০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রতিষ্ঠার এগারো বছরেও সমাবর্তন পায়নি ববি শিক্ষার্থীরা

২০০৯ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাসের মধ্যে দিয়ে, ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি দেশের ৩৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠার এগারো বছর পার হলেও এখনো শিক্ষার্থীদের কোনো সমাবর্তন দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) দীর্ঘ এগারো বছরে ৬টি ব্যাচে, পাঁচ হাজার আটশত পঁচাশি জন (একাডেমিক শাখার তথ্য অনুযায়ী) শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করেছে। পাশাপাশি স্নাতকোত্তর শেষ করছে ৫টি ব্যাচ ৷ তবুও শিক্ষার্থীরা পায়নি তাদের কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আহমেদ মিলান বলেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের কাছে যেমন আনন্দের , তেমনি গৌরবেরও। একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের পূর্ণতা পায় সমাবর্তনের মাধ্যমে। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে দেখতে প্রায় ১ যুগের পথে। এখন অবধি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হয় নি, যেটা দুঃখজনক ৷

সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমাবর্তনের আবেদন জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো এক অজানা কারণে সাড়া দেয়নি। তাই বর্তমান উপাচার্য এবং ট্রেজারার আসার পর সমাবর্তনের আয়োজন করা নিয়ে জোরালো দাবি তুলেছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।

মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অধ্যায়নরত শোয়েব আহমেদ জানান, এটা আসলেই হতাশাজনক যে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর পার করলো ৬টি ব্যাচ পাসআউট হলো কিন্তু একবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেনি।

অতি দুঃখের বিষয় হলো গত মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাও জানতো না যে তাদের মূল সার্টিফিকেট এর লেআউট বা ডিজাইন কেমন হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রশাসনের এসব উদাসীনতায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই নানা জটিলতা পড়ছে।

তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মূল সনদ দেয়ায় অপারগতা প্রকাশ করায়, আমার একজন সহপাঠী পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেয়েও সেখানে মূল সনদ না থাকায় যেতে পারেনি ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, সমাবর্তনের বিষয়টি আমাদের ভিসি স্যার অনেকবার বিষয়টি চ্যান্সেলর মহোদয়কে জানিয়েছেন, সিডিউলের জন্য আটকে আছে৷ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে সমাবর্তন আয়োজন করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সমাবর্তন ব্যতীত একটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিপূর্ণতা লাভ করে না৷ সমাবর্তন অপিরিহার্য এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি পূর্ণতা লাভ করে এই সমাবর্তনের মাধ্যমে৷ আমি আশা করি অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ৷

বিষয়টি নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ১৯ জুলাই রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তখন তিনি বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসবেন। এখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সময় নিতে পারলে আমরা সমাবর্তন আয়োজন করতে পারব।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট একদিনে ৩টি অভিযান

প্রতিষ্ঠার এগারো বছরেও সমাবর্তন পায়নি ববি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত : ০২:৫১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২

২০০৯ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাসের মধ্যে দিয়ে, ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি দেশের ৩৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠার এগারো বছর পার হলেও এখনো শিক্ষার্থীদের কোনো সমাবর্তন দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) দীর্ঘ এগারো বছরে ৬টি ব্যাচে, পাঁচ হাজার আটশত পঁচাশি জন (একাডেমিক শাখার তথ্য অনুযায়ী) শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করেছে। পাশাপাশি স্নাতকোত্তর শেষ করছে ৫টি ব্যাচ ৷ তবুও শিক্ষার্থীরা পায়নি তাদের কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আহমেদ মিলান বলেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের কাছে যেমন আনন্দের , তেমনি গৌরবেরও। একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের পূর্ণতা পায় সমাবর্তনের মাধ্যমে। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে দেখতে প্রায় ১ যুগের পথে। এখন অবধি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হয় নি, যেটা দুঃখজনক ৷

সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমাবর্তনের আবেদন জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো এক অজানা কারণে সাড়া দেয়নি। তাই বর্তমান উপাচার্য এবং ট্রেজারার আসার পর সমাবর্তনের আয়োজন করা নিয়ে জোরালো দাবি তুলেছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।

মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অধ্যায়নরত শোয়েব আহমেদ জানান, এটা আসলেই হতাশাজনক যে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর পার করলো ৬টি ব্যাচ পাসআউট হলো কিন্তু একবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেনি।

অতি দুঃখের বিষয় হলো গত মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাও জানতো না যে তাদের মূল সার্টিফিকেট এর লেআউট বা ডিজাইন কেমন হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রশাসনের এসব উদাসীনতায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই নানা জটিলতা পড়ছে।

তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মূল সনদ দেয়ায় অপারগতা প্রকাশ করায়, আমার একজন সহপাঠী পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেয়েও সেখানে মূল সনদ না থাকায় যেতে পারেনি ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, সমাবর্তনের বিষয়টি আমাদের ভিসি স্যার অনেকবার বিষয়টি চ্যান্সেলর মহোদয়কে জানিয়েছেন, সিডিউলের জন্য আটকে আছে৷ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে সমাবর্তন আয়োজন করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সমাবর্তন ব্যতীত একটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিপূর্ণতা লাভ করে না৷ সমাবর্তন অপিরিহার্য এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি পূর্ণতা লাভ করে এই সমাবর্তনের মাধ্যমে৷ আমি আশা করি অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ৷

বিষয়টি নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ১৯ জুলাই রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তখন তিনি বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসবেন। এখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সময় নিতে পারলে আমরা সমাবর্তন আয়োজন করতে পারব।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব