০২:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

‘জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা কঠিন হয়ে যাচ্ছে’

সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষায় থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
এই নির্বাচন কমিশনার জানান, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের মঙ্গলবারের সভায় সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে বসছে।

মো. আলমগীর বলেন, ‘৭ ফেব্রুয়ারি আমাদের সভা। একেবারেই প্রথম সভা, এজেন্ডা একটাই। আমরা কাজ শুরু করবো। আলোচনা শেষে আইন অনুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণে আমাদের কার্যপদ্ধতি ও নীতিমালা নির্ধারণ করা হবে।’

জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, প্রতি জনশুমারির পর সংসদ নির্বাচনের জন্য সীমানা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বছরের ডিসেম্বরের শেষভাবে বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। এর ছয় মাস আগেই তিনশ’ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

গত বছরের ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়। পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জনশুমারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও এখনো সেটা হয়নি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জনসংখ্যার চূড়ান্ত রিপোর্ট আমরা এখনও পাইনি। আমাদের অপেক্ষা করা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাজ শুরু করতে হবে।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব ‘বাস্তব বণ্টনের’ ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

তিনি জানান, শুধুমাত্র একটাই ফ্যাক্টর আছে, সেটা হলো জনসংখ্যার কারণে। এখন জনসংখ্যার জন্য মাইগ্রেশনের (স্থান পরিবর্তন) যে পরিবর্তনটা আসে, সেক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনসংখ্যাকে তো আর সমবণ্টন করা যায় না। প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক রাখলে জনসংখ্যা মেলানো কঠিন হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা হচ্ছে তিন নম্বর গুরুত্ব। প্রথম গুরুত্ব হচ্ছে প্রশাসনিক। যদি কোনও প্রশাসনিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তাহলে তো আমাদের পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। যদি কোনও ভৌগোলিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তাহলেও করার প্রয়োজন নেই।’

মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় সভায় আলোচনার মধ্যে নীতিনির্ধারণ পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক কাজগুলো কাগজপত্র জোগাড়, তথ্য জোগাড় এসব করে ফেলেছি। ৭ ফেব্রুয়ারি সভা করে এখন নীতিমালা করে এগোবো।’

সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করার আশা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

আইনের ভিত্তিতে আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য ৩০০ নির্বাচনি এলাকার খসড়া তালিকা করতে হবে। সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় ইসি অনুমোদন দিলে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ এবং এর ওপর দাবি-আপত্তি-সুপারিশ চাওয়া হবে। শুনানির মাধ্যমে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ৩০০ নির্বাচনি এলাকার নতুন সীমানা চূড়ান্ত হবে এবং তারপর গ্রেজেট প্রকাশ করবে ইসি।

সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh

ট্যাগ :

‘জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা কঠিন হয়ে যাচ্ছে’

প্রকাশিত : ০৮:০৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষায় থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
এই নির্বাচন কমিশনার জানান, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের মঙ্গলবারের সভায় সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে বসছে।

মো. আলমগীর বলেন, ‘৭ ফেব্রুয়ারি আমাদের সভা। একেবারেই প্রথম সভা, এজেন্ডা একটাই। আমরা কাজ শুরু করবো। আলোচনা শেষে আইন অনুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণে আমাদের কার্যপদ্ধতি ও নীতিমালা নির্ধারণ করা হবে।’

জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, প্রতি জনশুমারির পর সংসদ নির্বাচনের জন্য সীমানা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বছরের ডিসেম্বরের শেষভাবে বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। এর ছয় মাস আগেই তিনশ’ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

গত বছরের ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়। পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জনশুমারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও এখনো সেটা হয়নি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জনসংখ্যার চূড়ান্ত রিপোর্ট আমরা এখনও পাইনি। আমাদের অপেক্ষা করা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাজ শুরু করতে হবে।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব ‘বাস্তব বণ্টনের’ ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

তিনি জানান, শুধুমাত্র একটাই ফ্যাক্টর আছে, সেটা হলো জনসংখ্যার কারণে। এখন জনসংখ্যার জন্য মাইগ্রেশনের (স্থান পরিবর্তন) যে পরিবর্তনটা আসে, সেক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনসংখ্যাকে তো আর সমবণ্টন করা যায় না। প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক রাখলে জনসংখ্যা মেলানো কঠিন হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা হচ্ছে তিন নম্বর গুরুত্ব। প্রথম গুরুত্ব হচ্ছে প্রশাসনিক। যদি কোনও প্রশাসনিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তাহলে তো আমাদের পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। যদি কোনও ভৌগোলিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তাহলেও করার প্রয়োজন নেই।’

মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় সভায় আলোচনার মধ্যে নীতিনির্ধারণ পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক কাজগুলো কাগজপত্র জোগাড়, তথ্য জোগাড় এসব করে ফেলেছি। ৭ ফেব্রুয়ারি সভা করে এখন নীতিমালা করে এগোবো।’

সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করার আশা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

আইনের ভিত্তিতে আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য ৩০০ নির্বাচনি এলাকার খসড়া তালিকা করতে হবে। সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় ইসি অনুমোদন দিলে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ এবং এর ওপর দাবি-আপত্তি-সুপারিশ চাওয়া হবে। শুনানির মাধ্যমে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ৩০০ নির্বাচনি এলাকার নতুন সীমানা চূড়ান্ত হবে এবং তারপর গ্রেজেট প্রকাশ করবে ইসি।

সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh