বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ তাঁতী লীগ। ২০১৭ সাল থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন এই রাজনীতিবিদ। শওকত আলীর নেতৃত্বে একদিকে যেমন সংগঠনটির কর্মী সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে জাতীয় রাজনীতিতেও বৃহৎ পরিসরে ভূমিকা রাখতে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে তাঁতী লীগ।
শওকত আলীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু ১৯৬৮ সালে। ওই বছর তিনি ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে জিএস পদে নির্বাচন করেন। তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নেভাল সিরাজ কমান্ডারের অধীনে আলগী তারিনী ভূইয়ার বাড়িতে ও আলগী মনোহরপুর ঝিনুকদের বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে মাধবদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ওই বছর আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়ার নেতৃত্বে মাধবদী মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন শওকত আলী। ১৯৮০ সালে তিনি মাধবদী মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের প্রথম সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৩৬ বছর এই সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮২ সালের ৮ ডিসেম্বর নরসিংদী থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হন এবং তাকে ১৪ দিন রিমান্ডে রেখে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় গঠিত বিচারিক তদন্ত কমিটি কোন অভিযোগ না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন মামলা রুজু হয়নি।
১৯৮৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাধবদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং পরপর তিনবার নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৭ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক পৌর প্রশাসক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং ২০০১ সাল পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে নরসিংদী ইউসিসিএ’র (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে ৩ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতির সভাপতির পদে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ৩ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯৩ সালে নরসিংদী সদর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মাধবদী হাই স্কুল মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই জনসভা আয়োজন এবং এর যাবতীয় ব্যয় শওকত আলী নিজেই ব্যবস্থা করেছিলেন। সফলভাবে জনসভা আয়োজনের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শওতক আলীর পিঠ চাপড়ে দিয়ে উৎসাহিত করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে মঙ্গার সময় শেখ হাসিনার উত্তর বঙ্গ সফলে সঙ্গী ছিলেন শওকত আলী। ওই সফরে তিনি শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। দলের প্রতি ত্যাগ ও আনুগত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত জোট সরকারের আমলে তৃণমুল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করেন। ২০০৩ সালে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান শওকত আলী। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তাঁতীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পুনঃরায় ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলীর হাতে তুলে দেন। শওকত আলীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ তাঁতী লীগ।
শওকত আলী সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দুর্নীতিমুক্তভাবে সংগঠনের কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ তাঁতীলীগ এর সকল নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সারাদেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তিনি।