আমদানি খরচ বাড়াতে থাকায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার মান কমেছে। বুধবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ২০ পয়সা বেড়েছে। বুধবার আন্তব্যাংক মুদ্রা বাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা। যা আগের দিন মঙ্গলবার ছিল ৮৬ টাকা। এছাড়া গত ৬ জানুয়ারি ডলারের দাম ছিল ৮৫ দশমিক ৮০ টাকা। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানির জোয়ারে আর রেমিট্যান্সের নিম্নগতির কারণে এই সংকট। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও অনেকটা কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, ডলারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত ডলার আছে।
চাহিদা পূরণে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। তারা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উচ্চমূল্যের কারণে সম্প্রতি মার্কিন ডলারের চাহিদা বেড়েছে। তবে বাজার স্বাভাবিক রাখতে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারকে স্বাভাবিক রাখতে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২ অর্থবছরে) তাদের আমদানি বিল পরিশোধের জন্য সরাসরি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির কাছে রিজার্ভ থেকে ৩.৭৩ বিলিয়নেরও বেশি ডলার বিক্রি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি চিত্র থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের সামগ্রিক আমদানি চলতি বছরের জুলাই-জানুয়ারিতে ৪৫.৪৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ছিল ২৯.৮২ বিলিয়ন ডলার ছিল। সে হিসেবে চলতি বছরের এই সময়ে আমদানি পরিমাণ বেড়েছে ৫২.৫০ শতাংশ। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বৈশ্বিক বাজারে পেট্রোলিয়াম পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অধিক মূল্য পরিশোধ করায় এ আমদানি বিল বেশি করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ কম এটি। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স ১৩.৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫২ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে এটি ছিল ১৬.৬৯ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে চলতি হিসাব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০.০৬ বিলিয়ন ডলারে। যা এক মাস আগে ছিল ৮.১৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে ১.৫৬ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।