টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাটে বাঁধ ভেঙে অন্তত ২৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হালুয়াঘাট পৌর শহরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে ৩০টি পরিবার। অন্যদিকে নেত্রকোনার কলমাকান্দার গোলাম খালি নদীর পানি বেড়ে রানীগাঁও বাজারসংলগ্ন প্রায় ৪০-৫০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। এতে পাঁচটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি এসব এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতদের জন্য সীমিত পর্যায়ে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।ফলে বানভাসিদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাটে বাঁধ ভেঙে অন্তত ২৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ধোবাউড়ায় নেতাই নদের বাঁধ ভেঙে বন্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে হালুয়াঘাট পৌরশহরসহ কয়েকটি স্থানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। পানিতে ডুবে আছে হালুয়াঘাটের হাসপাতালসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পৌর শহরের ৩০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উঁচু ভবনে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের মধ্যে ত্রাণ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃষ্টি কম হওয়ায় ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের বলপুর, কালিকাবাড়ী, কাশিপুর, সোহাগিপাড়া, ঘোশাইপুর ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের রায়পুর, ভালুকাপাড়া এবং ধোবাউড়া-হালুয়াঘাট সড়কের মান্দালিয়াসহ কয়েকটি অঞ্চলে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও অন্তত ১৮টি গ্রাম নতুন করে পানিতে ডুবে গেছে।
অন্যদিকে হালুয়াঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, কৈচাপুর, নড়াইল, গোপীনগর, বিলডোড়া, ধুরাইল, আমতৈল, গাজিরভিটার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, ঘোড়াঘাট নদীর বাঁধ ভেঙে সদর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইছামতী নদীর বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা রয়েছে।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুজ্জামান বণিক বার্তাকে জানান, পানিবন্দি গ্রামবাসীর মাঝে খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণ করছি। দু-একদিনের মধ্যে পানি না কমলে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পানির ঢলে কয়েকটি সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নেত্রকোনা: অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি। জেলার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের রানীগাঁও গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। গত তিনদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার মগড়া, কংস, ধনু ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নি¤œাঞ্চল। এদিকে কলমাকান্দার গোলাম খালি নদীর পানি বেড়ে রানীগাঁও বাজারসংলগ্ন প্রায় ৪০-৫০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। এতে পাঁচটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, অতিবৃষ্টিতে জেলার দুই উপজেলা দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় পানি বেড়ে নি¤œাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে। সেখানে আমাদের নজরদারি রয়েছে।
কুড়িগ্রাম: টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদ-নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলো। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার সবজি ক্ষেত। এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর দুই পাড়জুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, জেলার নদ-নদীর পানি এখনো বিপত্সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
(১২)………………
‘স্মার্টফোন কিনে না দেওয়ায়’ এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি ।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ‘স্মার্টফোন কিনে না দেওয়ায়’ মার্জিয়া (১৫) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। শনিবার সকালে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।ওই এলাকার কালামের মেয়ে মার্জিয়া। সে সেতারা স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আ. রশিদ চৌকিদার জানান, ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী মা-বাবার কাছে কয়েকদিন আগে একটি স্মার্ট মোবাইল সেট চেয়েছিল। মোবাইল সেট না দেওয়ায় অভিমানে তার কক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
ইন্দুরকানী থানার এসআই মো. ফরিদ আহম্মেদ জানান, একটি মোবাইল ফোনের জন্য ওই স্কুলছাত্রী ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের দাবি। তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপমৃত্যু মামলা করে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।