন করে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক চেষ্টায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়ায় এলাকা পরিদর্শন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।

ট্যাগ :

বিএফআইইউ প্রধানের ‘ভিডিও ফাঁস’ বিশেষজ্ঞদের দাবি এআই দারা নির্মিত ষড়যন্ত্র

সোমশ্বেরী নদীর ভাঙন অব্যাহত, আতঙ্কে ৮ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত : ১২:০১:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১

অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে নানা স্থাপনা।নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী, বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামের বেশ কিছু অংশ ভেঙে গেছে।

ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুই ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

সোমেশ্বরীর ভাঙনে গত দুই বছরে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার শত শত ঘরবাড়ি। শনিবার এমনটাই জানালেন কামারখালী এলাকার শত শত মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থায়ী কোন বেড়িবাঁধ না থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ওই এলকার ৮ গ্রামের মানুষ।

থামছে না নদীভাঙন, বাড়ছে সাধারণ মানুষের কান্না। সোমেশ্বরীর করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসকৃত আদিবাসীসহ হাজারো মানুষ।

নতুন করে নদীর পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দির ও বিদ্যালয়সহ ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী।

২০১৯-২০অর্থবছরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদােরের চেষ্টায় ভাঙন রোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যায়ে ৯০০ মিটার ভাঙন এলাকায় ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। ধীরগতিতে ওই কাজ শুরু করায় এখনো তা শেষ হয়নি ,ফলে এর মধ্যে মাত্র ২০০ মিটার কাজ সম্পন্ন হলেও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বাবি কাজ।

ভাঙগ এলাকাগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ভরে রাখা শত শত ব্যগ পড়ে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাক্সফোর্সের তদারকি না থাকায় তা নষ্ট হচ্ছে বলেন জানান এলাকাবাসী।

ওই কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তা কোন প্রকার আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

এনিয়ে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, আমার বলার ভাষা নাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই বিমাতাসুলভ আচরণ দেখে। আমরা এ দেশের নাগরিক কিনা তা জানতে ইচ্ছা হচ্ছে। যে কাজ ৩ মাসে শেষ হওয়ার কথা, তা ১ বছরেও শেষ হচ্ছে না। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছি আমরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, নদীতে নতুন করে পানি আসার ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবো নিয়োজিত টাক্সফোর্স ভাঙন এলাকায় ফেলানোর জন্য বস্তা গুলো গুণে না দিলে ঠিকাদার ফেলতে পারবে না, বিধায় কাজে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে।

অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে, আজকালের মধ্যেই নতুন করে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক চেষ্টায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়ায় এলাকা পরিদর্শন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।